Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বদলাবে নেতৃত্ব, ভোট চেয়ে শোরগোল তোগাড়িয়ার 

পরিষদ সূত্রের খবর, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি রাঘব রেড্ডি এবং কার্যকরী সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়াকে সরিয়ে নতুন নেতৃত্ব তুলে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আরএসএস।

প্রবীণ তোগাড়িয়া

প্রবীণ তোগাড়িয়া

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৩
Share: Save:

প্রবীণ তোগাড়িয়া কাণ্ডে অভূতপূর্ব সাংগঠনিক সঙ্কটের সামনে পড়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তোগাড়িয়াকে সরানোর প্রক্রিয়ায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উপর আরএসএসের নিয়ন্ত্রণও এক প্রকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে খবর। সঙ্কট মেটাতে ফেব্রুয়ারিতেই দিল্লিতে বসছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কোর টিম। সেখানে উপস্থিত থাকবেন আরএসএসের শীর্ষ নেতৃত্বও। ওই বৈঠকেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি ও কার্যকরী সভাপতি পদে নতুন নেতৃত্ব তুলে আনা হতে পারে বলে সঙ্ঘ সূত্রের খবর।

কেন এমন পরিস্থিতি?

পরিষদ সূত্রের খবর, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি রাঘব রেড্ডি এবং কার্যকরী সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়াকে সরিয়ে নতুন নেতৃত্ব তুলে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আরএসএস। কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই তোগাড়িয়া সঙ্গে সঙ্ঘ নেতৃত্বের নানা বিষয়ে বিরোধ হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও তোগাড়িয়া সম্পর্ক ‘মধুর’ বলে শোনা যায় সঙ্ঘ মহলে। সেই কারণে নতুন নেতৃত্বের হাতে পরিষদের দায়িত্ব দেওয়ার কথা বিবেচনা করছিল আরএসএস। এক সঙ্ঘ নেতা যদিও বলেছেন, ‘‘কোনও একটি সংগঠনের নেতৃত্ব বদল স্বাভাবিক ঘটনা। বর্তমান নেতৃত্বের জন্যও আরও বড় দায়িত্বের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’

সেই নেতৃত্ব পরিবর্তনের জন্য গত ২৭ থেকে ২৯ ডিসেম্বর ভুবনেশ্বরে কার্যসমিতির বৈঠকে বিশ্বের সমস্ত শাখার প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল। ঠিক ছিল সেখান থেকে রাম মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনাও ঘোষণা করা হবে। বৈঠকে আগাগোড়া উপস্থিত ছিলেন আরএসএসের সাধারণ সম্পাদক সুরেশ ভাইয়াজি যোশী।

সূত্রের খবর, বৈঠকের শেষ দিনে পরিষদের সভাপতি পদে রাঘব রেড্ডির পরিবর্তে হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা প্রাক্তন বিচারপতি বিষ্ণু সদাশিব কোকজির-র নাম প্রস্তাব করা হয়। তার পরেই তোগাড়িয়াপন্থীরা নেতৃত্ব পরিবর্তনের জন্য বৈঠকে সাংগঠনিক নির্বাচনের দাবি জানান। নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যায়। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হতে থাকে। তোগাড়িয়াপন্থী প্রার্থী রাঘর রেড্ডিই সভাপতি পদে ভোটে জিতে যাওয়ার উপক্রম হয়। সে সময় আরএসএসের সাধারণ সম্পাদক হস্তক্ষেপ করেন। তিনি বৈঠকে জানিয়ে দেন, সঙ্ঘ পরিবার নির্বাচনের মাধ্যমে কোনও পদপ্রাপ্তির সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। সঙ্ঘের চিরাচরিত প্রথাবিরোধী এই ঘটনা। ফলে নেতৃত্ব পরিবর্তন আপাতত স্থগিত থাকুক। এর পর রামন্দির সংক্রান্ত কোনও পরিকল্পনা ঘোষণা না করেই শেষ হয় ভুবনেশ্বর বৈঠক। অমীমাংসিত থেকে যায় নেতৃত্ব বদলের বিষয়টিও।

পরিষদের সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী পরের সাংগঠনিক নির্বাচনের জন্য আরও এক বছর অপেক্ষা করার কথা। কিন্তু দিল্লিতে ফেব্রুয়ারিতেই পরিষদের কোর কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। ঘটনাচক্রে এর পরেই আমদাবাদে ‘নিঁখোঁজ’ হন তোগাড়িয়া। পরের দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে তোপ দাগেন সঙ্ঘ পরিবারের বিরুদ্ধেই।

এমন সঙ্কট শুধু পরিষদই নয়, সঙ্ঘ পরিবারের অন্য কোনও সংগঠনকে ঘিরে অতীতে কখনও হয়েছে বলে আরএসএস ঘনিষ্ঠরা মনে করতে পারছেন না। এ প্রসঙ্গে পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন বলেন, ‘‘সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। পরিষদের সভাপতি বা কার্যকরী সভাপতির বক্তব্য নিয়ে আমরা কখনও পাল্টা মন্তব্য করি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE