ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের বিরুদ্ধে আন্দোলকারীদের পাশে একসঙ্গে দাঁড়িয়েছে ১৭টি বাম দল। কিন্তু বাম-শাসিত কেরলে উল্টো ছবি! আইওসি-র একটি এলপিজি টার্মিনালের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণী রাজ্যে নতুন সংঘাত বেধেছে সরকারের দুই শরিক সিপিএম এবং সিপিআইয়ের। প্রধান শাসক দল সিপিএমকে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে সিপিআই।
পিনারাই বিজয়নের সরকার ক্ষমতায় আসার পরের এক বছরে নানা বিষয়েই মতান্তর বেধে রয়েছে দুই কমিউনিস্ট পার্টির। এ বার কোচির কাছে পুতুভাইপিতে এলপিজি প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের উপরে পুলিশের লাঠিচালনাকে কেন্দ্র করে সিপিআই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজয়ন সরকারকে। সিপিআইয়ের মালয়ালম মুখপাত্রে লেখা হয়েছে, ‘গরিব মানুষের উপরে পুলিশি নিপীড়ন বাম সরকারের নীতি নয়। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুক এলডিএফ সরকার। পিনারাইয়ের দল যে নীতির কথা প্রচার করে, নিজেরা আগে পালন করে দেখাক’। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন অবশ্য অনড়। পুরনো বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ঢঙেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, উন্নয়নের স্বার্থে আপস করা হবে না। তাঁর যুক্তি, মাদ্রাজ আইআইটি থেকে ওই এলপিজি টার্মিনালের সুরক্ষা বন্দোবস্তের সমীক্ষা করানো হয়েছে। বাসিন্দাদের আতঙ্কের কোনও কারণ নেই।
ঘন বসতি এলাকায় কেন এলপিজি টার্মিনাল ও রিজার্ভার করা হবে, সেই প্রশ্নে মাসচারেক ধরে আন্দোলন চলছে পুতুভাইপিতে। গত সপ্তাহে ওই প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশ লাঠি চালানোর পর থেকেই বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। তাতে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে এর্নাকুলাম গ্রামীণ পুলিশের এসপি এ ভি জর্জের বক্তব্য। তিনি দাবি করেছেন, আন্দোলনের পিছনে বাম চরমপন্থী কিছু সংগঠনের উপস্থিতিই সমস্যা জটিল করেছে। ঠিক যে ভাবে ভাঙড়ের আন্দোলনে নকশালদের কাঠগড়ায় তুলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ! সিপিআইয়ের সঙ্গেই পুলিশি আচরণের নিন্দায় যথারীতি সরব হয়েছেন সিপিএমের প্রবীণ নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দনও। যে ডিএসপি-র নেতৃত্বে লাঠি চালানো হয়েছে, তাঁর কড়া সমালোচনা করে ভি এস প্রশ্ন তুলেছেন, ক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করার এই একটাই কি পথ ছিল?
ঘটনার পর দিন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন তিরুঅনন্তপুরমে তাঁর দফতরে আলোচনায় ডেকেছিলেন আন্দোলনকারী কমিটি এবং আওসি-র প্রতিনিধিদের। ছিলেন পুলিশ-কর্তারাও। আইওসি আপাতত এলপিজি টার্মিনালের কাজ বন্ধ রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কাজ সাময়িক বন্ধ থাকলেও ওই প্রকল্প বাতিল করা হবে না। রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থেই ওই ধরনের প্রকল্প রূপায়ণ দরকার।
শাসক এলডিএফের মধ্যে সমস্যার জেরে ইতিমধ্যেই এক বার হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে। এলপিজি প্রকল্প ঘিরে এ বারের সংঘাত কত দূর গড়ায়, তা নিয়েই এখন জল্পনা প্রবল বাম রাজনীতিতে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy