Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দলিত প্রেমে সাবান-জ্বালা! তবেই দেখা মিলবে যোগীর

সংবাদমাধ্যমের সামনে তাই সাবান-শ্যাম্পুর প্যাকেট নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ‘মুসহর’ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। কেন এমন নির্দেশ? মুখে কুলুপ জেলা প্রশাসনের।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০৪:২৫
Share: Save:

ফিটফাট না হয়ে এলে প্রবেশ নিষেধ! আগে সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করতে হবে। পরতে হবে কাচা জামা-কাপড়। তার পর বাড়ি থেকে বেরনোর আগে, গায়ে ঢেলে নিতে হবে সুগন্ধী। তবেই দেখা মিলবে যোগী আদিত্যনাথের। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে স্থানীয় ‘মুসহর’ সম্প্রদায়ের কাছে নাকি এমন ‘ফতোয়া’-ই জারি করেছিল কুশীনগর জেলা প্রশাসন। সাফ-সুতরো হতে যা-যা লাগে সবটাই বাড়ি বয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন সরকারি আধিকারিকেরা। কেউ-কেউ সেই নির্দেশ মেনে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে পৌঁছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু গায়ের জ্বালাটা যাবে কোথায়!

সংবাদমাধ্যমের সামনে তাই সাবান-শ্যাম্পুর প্যাকেট নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ‘মুসহর’ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। কেন এমন নির্দেশ? মুখে কুলুপ জেলা প্রশাসনের।


শ্রোতা: দলিত বস্তিতে ‘মন কি বাত’। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

সহারনপুরে দলিতদের উপর ঠাকুর সম্প্রদায়ের আক্রমণ নিয়ে মাথাব্যথা ছিলই। এ বার জুড়ল নয়া বিতর্ক। হইচই শুরু হতেই তেড়েফুঁড়ে মাঠে নেমেছে কংগ্রেস। মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি রবিবার দিল্লিতে বলেন, ‘‘অস্পৃশ্যতা ছড়াচ্ছে বিজেপি। এটাই যে বিজেপি ও সঙ্ঘের আসল চেহারা, তা ফের বুঝিয়ে দিলেন আদিত্যনাথ। উনি ‘যোগী’ নন, ভোগী। ক্ষমা চাইতেই হবে তাঁকে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নামে মামলা দায়েরের হুমকিও দিয়েছেন সিঙ্ঘভি।

আরও পড়ুন: বন্‌ধ উপেক্ষা করেই সেনা-পরীক্ষায় সাড়া কাশ্মীরে

এ নিয়ে বিজেপি মুখ না খুললেও, অমিত শাহকে আবার রবিবারই দেখা গিয়েছে দিল্লির এক দলিত বস্তিতে। ঘেমেনেয়েও পাক্কা ৩০ মিনিট তিনি কাটান আর কে পুরমের গুরু রবিদাস ধামে। রেডিও-তে তখন ‘মন কি বাত’ শোনাচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়েও কংগ্রেসের কটাক্ষ, ‘‘সবটাই নাটক। এখন আসলে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন সেনাপতি।’’

অমিতের দলিত পরিবারে যাতায়াত অবশ্য নতুন নয়। নকশালবাড়িতে গিয়ে এক দলিত দম্পতির বাড়িতে কলাপাতায় ভাত খেয়েছিলেন তিনি। যদিও তার দিন কয়েক পরেই সেই মাহালি পরিবার যোগ দিয়েছিল তৃণমূলে। সম্প্রতি একই রকম ‘লোক-দেখানো আদিখ্যেতা’-র অভিযোগ ওঠে কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে। এক দলিত পরিবারে গিয়ে ইডলি, বড়া খেয়েছিলেন তিনি। পরে জানা যায়, সেই খাবার এসেছিল হোটেল থেকে!

দিন কয়েক আগে শহিদ বিএসএফ জওয়ান প্রেম সাগরের বাড়ি গিয়েও বিতর্কে জড়ান যোগী। আগেভাগেই সেখানে পৌঁছে যায় নতুন সোফা, গালিচা, এমনকী এসি-ও। তবে মুখ্যমন্ত্রী ফিরে যাওয়ার পরেই সব ধাঁ!

কুশীনগরের দলিতরা অবশ্য সাবান-শ্যাম্পু সব যত্ন করেই সরিয়ে রেখেছেন। প্রমাণ হিসেবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE