Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত রাম রহিম, সাজা ঘোষণা সোমবার

ধর্মগুরুর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় আদালত চত্বর এবং পাঁচকুলার বিভিন্ন জায়গা। পুলিশের সঙ্গে ডেরা সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

গুরমিত রাম রহিম। এএফপির ফাইল চিত্র।

গুরমিত রাম রহিম। এএফপির ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ১৮:৪৪
Share: Save:

ধর্ষণ মামলায় শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত হলেন ডেরা সচ্চা সৌদা-র প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহ। এ দিন বিকেল পৌনে ৩টে নাগাদ হরিয়ানার পাঁচকুলার সিবিআই আদালত রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করে। সোমবার, ২৮ অগস্ট সাজা ঘোষণা করবে আদালত।

আরও পড়ুন: পঞ্জাব-হরিয়ানা জুড়ে তাণ্ডব ভক্তদের, আগুন-ভাঙচুর-গুলি, হত ১২

সাজা ঘোষণার পর পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় এ দিন সকাল থেকেই পাঁচকুলাকে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়। নামানো হয় সেনা। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পাঁচকুলায় হাজার হাজার সমর্থক এসে হাজির হয়েছিল। এ দিন সকাল হতেই ডেরা-র অনুগামীরা আদালতের বাইরে হাজির হন। ধর্মগুরুর সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন। আদালতে হাজিরা দিতে ১০০ গাড়ির কনভয় নিয়ে দুপুর ১টা নাগাদ আদালতে আসেন রাম রহিম। ধর্মগুরুকে দেখামাত্রই যেন অনুগামীদের মধ্যে উত্তেজনার বন্যা বয়ে যায়। আদালতে ঢোকার আগে অমুগামীদের শান্তি বজায় রাখার ইঙ্গিত দেন। ১০০ গাড়ির কনভয় নিয়ে এলেও নিরাপত্তার স্বার্থে দুটো গাড়ি নিয়েই আদালতে ঢোকার অনুমতি পান ডেরা প্রধান। ধীর-স্থির ভাবে আদালতে ঢুকে পড়েন তিনি। আদালতের বাইরে তখন ধর্মগুরুর নামে থেকে থেকে জয়ধ্বনি তুলছিলেন অনুগামীরা। অধীর আগ্রহে সমর্থকরা আদালতের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন রায় শোনার জন্য। দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা পর রায়ের খবর আসে। দোষী সাব্যস্ত হন ডেরা প্রধান। তাঁকে কড়া নিরাপত্তায় সেনা হেফাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: বর্ণময় এবং বিতর্কিত, কে এই রাম রহিম


গুরুগ্রামে পুলিশের টহল। ছবি: পিটিআই।

ধর্মগুরুর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় আদালত চত্বর এবং পাঁচকুলার বিভিন্ন জায়গা। পুলিশের সঙ্গে ডেরা সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। গাড়ি ভাঙচুর করে, বিভিন্ন সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। কিন্তু তাতেও কোনও ভাবে সামলানো যাচ্ছিল না রাম রহিমের সর্মথকদের। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। আহত শতাধিক সমর্থক। পাঁচকুলাতে কার্ফু জারি করা হয়। অন্য দিকে পঞ্জাবের ভাতিন্ডা, মানসা ও মুকতাসরেও কার্ফু জারি হয়েছে।

আরও পড়ুন: যৌন নির্যাতনে নাম জড়িয়েছে এই ধর্মগুরুদেরও

১৯৯৯-এ দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে রাম রহিমের বিরুদ্ধে। ২০০২-এ সিবিআই ডেরা প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। হরিয়ানার পাঁচকুলায় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সেই মামলার রায় ঘোষণার দিন স্থির হয়ে গিয়েছিল। হরিয়ানা ও পঞ্জাবে ডেরা প্রধানের অনুগামীর সংখ্যা প্রচুর। তাঁর ডাকে রাস্তায় নামেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। অনুগামীরা দলে দলে পাঁচকুলায় ভিড় করতে শুরু করেন। আদালতের রায় বাবা-র বিপক্ষে গেলে দুই রাজ্যেই আগুন জ্বলতে পারে এই আশঙ্কায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করা হয়। দুই রাজ্যের উত্তেজনাপ্রবণ জায়গাগুলোতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হরিয়ানা, পঞ্জাব ও চণ্ডীগড় প্রশাসনের যৌথ কমিটির সিদ্ধান্তে ওই তিনটি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৭২ ঘণ্টার জন্য মোবাইল ইন্টারনেট ও ডেটা পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দু’দিন চণ্ডীগড়গামী সব ট্রেন বাতিল করার জন্য রেল মন্ত্রককে অনুরোধ করা হয়। চণ্ডীগড় ও পাঁচকুলাগামী বাস পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ৫৩ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী এবং ৫০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয় হরিয়ানা এবং পঞ্জাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE