Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধ ব্রডগেজ, শিলচরে ধর্না রূপায়ণ কমিটির

১৯ বছর অপেক্ষার পর লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু চার মাসও তা চলেনি। পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হয় ট্রেন চলাচল। হচ্ছে-হবে, কাজ চলছে বলে কাটিয়ে দেওয়া হয়েছে আরও দু’মাস।

শুরুর সে দিন। লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ লাইনে প্রথম ট্রেন। ছবি ফেসবুকের সৌজন্যে।

শুরুর সে দিন। লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ লাইনে প্রথম ট্রেন। ছবি ফেসবুকের সৌজন্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৮:২৭
Share: Save:

১৯ বছর অপেক্ষার পর লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু চার মাসও তা চলেনি। পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হয় ট্রেন চলাচল। হচ্ছে-হবে, কাজ চলছে বলে কাটিয়ে দেওয়া হয়েছে আরও দু’মাস। কবে এই রুটে ফের ট্রেন চলবে, তার ঠিক নেই। বার বার ধসে পড়া রুটে যাত্রী-নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে। এ নিয়ে দক্ষিণ অসমের মানুষ চরম যন্ত্রণায়। বাইরে বেরনো বন্ধই হয়ে পড়েছে।

প্রতিবাদে আজ শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি শিলচর স্টেশনে ধর্না দেয়। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত স্টেশনের প্রবেশপথে প্রচুর মানুষ বিক্ষোভ দেখান। হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ থেকেও আসেন অনেকে। তাঁরা জানতে চান— কার দোষে এই দুর্ভোগে দক্ষিণ অসম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুরের লক্ষ লক্ষ জনতা। সংগ্রাম কমিটি পরে স্টেশন সুপারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে স্মারকপত্র পাঠান।

তাঁরা অবিলম্বে এই গেজ পরিবর্তন প্রকল্পের নির্মাণকাজের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেন। দোষীদের শনাক্ত করে উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি তোলেন তাঁরা। যাত্রী-নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে উপযুক্ত লাইন বসানোর দাবি করেন। কমিটির স্মারকলিপিতে চন্দ্রনাথপুর-লঙ্কা দ্বিতীয় নতুন লাইন তৈরির জোরালো আর্জি জানানো হয়।

অজয় রায়, সুশীল পাল, নির্মাল্য দাস, শশাঙ্কশেখর পাল, মলয় ভট্টাচার্য, সুব্রত নাথ, দুলালী গঙ্গোপাধ্যায়রা জানান— নতুন ব্রডগেজ লাইন নিয়ে রেল দফতর এখন যে জিও-টেকনিক্যাল সমস্যায় ভুগছে, তা আচমকা কোনও প্রাকৃতিক কারণে তৈরি হয়নি। পাহাড় পেরিয়ে যেহেতু লাইন যাবে, সে বিষয়গুলি ১৯ বছরে চিন্তা করার ব্যাপার ছিল। তাঁদের কথায়, ‘‘আসল সমস্যা নিম্নমানের নির্মাণ কাজ।’’ এ ব্যাপারে তাঁরা রেলকর্তাদের বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও কেউ কানে তোলেননি।

প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে এই প্রকল্পে। প্রশ্ন, এত বড় একটি প্রকল্প কি জিও-টেকনিক্যাল সার্ভে ছাড়া করা হয়ে গিয়েছে? সার্ভে হয়ে থাকলে তারা কি রেললাইন তৈরির পক্ষে মতামত দিয়েছিলেন না কি রেল তাদের কথাতেও গুরুত্ব দেয়নি। কয়েক লক্ষ মানুষের দুর্ভোগের সঙ্গে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয়ের জন্য ব্রডগেজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চায়, যাতে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া যায়। পাশাপাশি মাইগ্রেনডিসার যে অংশে লাইন বেঁকে উপরে উঠে যাচ্ছে, সে জায়গাটি খুব ভাল করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার অনুরোধ করেন তাঁরা। ধর্না-বিক্ষোভে অংশ নিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের সভাপতি আশিস ভৌমিক, প্রদীপ নাথ ও স্বপন দাস বলেন, সে জায়গা দিয়ে আদৌ ট্রেন চালানো সম্ভব কি না, তা নিশ্চিত করা হোক। না হলে ডাইভারশন রুট বের করে কাজ শুরু করা হোক। এই রুটটি চালু করা গেলেও যে সিঙ্গল লাইনের দরুন সমস্যা লেগেই থাকবে, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আম্দোলনকারীরা চন্দ্রনাথপুর-লঙ্কা আরেকটি লাইন তৈরির অনুরোধ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Broad gauge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE