তিন বছরে তিরিশ বার বলেছেন মনের কথা। আর সেই কথা জড়ো করেই তা প্রচার করা হবে ‘মোদী-উৎসবে’।
নবরাত্রির উপোস সবে শেষ করে দশমীর দিন থেকে রেডিওতে এক অভিনব প্রচার পর্ব শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সালটি ২০১৪— যে বছরে ক্ষমতায় এসেছেন তিনি। তার পর থেকে প্রতি মাসে এক বার নিয়ম করে ‘মন কি বাত’ শুনিয়ে আসছেন মোদী। সাধারণ মানুষের কাছে যেমন নিজের মনের কথা খোলাখুলি বলেন, তেমনই তাঁদের কথা শুনে সেটিও প্রচার করেন বক্তব্যের ফাঁকে। সরকারের তিন বছরের মুখে এ বারে সেই ‘মন কি বাত’-এর সঙ্কলনকেই অন্যতম প্রচারের হাতিয়ার করছে বিজেপি। এ যাবৎ হওয়া ‘মন কি বাত’ নিয়ে প্রকাশ হয়েছে পুস্তিকাও।
ক’দিন আগে বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার, তার পরে সস্ত্রীক সচিন তেন্ডুলকর যখন মোদীর সঙ্গে দেখা করেন, বিরোধীরা বলতে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী শুধু ‘খাস’ লোকেদের কথাই শোনেন। সেই অভিযোগ খণ্ডন করতেও এ বারে ‘মন কি বাত’কে হাতিয়ার করছে বিজেপি। দলের প্রধান মুখপাত্র অনিল বালুনি বলেন, ‘‘গত তিন বছরে প্রধানমন্ত্রী সকলের সঙ্গে কথা বলেছেন। সে সীমান্তের সেনা হোক বা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী। এর পাশাপাশি ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে জল সংরক্ষণ, স্বচ্ছ ভারত অভিযান, বিদ্যুতের সাশ্রয়, প্রতিবন্ধীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী বদলানো, লিঙ্গ-বৈষম্য দূর করা, পরীক্ষা নিয়ে ছাত্রদের ভয় কাটানো, গরমের ছুটিতে ছাত্রদের ব্যক্তিত্ব গঠনের পথ বাতলানোর মতো কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু বলেনইনি, অন্যদের কথা শুনেওছেন। সে সব রূপায়ণও করেছেন।’’
বিজেপির মতে, ‘মন কি বাত’ এমন একটি মঞ্চ, যার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় প্রধানমন্ত্রী অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারেন। এ যাবৎ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই প্রায় এক লক্ষের বেশি নতুন ভাবনা এসেছে। প্রায় দু’লক্ষের বেশি অডিও পাঠিয়েছেন সাধারণ মানুষ, যেখানে তাঁদের ভাবনা, সমস্যা, সুপারিশ সরাসরি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রায় ৬৬ শতাংশ মানুষ রেডিওতে ‘মন কি বাত’ শোনেন। এখন আঞ্চলিক ভাষাতেও তা সম্প্রচার হচ্ছে।
দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারির কথায়, ‘‘এই ‘মন কি বাত’-এ প্রধানমন্ত্রীর দর্শন ফুটে ওঠে। যখন আমি রাজনীতিতে আসিনি, মাসে ২৫-৩০ লক্ষ টাকা রোজগার হতো। একমাত্র মোদীর টানেই সব ছেড়ে এখন রাজনীতিতে এসেছি। আর মাত্র সাড়ে তিন বছরের রাজনৈতিক জীবনেই দিল্লিতে বিজেপির সভাপতি হয়েছি, এটি একমাত্র বিজেপিতেই সম্ভব।’’ ‘মন কি বাত’ নিয়ে বিজেপির এই মাতামাতি দেখে কংগ্রেসের নেতা মণীশ তিওয়ারির অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘অনেক তো হল ‘মন কি বাত’, এ বারে কিছু ‘কাম কি বাত’ও হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy