Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ফের ভাবনায় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন

বিচারপতিদের এই অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যেই ফের বিচারপতি নিয়োগ কমিশনের দাবি তোলা যায় কি না, তা নিয়ে মোদী সরকারের অন্দরমহলে চিন্তাভাবনা চলছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৫
Share: Save:

তাঁর নেতৃত্বেই সুপ্রিম কোর্টের চার প্রবীণ বিচারপতি অভিযোগ তুলেছিলেন, প্রধান বিচারপতি বিচারবিভাগের নিরপেক্ষতা বিসর্জন দিচ্ছেন।

আজ বিচারপতি জাস্তি চেলমেশ্বর ফের এ বিষয়ে মুখ খুলে বললেন, ‘‘উদারবাদী গণতন্ত্রের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা অবশ্য প্রয়োজন।’’ আজ এক অনুষ্ঠানে বিচারপতি চেলমেশ্বর বলেন, ‘‘আমার মতো যে সব মানুষ প্রতিষ্ঠানের স্থায়িত্ব, সুরক্ষা নিয়ে মাথা ঘামাই, তাঁদের নিরন্তর এই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।’’

প্রধান বিচারপতি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর কিছু মামলা বাছাই করা বিচারপতিদের কাছে পাঠাচ্ছেন— এই অভিযোগই তুলেছিলেন ‘বিদ্রোহী’ বিচারপতিরা। তাঁদের ইঙ্গিত ছিল, সরকারের চাপের সামনে নতজানু হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। ‘বিদ্রোহী’ বিচারপতিদের দাবি ছিল, কোন মামলা কোন বেঞ্চ শুনবে, তা ঠিক করতে একটি নির্দিষ্ট ব্যবস্থা তৈরি হোক। তার এখনও ফয়সালা হয়নি।

বিচারপতিদের এই অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যেই ফের বিচারপতি নিয়োগ কমিশনের দাবি তোলা যায় কি না, তা নিয়ে মোদী সরকারের অন্দরমহলে চিন্তাভাবনা চলছে।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আজই আইনজীবীদের একটি সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে তিনটি মামলা করে তিনটি দাবি তুলেছে। এক, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে বিচারপতিদের শূন্যপদ পূরণের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগ করা হোক। দুই, বিচারপতি নিয়োগ কমিশন খারিজ করে দেওয়ার রায় পুনর্বিবেচনা করা হোক। আজ প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে মার্চ মাসে শুনানিতে রাজি হয়েছেন।

আইনজীবীদের ওই সংগঠনটি আজ আরও দাবি তুলেছে, সুপ্রিম কোর্টের শুনানির ভিডিও রেকর্ডিং করা হোক। এর আগে আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ সুপ্রিম কোর্টের শুনানির ধারাবাহিক সম্প্রচারের দাবি তুলে মামলা করেছেন। আইনজীবীদের যুক্তি, বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতেই এ সব জরুরি।

বিচারপতি নিয়োগের ভার সম্পূর্ণ ভাবে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের হাতে থাকা উচিত কি না, তা নিয়ে বিচারপতি চেলমেশ্বরের ভিন্ন মত রয়েছে। মোদী সরকারের বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইন সুপ্রিম কোর্টের যে সাংবিধানিক বেঞ্চ খারিজ করে দিয়েছিল, তার সদস্য হলেও তিনি ভিন্ন মত পোষণ করেছিলেন বিচারপতি চেলমেশ্বর। আজও বিচারপতি চেলমেশ্বর বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট সব আদালতের অভিভাবক নয়। কিন্তু বাস্তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে। সরাসরি বিচারপতি নিয়োগের মাধ্যমে। পরোক্ষ ভাবে আদালতের প্রশাসনিক নিয়মকানুন ঠিক করে দিয়ে।’’

সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতা এবং ন্যায়ের আকুলতায় সুপ্রিম কোর্টে প্রচুর মামলা জমছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি চেলমেশ্বর। তাঁর মতে, এই জমে থাকা মামলার পাহাড় সরানো অসম্ভব। প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই এর সমাধান খুঁজতে হবে। অনুষ্ঠানের পর অবশ্য বিচারব্যবস্থার অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিচারপতি চেলমেশ্বর। অনুষ্ঠানে সলমন খুরশিদ, জয়রাম রমেশ, প্রশান্ত ভূষণও হাজির ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE