Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

হিংসা ছড়াচ্ছে কংগ্রেস, তোপ বিজেপির

বরাক উপত্যকায় কয়েক দিনে হিংসাত্মক ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। বাড়ছে অবিশ্বাসও। এ জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করল বিজেপি। দলের প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায় মেহেরপুরে গোষ্ঠী সংঘর্ষ, ময়নাগড়ে বাদল সাঁওতালের মৃতদেহ নিকটাত্মীয়দের না দিয়ে পুঁতে দেওয়া, বারইগ্রামে শিক্ষক খুনের কথা উল্লেখ করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:১০
Share: Save:

বরাক উপত্যকায় কয়েক দিনে হিংসাত্মক ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। বাড়ছে অবিশ্বাসও। এ জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করল বিজেপি।

দলের প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায় মেহেরপুরে গোষ্ঠী সংঘর্ষ, ময়নাগড়ে বাদল সাঁওতালের মৃতদেহ নিকটাত্মীয়দের না দিয়ে পুঁতে দেওয়া, বারইগ্রামে শিক্ষক খুনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘একেকটি ঘটনার পর রঙ চড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর বিজেপিকে দোষারোপ করা হচ্ছে।’’ তাঁর আশঙ্কা, গেরুয়া দলটিকে বদনাম করার জন্যই এ সব করা হচ্ছে।

এর পেছনে একটা ‘গেমপ্ল্যান’ কাজ করছে বলে অনুমান রাজদীপবাবুর। তাঁর সন্দেহ— কংগ্রেস ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে। কোনওমতেই সেখান থেকে আসন বের করা সম্ভব নয়। তাই এখন বরাক উপত্যকার দিকে নজর তাঁদের। তিনি বলেন, ‘‘আগের নির্বাচনে হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের লোভ দেখিয়ে ১৩টি আসন জিতে যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের ধারণা হয়েছে, বরাকের মানুষকে বোকা বানিয়ে এ বারও কয়েকটি আসন বের করা কঠিন হবে না।’’ রাজদীপবাবুর অভিযোগ, সে জন্যই কংগ্রেস বিজেপিকে বদনাম করতে উঠেপড়ে লেগেছে। নিজেরাই হিংসা ছড়াচ্ছে, হিংসায় মদত দিচ্ছে। পরে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।

বদনাম এড়াতে বিজেপি নেতারা আজ বারবার জানান, তাঁরা দুর্ঘটনায় নিহত বাদল সাঁওতালের সঙ্গে চালক সাদিদ আহমেদ বড়ভুঁইঞার নিকটাত্মীয়কেও ২০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি করেছেন। বিজেপি নেতারা গত কাল কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথনের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যপালের উদ্দেশে স্মারকপত্র দিয়েছেন। তাঁরা বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবির কথাও ফের উল্লেখ করেন।

বিজেপির জেলা সভাপতি কৌশিক রাই জানান, মেহেরপুরের গোষ্ঠী সংঘর্ষ, বিধায়ক গ্রেফতার ও মহিলাদের উপর পুরুষ পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত তাঁরা আগেই চেয়েছেন। ময়নাগড়ের পুরো ঘটনার তদন্তও এক জন বিচারপতিকে দিয়ে করানোর জন্য দাবি করছেন।

এর পর বিচারপতি তাঁদের দোষী বলে ঘোষণা করলে তাঁরা আইন অনুযায়ী শাস্তি মেনে নেবেন। কংগ্রেস এই সহজ কথা মানতে নারাজ কেন— সেই প্রশ্ন তোলেন কৌশিকবাবু। তিনি জানতে চান, গগৈ সরকার কেন বিচারবিভাগীয় তদন্ত করানোর সাহস পাচ্ছেন না।

এতেই কংগ্রেসের ছক পরিষ্কার বলে দাবি করেন জেলা সভাপতি। বিজেপি নেতাদের আশঙ্কা, এখনই বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে পুরো চক্রটিকে চিহ্নিত করা না গেলে আগামী দিনে হিংসার মাত্রা বেড়ে যাবে। একই ধরনের ঘটনা আরও ঘটানো হবে।

ময়নাগড়ের ঘটনায় ধৃতদের মুক্তির জন্য আর্জি জানান বিজেপি নেতা নিত্যভূষণ দে ও রূপম সাহা। তাঁদের দাবি, পুলিশ দোষীদের চিহ্নিত করতে পারেনি। বদলে যাকে-তাকে ধরে নিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় অভিযোগ এনেছে পুলিশ। বিজেপি চা মোর্চার রাজ্য উপসভাপতি সঞ্জয় ঠাকুর দ্রুত তদন্ত সেরে প্রকৃত দোষীদের নাম আদালতকে জানানোর জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন। সে ক্ষেত্রে নির্দোষ ধৃতদের জামিনে মুক্তি পাওয়া সহজতর হবে। তিনি আগেই তাঁদের জামিনের আবেদন জানিয়ে সিজেএম-এর আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন। সিজেএম তা খারিজ করে দেন।

সঞ্জয়বাবু জানান, এ বার জেলা আদালতে তাঁদের জামিনের জন্য তিনিই লড়বেন। দুর্গোৎসব পর্যন্ত এই মামলায় ধরপাকড় বন্ধ রাখতেও তাঁরা জেলাশাসকের মাধ্যমে রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ জানান। পুলিশ সুপার বদলির দাবিও পুজো পর্যন্ত তুলে রেখেছেন, এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি কৌশিক রাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE