তাঁদের কেউ ‘পিতৃভূমি’ দেখেননি। সে দেশ কেমন, কোথায় জুটবে ঠাঁই, কিছুই জানেন না। তবু এত দিনের ঘরবাড়ি, দেশ ছেড়ে ইজরায়েল পাড়ি দিলেন অলিভ পরি, এলিসেভা খাংতেরা। জনজাতিটির পোশাকি নাম ‘বেনে মেনাশে’। ধর্মে ইহুদি। মিজোরামে প্রায় ৪ হাজার ও মণিপুরে ৩ হাজার বেনে মেনাশের বাস। কিন্তু ভারতকে কখনও ‘স্বদেশ’ মনে করেননি তাঁরা।
মিজোরামে ইহুদি ধর্মের প্রসার হয় গত শতকের পঞ্চাশের দশক থেকে। ১৯৭০ সালে গিদেয়েন রে মিজোরামে ব্যাপক হারে ‘বেনে মেনাশে’ মতের প্রসার ঘটান। অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন, ইজরায়েলের আদি দশটি শাখার একটি উত্তর-পূর্ব ভারতে মিজোরামে চলে এসেছিল। বর্তমান প্রজন্ম তাদেরই বংশধর। নব্বইয়ের দশক থেকেই দফায়-দফায় মিজো-ইহুদিরা ইজরায়েল যেতে থাকেন। ১৯৯২-এ রাব্বি (ধর্মগুরু) এলিয়াহু আভিচালি আইজলে আসেন। কিন্তু ২০০৩ সালে ইজরায়েল সরকারের আপত্তিতে এই পরিযায়ন থমকে যায়। অভিযোগ ওঠে, রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে বেনে মেনাশেদের। তাঁদের রাখা হচ্ছে বিপজ্জনক এলাকা, গাজা স্ট্রিপে। কতকটা ঢাল হিসেবে। ২০০৫-এ ভারতেও ইহুদি ধর্মান্তরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইজরায়েল। কিন্তু পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ইজরায়েলের প্রধান ধর্মগুরুও বেনে মেনাশেদের দাবিকে স্বীকৃতি দিলে ফের বেনে মেনাশেদের ইজরায়েল যাত্রা শুরু হয়। সিদ্ধান্ত হয়, তাঁদের ভার নেবে ‘স্যাভেই ইজরায়েল’ নামে এক সংগঠন। ইজরায়েলে যাওয়ার পরে তাঁদের ধর্মান্তরিত করা হবে।
এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার বেনে মেনাশে ইজরায়েল গিয়েছেন। এই দফায় যাচ্ছেন শ’খানেক। অলিভরা বলেন, ‘‘এত দিনের ঠাঁই ছেড়ে চলে যেতে খারাপ তো লাগছেই। কিন্তু আমার পরিবারের বাকি অনেকেই এখন ইজরায়েলের বাসিন্দা। তাঁদের সঙ্গে ফের একত্রিত হতে পারব। ফিরতে পারব পিতৃভূমিতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy