রঘুবরের সঙ্গে বাবুল। —নিজস্ব চিত্র।
তিনি আসানসোলের সাংসদ। সেখানে একটি হাসপাতাল তৈরি করতে চান কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সে কাজে অনেকটা এগিয়েওছেন। মিলেছে জমি। তবে তা পশ্চিমবঙ্গে নয়। আর সে কারণেই বাবুলের প্রস্তাবিত এই হাসপাতালটি হতে চলেছে আসানসোল লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের নিরসায়। বাবুল জমি পেয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের সৌজন্যে।
কিন্তু আসানসোলের মানুষের জন্য হাসপাতাল কেন ঝাড়খণ্ডের মাটিতে? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে কি জমি চেয়ে মেলেনি? সরাসরি জবাব না দিয়ে বাবুল বলেন, “এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমি আগে কয়েক বার কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে পশ্চিবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা ভাল নয়। তাই এ বার মাথা খাটিয়ে অন্য উপায় বের করলাম। এতে ঝামেলাও এড়ানো গেল, আবার প্রচুর মানুষের উপকারও হবে।” আজ রাঁচিতে রঘুবরের সঙ্গে আলোচনার পর বাবুল বলেন, “হাসপাতাল তৈরির জন্য আগে দরকার জমি। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস এক কথায় বিনামূল্যে জমি দিতে রাজি হয়েছেন।’’ তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমাবর্তী এলাকায় এই হাসপাতাল হওয়ায় এক দিকে যেমন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ উপকৃত হবেন, তেমনই উপকৃত হবেন ঝাড়খণ্ডের মানুষ। রঘুবর বলেন, “সাধারণ মানুষের যে কোনও ধরনের পরিষেবার জন্য আমার সরকার এক কথায় জমি দিতে রাজি। বাবুলের এই প্রস্তাবে আমি রাজি হয়েছি। খুবই ভাল প্রস্তাব। হাসপাতাল তৈরির জন্য যতটা জমি লাগে আমি বিনামূল্যে দেব।” ঝামেলা বলতে কী বোঝাচ্ছেন বাবুল? বিস্তারিত কিছু না বললেও বাবুল একটি পুরনো অভিজ্ঞতার কথা জানান। তাঁর বক্তব্য, আগে তিনি আসানসোলে সরকারি হাসপাতালে ক’টা অ্যাম্বুল্যান্স দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা দিতে পারেননি। তাঁকে জানানো হয়, অ্যাম্বুল্যান্স চালানোর পরিকাঠামো হাসপাতালে নেই। এতগুলো অ্যাম্বুল্যান্স চালাতে যে লোক লাগবে, যে জ্বালানি লাগবে, সেই খরচ বহন করতে পারবেন না। বাবুল বলেন, “সে বার অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার প্রকল্প মাঠে মারা গিয়েছিল। তাই হাসপাতালের জন্য জমির প্রসঙ্গ তোলা অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়েছে। শরণাপন্ন হলাম পড়শি রাজ্যের।”
আজ দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের অফিসে তাঁর সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক করেন তিনি। পরে বাবুল জানান, বেসরকারি সংস্থা হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি চাইলেই পায়। কিন্তু সেই হাসপাতালগুলো বেশির ভাগই সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এই হাসপাতাল হবে সাধারণের জন্য। ১০ দিনের মধ্যে প্রোজেক্ট রিপোর্ট হাতে পাবেন বলে জানান তিনি। বাবুল বলেন, “যেখানে হাসপাতাল হবে বলে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে, সেই জায়গাটা আসানসোল থেকে মাত্র আধ ঘণ্টা দূরে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল। ফলে আসানসোলের মানুষের কোনও অসুবিধা হবে না।”
হাসপাতালের জন্য রঘুবরের বিজেপি সরকারের শরণাপন্ন হলেও বাবুল অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় ইনিংস নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, “প্রথম ইনিংসে উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। আশা করছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় ইনিংসে এই সব বাধা থাকবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy