Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মজিদকে গোলকিপিংয়েই ফেরাতে চান ভাইচুং

কাশ্মীরের মজিদ খানকে ওখানেই দেখতে চান তাঁর মা। দেখতে চান দেশের প্রাক্তন ফুটবল অধিনায়কও।

মজিদ খান

মজিদ খান

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫৫
Share: Save:

অটোম্যাটিক রাইফেল নয়, ওই হাতে একজোড়া গ্লাভস্ই মানায়। বারুদগন্ধে ভরা পাহা়ড়ি জঙ্গল নয়, তাঁকে মানায় চতুষ্কোণ ঘাসের গালিচার একপ্রান্তে, ক্রসবারের নীচে।

কাশ্মীরের মজিদ খানকে ওখানেই দেখতে চান তাঁর মা। দেখতে চান দেশের প্রাক্তন ফুটবল অধিনায়কও।

জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবায় যোগ দিয়েও মায়ের ডাকে ফিরে আসা গোলকিপার মজিদকে নিজের স্কুলে রেখে গড়ে তুলতে চান ভাইচুং ভুটিয়া। ইতিমধ্যেই তিনি জম্মু-কাশ্মীর ফুটবল সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, মজিদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে।

আইএসএলের জন্য শনিবার মুম্বইয়ে ছিলেন ভাইচুং। সেখান থেকেই বললেন, ‘‘খবরের কাগজে পড়েই মনে হয়েছিল, ছেলেটা হয়তো সে ভাবে সুযোগ-সুবিধে বা উপযুক্ত মঞ্চ পায়নি ফুটবলার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরার। কে বলতে পারে, সেই সুযোগ পেলে ও ভাল ফুটবলার হয়ে উঠবে না!’’

আরও পড়ুন: সোমবার ওয়ার্কিং কমিটি, রাহুলের অভিষেক পর্ব শুরু

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুর জেরে লস্করে যোগ দিয়েছিলেন মজিদ। মা কাঁদতে কাঁদতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেলেকে ডাক পাঠান, ফিরে আসার জন্য। ফিরে আসেন মজিদ। সেই কাহিনি পড়ে আবেগতাড়িত ভাইচুং সিদ্ধান্ত নেন, পাশে দাঁড়াবেন। দিল্লিতে তাঁর ‘ভাইচুং ভুটিয়া ফুটবল স্কুলে’ই নিয়ে আসবেন মজিদকে। প্রাক্তন অধিনায়ক বললেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীর ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্টকে ফোন করেছি, ই-মেলেও আমার ইচ্ছের কথা জানিয়েছি।’’ মজিদকে দিল্লিতে এনে তাঁর স্কুলের কোচ এবং অন্য পেশাদারদের দিয়ে ট্রেনিং করিয়ে দেখতে চান ভাইচুং। নিজে তো থাকবেনই। ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা বললেন, ‘‘কাশ্মীর থেকে ওকে আনার খরচ দেবে আমার স্কুল। দেখাই যাক না, কী হয়।’’ ভাইচুংয়ের স্কুল থেকে ইতিমধ্যেই ছ’-সাত জন ফুটবলার অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৯ স্তরে ভাল করছে। মজিদকে নিয়েও আপ্রাণ চেষ্টা করতে চান তিনি।

মজিদের সঙ্গে অবশ্য এখনও যোগাযোগ হয়নি। ভাইচুং বললেন, ‘‘ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্টকে বলেছি, ওর বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। জানিয়েছি, মজিদের সঙ্গেও আমি কথা বলতে চাই। আশা করছি, খুব শীঘ্রই সেটা সম্ভব হবে।’’

কাশ্মীর থেকে আগে বেশ কয়েক জন ভাল ফুটবলার এসেছেন। যেমন মেহরাজউদ্দিন বা ইশফাক আমেদ। তাঁদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন ভাইচুং। তবে তাঁরা সবাই আইএসএলে ব্যস্ত বলে এ দিনই কথা হয়ে ওঠেনি। ভাইচুংয়ের বিশ্বাস, ‘‘আমি যতটুকু জেনেছি, মনে হয়েছে ও ভাল ফুটবলার। একটু পাশে দাঁড়ালে আরও অনেক ভাল হয়ে উঠতে পারে।’’

পাহাড়ের অনামী গ্রাম থেকে যাঁর উঠে আসাটা ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা কাহিনি হয়ে আছে, তাঁর হাতেই কি লেখা হবে নতুন রূপকথা? দেখা যাক! গোলপোস্টের আশপাশটা তো খুব ভাল চিনতেন ভাইচুং!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE