Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

এনআরসি: চুপিসারে প্রচার সিপিএমের

জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি কী, ত্রিপুরার অধিকাংশ মানুষ জানেন না। অসম ছাড়া কোথাও এর কাজ শুরু হয়নি।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

উত্তম সাহা
শিলচর শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৮
Share: Save:

অসমের এনআরসি নিয়ে ত্রিপুরায় নির্বাচনী প্রচার করেনি সিপিএম। তাই বলে একেবারে ছেড়েও দেয়নি। চুপিসারে প্রচার চলছে, অসমে বিজেপি ক্ষমতায় আসতেই বাঙালিরা রাষ্ট্রহীন হতে চলেছে। পটপরিবর্তন হলে ত্রিপুরার বাঙালিদেরও একই অবস্থা হবে।

জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি কী, ত্রিপুরার অধিকাংশ মানুষ জানেন না। অসম ছাড়া কোথাও এর কাজ শুরু হয়নি। তাই এনআরসি-কে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারে টেনে আনেনি সিপিএম। এ ছাড়া, বাঙালি আবেগ নিয়ে বেশি হইচই করলে উপজাতি ভোটে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনিতেই বিশেষ সুযোগ-সুবিধের আশ্বাস দিয়ে বিজেপি ত্রিপুরার উপজাতি দলগুলিকে কাছে টানছে। অন্য দিকে অনুপ্রবেশ নিয়ে উপজাতি গোষ্ঠীভুক্ত মানুষও কম সরব নন।

তাই সিপিএম বিষয়টিকে সরাসরি হাতে না নিয়ে ফিসফিসানির মাধ্যমে নীচুতলা পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছে। পত্র-পত্রিকা, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সাধারণ মানুষেরও বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ বাড়ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি এখানকার বাঙালিদের আরও নজর কাড়ে। ভোটের মাঠে সিপিএম একেই কাজে লাগাচ্ছে।

আগরতলার রেন্টার্স কলোনির তপন চক্রবর্তী বা তেলিয়ামুড়ার চন্দন সাহারা সিপিএমের নেতা নন, পঞ্চায়েত স্তরের কর্মী মাত্র। তাঁদের কাছে এনআরসি-র হিসেব একেবারে নখদর্পণে। অসমে কত বাঙালির নাম রয়েছে, কত জনের নেই, পাড়ার বাড়িঘরে সে সব কথাই ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। কোনও বাড়িতে গিয়ে অসমে আত্মীয়-পরিজন রয়েছে জানতে পারলে একেবারে সোনায় সোহাগা। আরও দু’-চারজনকে ডেকে নিজের মোবাইলে ফোন লাগিয়ে দিচ্ছেন। সবাইকে জানাচ্ছেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসার দেড় বছরের মধ্যে অসমের বাঙালিরা কতটা উদ্বেগে রয়েছেন!

বিজেপির ত্রিপুরা পর্যবেক্ষক সুনীল দেওধরের দাবি, এ সব করে এ বার আর মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা ছাড়া অন্য কোনও বিষয় কানেই তুলতে চাইছেন না তাঁরা। তাই অসমের এনআরসি ত্রিপুরার ভোটে প্রভাব ফেলবে না বলেই দাবি করেন তিনি।

অসমের মন্ত্রী তথা ত্রিপুরা নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতে, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে এনআরসি-র প্রথম খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের কারও নাম বাদ পড়বে না।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর অবশ্য প্রকাশ্যে প্রসঙ্গটি এড়িয়েই চলেন। তাঁর দাবি, এনআরসি অসমের বিষয়। ত্রিপুরার নির্বাচনী বিষয় নয়। তবে নাগরিকত্ব নিয়ে সিপিএমের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট। বিজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন আমরা মানি না। ত্রিপুরায় ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি প্রয়োগ হচ্ছে। অসমে অসম চুক্তি। বিজেপি সে সব ভুলে বিভেদের রাজনীতি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NRC CPM Assam Tripura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE