আলোচনা: দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির নয়া সদর দফতরের উদ্বোধনে নরেন্দ্র মোদী ও লালকৃষ্ণ আডবাণী। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
নতুন দফতরে সবে পা রেখেছেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। পর্দায় সেই ছবি দেখেই স্বতঃস্ফূর্ত করতালি বিজেপি কর্মীদের।
নরেন্দ্র মোদী এলেন এর পরেই। কিন্তু করতালি কই? মঞ্চ থেকে ঘোষণা করতে হল, ‘‘আপনাদের মাঝে বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় নেতা। উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিন।’’ ঘোষণা মানলেন কর্মীরা। কিন্তু নেই সেই স্বতঃস্ফূর্ততা। আগের মতো ‘মোদী-মোদী’ ধ্বনি তো দূরস্থান।
প্রায় চার দশক পরে ঠিকানা বদল হল বিজেপির। ১১ অশোক রোড থেকে ৬এ দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে। শিলান্যাসের দেড় বছরের মধ্যেই দলের নতুন ভবনের আজ উদ্বোধন করলেন মোদী। তাঁর ‘স্বপ্নের’ এই হাইটেক দফতরের ছ’তলায় অমিত শাহের ঘর যে কোনও সাততারা হোটেলের স্যুইটকে হার মানাবে। লোকসভার আগে এই দফতরই হবে মোদী-অমিত শাহের ‘ওয়ার-রুম’।
নেতা-মন্ত্রীদের পাশাপাশি বিজেপির যে সাধারণ কর্মীরা আজকের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন, তাঁদের সিংহভাগ কাজ করেন বিজেপি দফতরেই। কিন্তু যে কুর্নিশ জুটল আডবাণীর, মোদীর ভাগ্যে সেটি হল না। তাই কি বক্তৃতাতেও কিছুটা দিগভ্রান্ত হলেন প্রধানমন্ত্রী?
আরও পড়ুন: নীরব-কাণ্ডে জালে তিন, প্রশ্ন অনেক
নীরব মোদী নিয়ে আজও নীরব থাকলেন। উল্টে বক্তৃতায় আনতে হল অটলবিহারী বাজপেয়ী, এনডিএ-র কথা। এতদিন ব্রাত্য করে রাখা আডবাণীর সাংগঠনিক ক্ষমতার কথা। আডবাণী-মুরলী মনোহর জোশীর মত প্রবীণদের মঞ্চে রাখলেন, একসঙ্গে ভবন উদ্বোধন করলেন, দফতর ঘুরলেন। অটল জমানায় এনডিএ-র সাফল্যের কথা বলে শরিকদের বার্তাও দিলেন মোদী। কিন্তু দিশা হারালেন কংগ্রেসকে বিঁধতে গিয়ে। শুধু বললেন, ‘‘স্বাধীনতার আগে কংগ্রেসের অবদান থাকলেও স্বাধীনতার পরে সব আন্দোলনে ছিল জনসঙ্ঘ-বিজেপি।’’
আর বারবার বললেন, ‘‘বিজেপির রন্ধ্রে রন্ধ্রে গণতন্ত্র।’’ যা শুনে মুখ চাওয়াচাওয়ি করে হাসতে দেখা গেল কোনও কোনও কর্মীকে। হাওয়া মেপে অমিত শাহ তুললেন মোদীর জয়ধ্বনি। মোদীর জনপ্রিয়তা, নেতৃত্ব, মোদীর ভাবনাতেই নতুন দফতরের পরিকল্পনা। যে কোনও প্রান্তে মোদীর সভা সরাসরি শোনা যাবে এই দফতর থেকে। প্রধানমন্ত্রীও সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন ভিডিও কনফারেন্সে। অমিত বললেন, ‘‘বিশ্বে এটাই সবথেকে বড় রাজনৈতিক দলের দফতর। এ বার দেশের ৬৯৪টি জেলার মধ্যে ৬৩৫টিতেই এই ধাঁচের দফতর হবে।’’
বিরোধীরা বলছে, নোটবন্দির আগেই কালো টাকাকে সাদা করে গোটা দেশে ভবন বানাচ্ছে বিজেপি। হাইটেক অফিস বানাতে খরচ কত হল? মুখে কুলুপ বিজেপি নেতাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy