Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

জয়শঙ্করকে নয়া দায়িত্বে আনার চিন্তা

সাউথ ব্লক চিন্তাভাবনা করছে, বিদেশসচিব পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরে জয়শঙ্করকে আমেরিকা এবং চিন— এই দু’টি রাষ্ট্রের বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ করা নিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৮
Share: Save:

মেয়াদ ইতিমধ্যেই এক বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল। আর যে বাড়ানো সম্ভব নয়, তা বিদেশসচিব এস জয়শঙ্করকে আগেই জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে এ বার নতুন ভূমিকায় কাজে লাগাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। সাউথ ব্লক চিন্তাভাবনা করছে, বিদেশসচিব পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরে জয়শঙ্করকে আমেরিকা এবং চিন— এই দু’টি রাষ্ট্রের বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ করা নিয়ে।

বিষয়টি নিঃসন্দেহে অভিনব। আমেরিকা এবং চিন— এই দু’দেশের জন্য কোনও বিশেষ দূত নিয়োগ করে কূটনৈতিক ভারসাম্য এবং যোগাযোগ বজায় রাখার দৃষ্টান্ত সাম্প্রতিক অতীতে নেই। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে এই চিন্তা করছে কেন্দ্র। জয়শঙ্কর শুধু আমেরিকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন না, তাঁর সঙ্গে জেমস ম্যাটিস, রেক্স টিলারসন-সহ ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যাবিনেটের প্রধান চার জনের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ রয়েছে। তাঁরই পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী আফ-পাক পরিস্থিতি নিয়ে এঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তাতে কাজও হয়েছে বলে মনে করে সাউথ ব্লক। চিনেও রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন জয়শঙ্কর। তিনি যে আলোচনার মাধ্যমে বেজিং-এর সঙ্গে সম্পর্ক সহজ রাখার পক্ষপাতী, সেটা চিনও ভালই জানে।

জয়শঙ্করকে বিশেষ দূত নিয়োগ করে ভারত-চিন আমেরিকা-র মধ্যে একটি ত্রিস্তরীয় কূটনৈতিক পরিসর তৈরি করার কথা ভাবছে কেন্দ্র। ট্রাম্প চিন সম্পর্কে কিছুটা কড়া হলেও তাদের সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা আমেরিকার পক্ষে মুশকিল। ফলে ভারত মাঝে থাকলে, তা ওয়াশিংটনের জন্যও লাভজনক।

তবে বিষয়টির পরিণতি এখনও অনিশ্চিত। একে তো নতুন বিদেশসচিব বিজয় কেশব গোখলের সঙ্গে চিনা নেতৃত্বের সম্পর্ক ভাল। তিনি প্রাক্তন চিনা রাষ্ট্রদূতও বটে। ডোকলাম সংঘাত মেটাতে তাঁর ভূমিকা অগ্রগণ্য। সঙ্ঘের একাংশও চায় না যে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের ডানা ছাঁটা হোক। তাদের বক্তব্য, চিনের সঙ্গে সীমান্ত আলোচনার প্রশ্নে ডোভালই দায়িত্বপ্রাপ্ত। জয়শঙ্করকে নিয়োগ করলে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। যদিও সম্প্রতি ডোভালের চিন-নীতি নিয়ে সাউথ ব্লকের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ডোভালের সহকারী হিসেবে আজ ‘র’-এর প্রাক্তন প্রধান রাজেন্দ্র খন্নার নিয়োগের পর অনেকেরই বক্তব্য, তাঁকে এনে ডোভালকে চাপে রাখলেন মোদী। পাল্টা বলা হচ্ছে, পাক-পরিস্থিতি সামাল দিতে পাক-বিশেষজ্ঞ রাজেন্দ্রকে আনা হয়েছে।

কেন্দ্র এমন সময়ে বিদেশনীতিতে মোড় আনতে চাইছে, যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের টুইট নিয়ে তোলপাড় চলছে। এখনই এ নিয়ে উদ্বাহু হতে নারাজ সাউথ ব্লক। ট্রাম্পের হুমকির পর পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে চিন। এই অবস্থায় দিল্লি এখন আরও সতর্ক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE