Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
CBSE

বোর্ডের পরীক্ষায় দশে ১০ পেয়ে বাজিমাত মেয়ের, গর্বিত গাড়িচালক বাবা

পেশায় স্কুলগাড়ি চালক অজয় চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা। শহরের ১১ নম্বর সেক্টরে মানব মঙ্গল স্কুলে তিনি ওই কাজ করেন। অনেক কষ্ট করে মেয়ে রাধিকাকে তিনি ওই স্কুলে ভর্তি করেছেন। টানাটানির সংসার হলেও মেয়ের পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখেননি কখনও।

বাবার স্বপ্ন পূরণ মেয়ে রাধিকার

বাবার স্বপ্ন পূরণ মেয়ে রাধিকার

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ১০:৪৪
Share: Save:

দশে দশ!

মেয়ের মার্কশিট দেখার পর প্রাথমিক হিসেবটা কষে তাই আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি অজয় কৌশল। আনন্দে আপ্লুত হয়ে জড়িয়ে ধরেছেন মেয়েকে। বড় কষ্টের বিনিময়ে যে ওই সাফল্য এসেছে!

পেশায় স্কুলগাড়ি চালক অজয় চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা। শহরের ১১ নম্বর সেক্টরে মানব মঙ্গল স্কুলে তিনি ওই কাজ করেন। অনেক কষ্ট করে মেয়ে রাধিকাকে তিনি ওই স্কুলে ভর্তি করেছেন। টানাটানির সংসার হলেও মেয়ের পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখেননি কখনও। আর তারই সুফল পেলেন এ বার। সিবিএসই (দশম শ্রেণি)-র পরীক্ষায় ভীষণ ভাল ফল করেছে মেয়ে। পাঁচটি বিষয়েই সে ভাল নম্বর পেয়েছে, যার পয়েন্ট ভিত্তিক গড় দাঁড়িয়েছে ১০। আর মেয়ের এই ‘দশে দশ’ পাওয়াই কৌশল পরিবারে আনন্দের জোয়ার এনেছে।

আরও পড়ুন- ইফতার পার্টির আয়োজন করছেন না যোগী?

কী এই পয়েন্ট ভিত্তিক গড়?

শিক্ষার পরিভাষায় একে গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ বা জিপিএ বলা হয়। সিবিএসই-র মতো বোর্ডের ক্ষেত্রে এই পয়েন্টের হিসেবটা (সিজিপিএ) একটু অন্য রকম। কোনও বিষয়ে শূন্য থেকে প্রতি ১০ নম্বরের জন্য এক জন পরীক্ষার্থীর ঝুলিতে ১ পয়েন্ট করে যোগ হয়। ধরা যাক, কেউ কোনও বিষয়ে ০ থেকে ১০-এর মধ্যে কোনও নম্বর পেয়েছে, তবে তার পয়েন্ট দাঁড়াবে ১। ১০ থেকে ১৯-এর মধ্যে পেলে পয়েন্ট ২। তেমন ভাবেই ৯০ থেকে ১০০-র মধ্যে পেলে পয়েন্টের হিসাবে সে পাবে ১০। এ ক্ষেত্রে ৯০ পেলেও ১০, আবার ১০০ পেলেও পয়েন্ট একই থাকবে। ধরা যাক, কোনও পড়ুয়া যদি প্রতিটি বিষয়ে ৯২ পেয়ে থাকে, তবে পয়েন্টের হিসাবে পাঁচটি বিষয়ে সে পাবে ৫০। এই ৫০-এর গড় করলে দেখা যাবে, তার সিজিপিএ ১০। আবার কোনও পড়ুয়া চারটি বিষয়ে ১০০ পেল, কিন্তু একটি বিষয়ে সে ৮৯ পেয়েছে, তবে তার সিজিপিএ দাঁড়াবে ৯.৮। এই পয়েন্ট ভিত্তিক গড়েই রাধিকা দশে দশ পেয়েছে। আর তাতেই বাবার বুক গর্বে ভরে উঠেছে। উচ্ছ্বসিত অজয়বাবু জানিয়েছেন, রাধিকা শুধু বাবা-মাকে নয়, গর্বিত করেছে তার গোটা স্কুলকেও।

এই স্কুল থেকে প্রথম হয়েছে রাধিকা। ছবি: সংগৃহীত।

গত শনিবার সিবিএসই (দশম শ্রেণি)-র ফল প্রকাশ হতেই দেখা যায়, চণ্ডীগড়ের ওই ছাত্রী ভীষণ ভাল ফল করেছে। স্কুলের মধ্যে সেই সেরা। মেয়ের এমন সাফল্যের পরে অজয়বাবু জানিয়েছেন, পড়াশোনায় বরাবরই মেধাবী রাধিকা। তার একরোখা মনোভাবই সাফল্যের দিকে তাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। তবে, আর্থিক অভাবের রেশ কোনওদিনই মেয়ের পড়াশোনার উপর পড়তে দেননি বাবা অজয়। রাধিকাও তার সাফল্যের গোটা কৃতিত্ব মা-বাবাকে দিয়েছে। জানিয়েছে, বাবা পাশে থেকে উৎসাহ না দিলে এই সাফল্য আসত না।

এর পরের পথটা কেমন?

গাড়ি করে স্কুলে পড়ুয়াদের পৌঁছে দেওয়ার সময় অজয় স্বপ্ন দেখতেন, তার মেয়ের নামও এক দিন এই স্কুলের কৃতী ছাত্রীদের তালিকায় থাকবে। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। স্কুল তো বটেই, শহরের সেরা ও কৃতী ছাত্রীদের নামের তালিকায় রাধিকার নাম ঢুকে পড়েছে। এখন দ্বাদশ শ্রেণির গণ্ডি পার করিয়ে মেয়েকে উচ্চশিক্ষা দেওয়ার স্বপ্নে বিভোর গর্বিত বাবা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE