Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
কংগ্রেস নিশানায় আদানির ‘দুর্নীতি’

৫০ হাজার কোটি টাকা ফাঁকি দিয়েছেন আদানি!

কংগ্রেসের যুক্তি, এটি কোনও মনগড়া দুর্নীতির অভিযোগ নয়। রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের নথিতেই এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ইডি-র তদন্ত ধামাচাপা দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।

ঘনিষ্ঠ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গৌতম আদানি। ফাইল চিত্র

ঘনিষ্ঠ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গৌতম আদানি। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৯
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সরব হল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, বিদ্যুৎ তৈরির জন্য বিদেশ থেকে এই শিল্পের যন্ত্রাংশ ও কয়লা আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু দাম দেখানো হয়েছে চার গুণ বেশি। ফলে বিদ্যুৎ মাসুলের বোঝা বেড়েছে সাধারণ মানুষের উপরে। আর লাভের টাকা চলে গিয়েছে কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্যে। কংগ্রেসের দাবি, গৌতম আদানির সংস্থা এই পথে ৫০ হাজার টাকার দুর্নীতি করেছে। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে এ নিয়ে সিবিআই তদন্ত করাতে হবে।

কংগ্রেসের যুক্তি, এটি কোনও মনগড়া দুর্নীতির অভিযোগ নয়। রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের নথিতেই এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ইডি-র তদন্ত ধামাচাপা দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কংগ্রেসের এই অভিযোগ নিয়ে আজ বিজেপি বা আদানি গোষ্ঠীর কেউ মুখ খুলতে চায়নি। কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, এক দিকে মোদী বিদেশ সফরে আদানিকে গিয়ে ঘুরছেন। অন্য দিকে, আদানির বিরুদ্ধে ইডি-র যে সব অফিসার প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই সিবিআইকে কাজে লাগানো হয়েছে।

কী এই দুর্নীতি?

রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের ৯৭ পৃষ্ঠার রিপোর্ট নিয়ে আজ সাংবাদিক বৈঠক করেন কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন। তাঁর অভিযোগ, এই রিপোর্ট বলছে আদানি গোষ্ঠী বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিবহণের যন্ত্রাংশ, কয়লা আমদানি করার খরচ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেখায়।

পণ্য আমদানি হয়েছে সরাসরি কোরিয়া বা অন্য দেশ থেকে। কিন্তু কাগজে-কলমে দেখানো হয়, দুবাইয়ের সংস্থা তা কিনে আদানি গোষ্ঠীকে বিক্রি করছে। সব মিলিয়ে কাঁচামালের খরচ গড়ে ৪০০ শতাংশ বেশি দেখানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: বিধ্বংসী আরও ৬ যুদ্ধ-চপার পাচ্ছে স্থলসেনা

সেই খরচের ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিদ্যুতের দাম ঠিক করে।

কংগ্রেসের অভিযোগ, লাভের টাকাও বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থার হাত ঘুরে কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্য মরিশাসে গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানির মালিকানাধীন একটি ট্রাস্টের সিন্দুকে জমা হয়েছে। এই বিনোদ আদানির নাম বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা সংক্রান্ত পানামা নথিতেও ছিল। কয়লা আমদানিতে ২৯ হাজার কোটি টাকা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কারখানার যন্ত্রাংশে ৯ হাজার কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ বিতরণে ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। ইউপিএ-সরকারের আমলে ২০১৩-র ফেব্রুয়ারিতে এর তদন্ত শুরু হয়। ২০১৪-র মে মাসে, ইউপিএ-সরকারের শেষ পর্বে রাজস্ব গোয়েন্দা দফতর সমস্ত তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে ৯৭ পৃষ্ঠার নথি পাঠিয়ে আদানি গোষ্ঠীকে শো-কজ করে। সেই নথিই এ বার একটি বিদেশি পত্রিকায় ফাঁস হয়ে গিয়েছে।

মাকেনের যুক্তি, এই গোটা দুর্নীতিতে ক্ষতি হয়েছে আমজনতার। মহারাষ্ট্রে বিদ্যুৎ তৈরি হলেও তা গ্রিডের মাধ্যমে সারা দেশে বিতরণ হয়েছে। বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন মিথ্যে খরচের হিসেবের ভিত্তিতে দাম ঠিক করায় সাধারণ মানুষকে বাড়তি মাসুল গুণতে হয়েছে। তাই অবিলম্বে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ২ টাকা কমানোর দাবি তুলেছেন মাকেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE