Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

খাস রাজধানীতে রোষের নিশানায় এ বার মোষের ট্রাক

গো-রক্ষকের মার এ বার রাজধানী দিল্লিতেও।শুরু হয়েছিল ২০১৫-য় উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে মহম্মদ আখলাকের খুন দিয়ে। তার পর কখনও রাজস্থানের অলওয়রে দুধ ব্যবসায়ী পেহলু খানের খুন, কখনও কাশ্মীরে যাযাবর পরিবারের ৯ বছরের বাচ্চারও মার খাওয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:১৮
Share: Save:

গো-রক্ষকের মার এ বার রাজধানী দিল্লিতেও।

শুরু হয়েছিল ২০১৫-য় উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে মহম্মদ আখলাকের খুন দিয়ে। তার পর কখনও রাজস্থানের অলওয়রে দুধ ব্যবসায়ী পেহলু খানের খুন, কখনও কাশ্মীরে যাযাবর পরিবারের ৯ বছরের বাচ্চারও মার খাওয়া। সেই তালিকায় জুড়ে গেল ‘অভিজাত’ দক্ষিণ দিল্লির কালকাজি।

এ বার অবশ্য গরু নয়, রোষের নিশানা মোষ ভর্তি একটি ট্রাক। আর সেই ট্রাক থেকে তিন জনকে নামিয়ে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ‘পিপল ফর অ্যানিম্যালস’ (পিএফএ) নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার। যার চেয়ারপার্সন তথা অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী মেনকা গাঁধী।

পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, গত কাল প্রায় মধ্যরাতে পিএফএ-র এক কর্মকর্তার ফোন পেয়ে কালকাজিতে পৌঁছয় টহলদারি ভ্যান। দেখা যায়, ১৪টি মোষ ভর্তি একটি মিনি-ট্রাক আটকানো হয়েছে। অভিযোগ, পুলিশ আসার আগেই মিনি-ট্রাকের তিন আরোহী রিজওয়ান, কামিল ও আশুকে মারধর করা হয়। পুলিশের একাংশের মত, এতে পিএফএ-র সদস্যরাই জড়িত। যদিও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, ট্রাক থামাতেই আশপাশ থেকে কিছু লোক এসে আরোহীদের পেটাতে শুরু করে। মোষগুলিকে যে ভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা দেখে খেপে যায় তারা। অবস্থা সামাল দিতে পিএফএ সদস্যরাই পুলিশ ডাকেন।

আরও পড়ুুন:বিপন্ন বিজ্ঞান, বিজ্ঞানীর ঢল ৬০০ শহরে

পুলিশ তিন জনকে উদ্ধার করে এইমস হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের গ্রেফতারও করা হয়। অথচ মারধরে অভিযুক্ত কাউকেই ধরা হয়নি। শুধু মামলা দায়ের হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, হরিয়ানা থেকে গাজিপুরের কসাইখানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল মোষগুলিকে।

প্রশ্ন হল, দিল্লিতে মোষ নিয়ে যাওয়া কি বেআইনি? কাউকে ধরা গেল না কেন?

পিএফএ-র সদস্য সৌরভ গুপ্তের দাবি, দিল্লিতে মোষ নিয়ে যাওয়া বেআইনি নয়। কিন্তু যে ভাবে তাদের পা ভেঙে ছোট ট্রাকে গাদাগাদি করে নিয়ে যাওয়া হয়, সেটি বেআইনি। এর জন্য দিল্লি হাইকোর্টে ইতিমধ্যেই মামলা হয়েছে। ৯ মে শুনানি। ওই তিন জনের বিরুদ্ধে পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতার অভিযোগেই এফআইআর হয়েছে। সৌরভের দাবি, দিল্লি পুলিশের মদতে প্রায় রোজ রাতেই গবাদি পশুর বেআইনি চোরাচালান চলে। গত কাল রাতে আরও ৯টি ট্রাক ধরা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, এখনও পর্যন্ত তদন্তে গত কালের ঘটনার সঙ্গে কোনও গো-রক্ষা দলের যোগ মেলেনি। মেনকা নিজেও দিল্লি পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে তাঁর দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে পিএফএ-র যোগ নেই। মেনকার দফতরের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পশু অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। দিল্লিতে পিএফএ-র কোনও ইউনিট নেই। সারা দেশে আমাদের ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী আছেন। যে এটা করেছে, সে নিজে থেকে করেছে’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE