শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। চিত্তরঞ্জন পার্কের এক মণ্ডপে। ছবি: প্রেম সিংহ
পঞ্চমীতেই ঝলমলে প্রবাসের পুজো।
অন্তত নয়ডার ৬১ নম্বর সেক্টরের বলাকা ক্লাবের পুজো চত্বরে দাঁড়ালে এ কথাই মনে হয়। গত কাল থেকেই দিল্লি উপকন্ঠের এই পুজো মণ্ডপে জেগে উঠেছে এক টুকরো প্যারিস! বাঁশ দিয়ে তৈরি হয়েছে সত্তর ফুট উঁচু আইফেল টাওয়ার। প্রায় তিন লক্ষ এলইডি বাল্ব দিয়ে সেই টাওয়ার সাজিয়েছেন চন্দননগর থেকে আসা আলোক-শিল্পীরা। বলাকা ক্লাবের সম্পাদক অনুজ চক্রবর্তী বললেন, “শক্তির আরাধনায় শক্তির অপচয় রুখতেই এলইডি আলো লাগানোর অভিনব উদ্যোগ।”
প্রত্যেক বারের মতই এ বারও দিল্লির পুজোর আকর্ষণ এর পাঁচ মেশালি চরিত্র। কোথাও উজ্জ্বল আইফেল টাওয়ার তো কোথাও সম্পূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশে, পাড়া এবং গোষ্ঠী চেতনাকে জাগিয়ে তোলার প্রয়াস। পূর্ব দিল্লির পাটপরগঞ্জের পূর্বাচলে যেমন, পঞ্চমী থেকে বিসর্জন পর্যন্ত, পুজোর সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় বাঙালিরা মণ্ডপ চত্বর ছেড়ে এক পা-ও বেরোতে রাজি নন। প্রতিদিন প্যান্ডেলেই ভোগ খাওয়া, নানা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া আর সে সঙ্গে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা। পূর্বাচলের বাড়তি আকর্ষণ হল পঞ্চমীর সন্ধ্যায় ‘আনন্দমেলা’। পাড়ার বিভিন্ন বাড়ি থেকে আনা রান্না দিয়ে পুরোদস্তুর মেলা বসে এ দিন।
তবে দিল্লি যখন, ইতিহাসের ছোঁয়া থাকবে না, এমনটা তো হয় না। তা সে সাম্প্রতিক ইতিহাস বা বা সুদূর অতীত। করোলবাগ পুজো সমিতি গড়ে উঠেছিল এমনই এক সন্ধিক্ষণে। ১৯৪২ সালে যখন আইন অমান্য এবং ব্রিটিশ বিরোধী ভারত ছাড়ো আন্দোলন তুঙ্গে, সেই সময় থেকে এখানে শক্তির আরাধনা হয়ে আসছে। তখন পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা বাঙ্গালিদের অন্যতম গন্তব্য ছিল করোলবাগ। দিল্লির পুরনো পুজোগুলির মধ্যে করোলবাগের স্থান তিন নম্বরে। মিন্টো পার্ক এবং কাশ্মীরি গেটের পরেই। শুধু পুজোই নয় গোটা বছর বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত রাখে এই পুজো কমিটি।
এই উৎসবের মধ্যেও যাঁরা কাশ্মীরের বন্যাপীড়িত মুখগুলিকে ভুলে যায়নি, সেই সব পুজো কমিটির মধ্যে অন্যতম নিউদিল্লি কালীবাড়ি। সম্পাদক স্বপন গাঙ্গুলি জানালেন, কাশ্মীরের মানুষদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে এ বার আর কোনও বড় অনুষ্ঠান করা হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy