Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আফগানিস্তানে ঘাঁটি চায় চিন, চিন্তা ভারতের 

আমেরিকার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক অক্ষ গড়তে এ বার যদি পাকিস্তান ও চিন আফগানিস্তান প্রশ্নে হাত মেলায় তা হলে প্রতিবেশী হিসেবে সব চেয়ে আগে সমস্যায় পড়বে দিল্লিই। পাক সেনা তথা আইএসআই-কে ওই অঞ্চলে ফের চাঙ্গা করতে বেজিং উদ্যোগী হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৮ ০৪:১১
Share: Save:

আফগানিস্তানের নির্জন পাহাড়ি এলাকা ওয়াখান করিডর-এ সামরিক ঘাঁটি বানানোর জন্য কাবুলের সঙ্গে কথা শুরু করেছে বেজিং। বিষয়টি নিয়ে চাপ বাড়ছে সাউথ ব্লকের। দীর্ঘ দিনের লড়াইয়ের পরে পাকিস্তানকে সাময়িক ভাবে পিছনে ফেলে কাবুলে প্রভাব ও উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞে সামিল হতে শুরু করেছে ভারত। কিন্তু এখানেও ড্রাগনের ছায়া নিঃসন্দেহে অস্বস্তিকর। শুধু ছায়াই নয়, চিনের সামরিক ঘাঁটি তৈরি হলে তা ভারতের নিরাপত্তার পক্ষেও যথেষ্ট কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।

বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ বলেছেন, ‘‘সরকার রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে। ভারতের সঙ্গে অন্য কোনও দেশের সম্পর্ক নিজস্ব দ্বিপাক্ষিক সমীকরণের উপর চলে। কোনও তৃতীয় দেশের দ্বারা তা প্রভাবিত হয় না। গোটা বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে।’’

ভি কে সিংহের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার মঞ্চে চিনের উপস্থিতি বাড়তি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। এমনিতেই পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা। আমেরিকার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক অক্ষ গড়তে এ বার যদি পাকিস্তান ও চিন আফগানিস্তান প্রশ্নে হাত মেলায় তা হলে প্রতিবেশী হিসেবে সব চেয়ে আগে সমস্যায় পড়বে দিল্লিই। পাক সেনা তথা আইএসআই-কে ওই অঞ্চলে ফের চাঙ্গা করতে বেজিং উদ্যোগী হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, শুধুমাত্র ভারতকে চাপে রাখা বা পাকিস্তানকে ওই অঞ্চলে ফের শক্তিশালী করাটা চিনের লক্ষ্য নয়। এই সামরিক ঘাঁটি নির্মাণে বেজিংয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা স্বার্থও জড়িয়ে রয়েছে। চিনের আশঙ্কা যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে জঙ্গি সে দেশে প্রবেশ করতে পারে। ইস্ট টার্কিশ ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম)-র জঙ্গি সদস্যরা ওয়াখান পার হয়ে নিকটবর্তী চিনের জিনজিয়াং এলাকায় প্রবেশ করে তাণ্ডব চালাতে পারে বলে মনে করছেন চিনা কর্তারা। ইরাক এবং সিরিয়া থেকে আইএস জঙ্গিরাও মধ্য এশিয়া পার হয়ে একই পথে জিনজিয়াং-এ পৌঁছতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র মোহাম্মদ রাদমানেশ সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘আমরা ওই এলাকায় নিজেরাই ঘাঁটি তৈরি করব ভেবেছিলাম। কিন্তু চিনের সঙ্গে কথা হয়েছে। অর্থ ও অস্ত্র পরিকাঠমো আমাদের পাশে থাকতে চাইছে ওরা।’’

এই পরিস্থিতিতে কাবুল তথা পশ্চিমী বিশ্বকেও বার্তা দিতে সক্রিয় হয়েছে সাউথ ব্লক। সম্প্রতি সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে আফগানিস্তানে ভারতের ভূমিকা নিয়ে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘‘২০১১ সালে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই চুক্তিতে স্থির হয়, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, সংগঠিত অপরাধ, মাদক চোরাচালান, হাওয়ালার মতো বিষয় রুখতে যৌথ ভাবে কাজ করবে দু’দেশ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE