নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে ২৮২ আসন পাওয়া নরেন্দ্র মোদীর দল এখন সংসদের নিম্নকক্ষে খাদের ধারে দাঁড়িয়ে। আরও তিন উপ-নির্বাচনে হারলে লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে বিজেপি। এই তিনের মধ্যে একটি আবার উত্তরপ্রদেশের বিতর্কিত আসন কাইরানা। গোরক্ষপুর, ফুলপুরে হারের পরে এ সব আসনে জিততে মরিয়া বিজেপি।
সে কারণেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কাইরানার পাশাপাশি মুজফ্ফরনগর ও শামলিতে পাঁচ বছর আগে হওয়া গোষ্ঠী সংঘর্ষের ১৩১টি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করলেন। ওই কাইরানা থেকেই হিন্দুদের বহিষ্কার করার অভিযোগকে বিধানসভা ভোটে রাজনৈতিক অস্ত্র করেছিলেন যোগী। পাশাপাশি গোরক্ষপুর, ফুলপুরের ক্ষত ঢাকতে অতি-দলিত ও একেবারে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে সংরক্ষণ দিতে কমিটি ঘোষণা করলেন।
কিন্তু বিরোধীদের দাবি, মুজফ্ফরপুর গোষ্ঠী সংঘর্ষের মামলার মধ্যে যেগুলিতে বিজেপি নেতাদের বাঁচাতে সুবিধে হয় সেগুলিই প্রত্যাহার করা হচ্ছে। তাঁদের মতে, যোগী আক্রমণকারীদেরই বাঁচাচ্ছেন। কাইরানা ভোটের দিকে তাকিয়ে আসলে মেরুকরণের তাসই খেলতে চাইছেন তিনি।
অখিলেশ ও মায়াবতী হাত মিলিয়ে দুই কেন্দ্রে যে ভাবে হারিয়েছেন বিজেপিকে, তাতে ঘুম ছুটেছে মোদীর দলের। এরপর কংগ্রেসও পরের উপ-নির্বাচনে বাকিদের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে। বিরোধীদের মতে, বিজেপির রামের বিরুদ্ধে এ হল বিরোধীদের ‘রাম’ জোট। ‘RAM’ হলেন রাহুল গাঁধী, অখিলেশ, মায়াবতী। অমিত শাহের দাওয়াই, বিরোধী জোটকে টক্কর দিতে বিজেপিকেই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট আনতে হবে। আর এই সমীকরণ মানতে হবে মহারাষ্ট্রের দুই কেন্দ্রেও। পালঘর ও ভান্ডারা-গোন্ডিয়া কেন্দ্রেও রাহুল গাঁধী-শরদ পওয়ার হাত মেলাতে পারেন। আর বিজেপির শরিক শিবসেনা তো আলাদা লড়ার কথা ঘোষণা করে বসেই আছে। ভান্ডারা-গোন্ডিয়ার সাংসদ নানা পাটোলে ফেরর বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে গিয়েছেন। ফলে ওই কেন্দ্রের ভোট বিজেপির সম্মানের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামিকাল রাজ্যসভার ভোট। বিরোধী শিবির ভেঙে যতটা সম্ভব আসন বের করে আনার চেষ্টা করছেন অমিত শাহ। কিন্তু তারপরেও রাজ্যসভায় সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হবে না। কিন্তু লোকসভায় ২৮২ আসন পেয়ে যে নরেন্দ্র মোদী বুক চিতিয়ে এসেছিলেন, তিনি এখন সেই দাপটটিও খোয়াতে বসেছেন। স্পিকার আর মনোনীতদের বাদ দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২ জন সাংসদই আছেন টায়েটুয়ে। এরপর আরও উপ-নির্বাচন হারলে নৈতিক কর্তৃত্বও খোয়াতে হবে মোদীকে। সামনে ৫টি উপ-নির্বাচন। কিন্তু বাকি দুটি শরিকের। তিনটি সরাসরি বিজেপির দখলে ছিল। আর সেখানে পরাজয় হলে লোকসভাতেও এখনই সরাসরি শরিক নির্ভর হতে হবে মোদীকে। পরের লোকসভায় যা ‘অবশ্যম্ভাবী’ বলে মনে করছে এনডিএ-র শরিকেরাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy