দু’জনেই ব্যবসায়ী। নানা অপকর্মে দোসর দু’জনেই। সেই থেকেই সম্পত্তি হাতানোর চক্রান্ত শুরু। আর তারই খেসারত দিতে হল একজনকে। সপরিবার খুন হতে হল দিল্লির এক বিএসপি (বহুজন সমাজ পার্টি) নেতা মুনাওয়ার হাসানকে। প্রায় দু’কোটি টাকার সম্পত্তি হাতানোর জন্য মুনাওয়ার, তাঁর স্ত্রী এবং চার সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারই এক বিজনেস পার্টনার। নাম সাহিব খান ওরফে বান্টি। আর এই কাজের জন্য তিন সুপারি কিলারকে নিয়োগ করে সে। মঙ্গলবার দিল্লি থেকে ভাড়াটে দুষ্কৃতী-সহ বছর সাতাশের বান্টিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লির বিভিন্ন জায়গা থেকে মুনাওয়ার ও তার পরিবারের বিকৃত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।
ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল?
দিল্লির ডিসিপি(উত্তর) যতীন নারওয়ালের কথায়, বান্টি নিজেই মুনাওয়ারের মৃত্যুর খবর পুলিশকে জানায়। বুরাইতে তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিএসপি নেতার গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। বান্টির মোবাইল ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করে আরও তিন দুষ্কৃতীর সন্ধান মেলে। বান্টিকে জেরা করে জানা গিয়েছে, এই কাজের জন্য তার এক বন্ধু দীপককে কাজে লাগিয়েছিল সে। সঙ্গে ছিল আরও দুই দুষ্কৃতী ফিরোজ ও জুলফিকর। মুনাওয়ারের পরিবারকে খতম করার জন্য এদের তিন লক্ষ টাকাও দিয়েছিল সে। গতমাসেই খুন করা হয় বিএসপি নেতার স্ত্রী সোনিয়া, এক মেয়ে আরসি ও তিন ছেলে আকিব, সাকিব, আরজুকে। তারপর সেই দেহগুলি তারা পুঁতে দেয় মেরঠ ও দিল্লির বিভিন্ন জায়গায়।
ডিসিপি জানান, হত্যাকারীর জবানবন্দিতে জানা গিয়েছে, মুনাওয়ার ও তাঁর পরিবারকে বহু বছর ধরেই চিনত সে। সে ছিল তার ব্যবসার অংশীদার। তারা দু’জনেই বিতর্কিত সম্পত্তি বেচাকানার কাজ করত। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে একটি ধর্ষণ কাণ্ডে মুনাওয়ারকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তখন থেকে নাকি পুরো ব্যবসাটাই নিজের নামে করে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল বান্টি। সেই মতো সুযোগও এসে যায় সামনে। মুনাওয়ার জামিনে ছাড়া পাওয়ার আগেই তার পরিবারকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে সে ও তার তিন সঙ্গী। মুনাওয়ার ছাড়া পাওয়ার পর তাকেও ভুল বুঝিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে নিকেশ করে দেয় তারা। পুলিশ জানিয়েছে, দেহগুলি মাটির নিচে বেশি করে নুন দিয়ে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। যাতে দ্রুত সেগুলিতে পচন ধরে যায়। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ করে হাজতে খোদ অসমের কার্বি রাজা
পুলিশ সূত্রে খবর, মুনাওয়ার নিজেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল। ধর্ষণ, জবরদস্তি জমি দখল, খুনের চেষ্টা, অপহরণ-সহ একাধিক অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ২০১৩ সালে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে সময় বাদলি আসন থেকে বহুজন সমাজ পার্টির টিকিট পায় মুনাওয়ার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy