ত্রয়ী: সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। রবিবার। ছবি: পিটিআই।
শুরুটা করে রেখেছিলেন অরুণ জেটলি। সরাসরি আক্রমণ করলেন রবিশঙ্কর প্রসাদ। সংবিধান দিবসের মঞ্চে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে তরজায় জড়িয়ে পড়লেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেন কিছুটা মধ্যস্থতা করে মনে করিয়ে দিলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের তিন অঙ্গের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।
বিচারপতি নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগের সংঘাত এখনও মেটেনি। এখনও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র বিচারপতিদের নিয়ে তৈরি কলেজিয়ামই বিচারপতি নিয়োগ করছে। অনেক ক্ষেত্রেই আদালত প্রশাসন ও আইনসভার অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে বলেও দাবি সরকারের। গতকাল সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগের ‘অতিসক্রিয়তা’কে নিশানা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি দাবি করেন, আদালত যদি প্রশাসন-আইনসভার এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করে তবে বিচার বিভাগেরও ক্ষতি হবে। ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। সম্প্রতি একাধিক ক্রীড়া সংস্থার প্রশাসন নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে নানা পক্ষ। জেটলির বক্তব্য, ‘‘বিচারপতিরা রায় লেখার প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। প্রশাসন বা ক্রীড়া সংস্থা চালানোর নয়।’’ আজ সংবিধান দিবসের মঞ্চে আক্রমণ জারি রাখেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। তাঁর কথায়, ‘‘সংবিধান প্রণেতারা চাননি বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনমন্ত্রী কেবল পোস্টঅফিস হয়ে থাকুন। যদি দেশের প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে ভরসা না করা যায় তবে তা চিন্তার বিষয়।’’ গতকাল প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র জানিয়েছিলেন, মৌলিক অধিকার রক্ষা করা বিচারপতিদের কর্তব্য। আজ রবিশঙ্করের তিরের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বিচার বিভাগ সব সময়েই আইন মন্ত্রকের মতকে পূর্ণ সম্মান দিয়ে গ্রহণ করে। প্রশাসন, আইনসভা ও বিচার বিভাগের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব থাকা উচিত নয়। সকলকেই সংবিধানের সার্বভৌমত্ব মেনে কাজ করতে হবে।’’
সরকার ও বিচার বিভাগের এই টানাপড়েনের মধ্যে যেন কিছুটা সন্ধির সুর শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মুখে। সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাষ্ট্রের তিন অঙ্গকেই একে অন্যের ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।’’ তাঁর কথায় ‘‘একটা গল্প শুনেছিলাম। তাতে বলা হয়েছে, স্বর্গ ও নরকে মানুষের হাত একে অপরের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। নরকে সেই অবস্থায় খেতে গিয়ে খাবার পিছন দিকে পড়ে যায়। আর স্বর্গে এক জন খাইয়ে দেন অপর জনকে।’’ মোদীর কথায়, ‘‘পরস্পরের ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করলে সেখানেই তৈরি হয় স্বর্গ। আর দ্বন্দ্ব তৈরি হলে হয় নরক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy