Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মিলনই কৌশল রাহুলের

বাস্তবে করেও দেখিয়েছেন তা। সভাপতি হিসেবে আজ দলের সমস্ত পদাধিকারী, সাংসদ, প্রদেশ শাখার সভাপতি, পরিষদীয় দলনেতাদের নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। মনমোহন সিংহ তো ছিলেনই।

রাহুল গাঁধী।

রাহুল গাঁধী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩২
Share: Save:

তারুণ্যের সঙ্গে প্রবীণদের অভিজ্ঞতা। কংগ্রেসের পুরনো শরিকদের পাশে রেখেই নতুন শরিকের সন্ধান। এ ভাবেই মেলাতে চান রাহুল গাঁধী। এই কৌশলেই দলের ভোল বদল করে দেখাতে চান তিনি। কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে আজ প্রথম সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আগামী দিনে কংগ্রেসে আরও বেশি সংখ্যায় আকর্ষণীয় মুখ দেখবেন মানুষ। কিন্তু তার মানে এই নয় যে প্রবীণ, অভিজ্ঞ লোকেদের জায়গা থাকবে না।’’

বাস্তবে করেও দেখিয়েছেন তা। সভাপতি হিসেবে আজ দলের সমস্ত পদাধিকারী, সাংসদ, প্রদেশ শাখার সভাপতি, পরিষদীয় দলনেতাদের নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। মনমোহন সিংহ তো ছিলেনই। কিন্তু গোটা অনুষ্ঠানকে অন্য মাত্রা দিয়ে নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সনিয়ার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে শাল উপহার দিয়েছেন তিনি।

বস্তুত, এই নৈশভোজ ছিল সনিয়ার ‘ফেয়ারওয়েল পার্টি’-ও। এই সূত্রেই বিরোধী দলগুলির নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে ঝালিয়ে নিতে। নৈশভোজের প্রধান টেবিলে প্রণব মুখোপাধ্যায়, হামিদ আনসারি, মনমোহন সিংহ, সনিয়া ও রাহুলের সঙ্গে বসেন তৃণমূলের প্রতিনিধি ডেরেক ও’ব্রায়েন ও টকটকে লাল চাদর গায়ে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি। ডিএমকে-র দূত ছাড়া আর কোনও বর্তমান শরিক সেই টেবিলে জায়গা পাননি। তৃণমূল নেতাদের ব্যাখ্যা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সম্মান জানাতেই তাঁর দূতকে প্রধান টেবিলে বসিয়েছেন রাহুল। আমন্ত্রিত ছিলেন প্রফুল্ল পটেল, অজিত সিংহ, মিসা ভারতী, রামগোপাল যাদব, অজিত সিংহর মতো বিরোধী শিবিরের অন্যান্য নেতাও। কংগ্রেসের প্রবীণ এক নেতা বললেন, ‘‘সব বিরোধী নেতার উপস্থিতি, সেই সঙ্গে প্রণবদা— নৈশভোজ অন্য রাজনৈতিক মাত্রা পেয়ে গিয়েছে।’’

আরও পড়ুন: গুজরাত মডেল: বাজনা আর বাস্তবে কিন্তু বিস্তর ফারাক

রাহুলও বুঝিয়ে দিয়েছেন, প্রণব, মনমোহন, এ কে অ্যান্টনির মতো নেতাদের কতটাই গুরুত্ব দিতে চান তিনি। তাঁর মতে, কংগ্রেসে প্রতিভা যথেষ্ট। কাজে লাগানো দরকার। রাহুলের প্রশ্ন, ‘‘ওঁদের সরকারে এমন কেউ কি রয়েছেন, যাঁর সঙ্গে প্রণবদা’র তুলনা চলে?’’ আবার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিশ্লেষণে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘‘মনমোহন সিংহর কথাটা ভাল লেগেছে। আশার রাজনীতি বনাম ঘৃণা বা ক্রোধের রাজনীতি।’’

মিলমিশ নৈশভোজের মেনুতেও। নিরামিষ খাবারের পাশাপাশি ছিল মাছ-মাংসের পদও। খাবারের টেবিলে রাজনীতির কথা তো হবেই। তার ফাঁকে মোদী জমানায় নিরামিষের আধিক্য নিয়েও রসিকতায় মেতেছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। সংসদের ক্যান্টিনে ধোঁকলার প্রবেশও উঠে এসেছে আলোচনায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE