ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র বায়ুসেনায় কমিশনড হলে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে ভারত। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আবার সফল ভাবে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ভারত। বৃহস্পতিবার সকালে পোখরান টেস্ট রেঞ্জে এই পরীক্ষামূলক অভিযান হয়েছে। পৃথিবীর দ্রুততম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রটি নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে।
ভারত-রাশিয়া যৌথ উদ্যোগে তৈরি ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগামী ক্রুজ মিসাইল। শব্দের বেগের প্রায় তিন গুণ জোরে ছোটে ব্রহ্মস। প্রথমে এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ছিল ২৯০ কিলোমিটার। কিন্তু ভারত ২০১৬ সালে মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিমের (এমটিসিআর) সদস্য হওয়ার পরে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ পাল্লা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ ভারতের ক্ষেত্রে শিথিল হয়ে গিয়েছে। ফলে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা বাড়িয়ে ৪০০ কিলোমিটার করার পথ খুলে গিয়েছে।
ভারতীয় স্থলসেনা এবং নৌসেনার হাতে আগেই পৌঁছে গিয়েছে ব্রহ্মস। ফলে শুধু দেশের মাটি থেকে নয়, দেশের বাইরে গিয়ে জলভাগ থেকেও ভারত এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু এই শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রকে বায়ুসেনার হাতে তুলে দিয়ে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে চায় ভারত। তাই সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ব্যবস্থা করছে নয়াদিল্লি।
সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ফাইটার জেটগুলির অন্যতম। এই যুদ্ধবিমান থেকে ব্রহ্মস ছোড়া গেলে ভারতীয় বায়ুসেনা তার সব প্রতিপক্ষের কাছেও আরও সমীহের কারণ হয়ে উঠবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। সুখোইকে ব্রহ্মস নিক্ষেপের উপযুক্ত করে তোলার জন্য প্রযুক্তি এবং নকশায় বদল আনার কাজ কয়েক বছর আগেই শুরু হয়েছিল। ২০১৭-র ২২ নভেম্বর প্রথম বারের জন্য সুখোই থেকে ব্রহ্মস ছোড়া হয়। নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হেনে সে দিনই ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণার ইতিহাসে মাইলফলক তৈরি করে করে ফেলেছিল সুখোই-ব্রহ্মস জুটি। বৃহস্পতিবার পোখরান টেস্ট রেঞ্জ থেকে ব্রহ্মসের ফ্লাইট টেস্ট হল এবং তা সফলও হল।
আরও পড়ুন: অর্থ নয় পাকিস্তানকে, মার্কিন দরবারে ডোভাল
যুদ্ধবিমান থেকে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র আরও বেশ কয়েক বার পরীক্ষামূলক ভাবে ছোড়া হবে। তার পরে বায়ুসেনায় কমিশনড হবে ব্রহ্মস। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুসেনায় ব্রহ্মস কমিশনড হওয়ার অর্থ হল, প্রতিপক্ষের কোনও ঘাঁটি বা অন্য যে কোনও লক্ষ্যে অত্যন্ত দ্রুত আঘাত হানতে পারবে ভারত এবং সে আক্রমণ প্রায় অপ্রতিরোধ্য হবে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে জঙ্গি-সেনা সংঘর্ষ, নিহত ১০
দেশের স্থলভাগ থেকে ব্রহ্মস ছুড়ে খুব দূরবর্তী প্রতিপক্ষকে কাবু করা সম্ভব নয়। যুদ্ধজাহাজ ব্যবহার করে দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে অনেক দূরে গিয়ে ব্রহ্মস ছোড়া যায়। কিন্তু তা সময় সাপেক্ষ। কিন্তু সুখোই-৩০ এমকেআই ফাইটারের মতো চৌখস যুদ্ধবিমান থেকে ব্রহ্মস ছোড়া হলে, খুব দ্রুত অনেক দূরবর্তী প্রতিপক্ষকে নিশানা বানানো সম্ভব। সুখোই নিজে অত্যন্ত দ্রুতগামী বিমান। খুব অল্প সময়ে হাজার বা দেড় হাজার কিলোমিটার উড়ে যাওয়া কোনও কঠিন বিষয় নয় এই যুদ্ধবিমানের পক্ষে। অতটা উড়ে গিয়ে ব্রহ্মস ছুড়ে আরও ৪০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে পারবে সুখোই। আকাশ থেকে ছোড়া সেই ক্ষেপণাস্ত্র আবার ধেয়ে যাবে শব্দের তিন গুণ বেগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy