Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সঙ্ঘের কোপে এ বার রবীন্দ্রনাথ

চিঠির বিষয়টি সামনে আসতেই দলমত নির্বিশেষে সরব হন সাংসদেরা। আজ এক প্রস্ত নোটিসের পরে কাল আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় নোটিস দেবে তৃণমূল। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের বক্তব্য দাবি করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪৪
Share: Save:

রবীন্দ্রভাবনা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে বলে মনে করে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস। তাদের মতে, জাতীয়তাবাদী মনোভাবের সঙ্গে খাপ খায় না রবীন্দ্রচেতনা। তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কিত অংশ ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছে ন্যাস। সংস্থার প্রধান দীননাথ বাত্রা সম্প্রতি এনসিইআরটিকে চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন, কেন রবীন্দ্রভাবনা বাদ যাওয়া উচিত পাঠ্যক্রম থেকে। রবীন্দ্রনাথ ছাড়াও দীননাথের কোপে পড়েছেন মির্জা গালিব, বামপন্থী পঞ্জাবি কবি পাশ, চিত্রকর এম এফ হুসেন থেকে কবি রামধারী সিংহ দিনকর। আর পড়ুয়ারা যাতে বিশুদ্ধ হিন্দি শেখে সে জন্য পাঠ্যপুস্তক থেকে সমস্ত উর্দু, ইংরেজি বা আরবি শব্দ বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন দীননাথ।

চিঠির বিষয়টি সামনে আসতেই দলমত নির্বিশেষে সরব হন সাংসদেরা। আজ এক প্রস্ত নোটিসের পরে কাল আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় নোটিস দেবে তৃণমূল। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের বক্তব্য দাবি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিপিএমের ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিএমের নেতা সীতারাম ইয়েচুরির কথায়, ‘‘সঙ্ঘ-বিজেপি জোট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তথা পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে অসম্মান করেছে। তাছাড়া এদের কোনও ধারণাই নেই যে উর্দু হলো একটি ভারতীয় ভাষা।’’ গোটা ঘটনায় বিরোধী দলগুলি শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ায় স্বভাবতই অস্বস্তিতে বিজেপি শিবির। এক ধাপ এগিয়ে তৃণমূল শিবির আশঙ্কা করছে যে, পরবর্তী ধাপে সঙ্ঘের কোপে পড়তে চলেছে রবীন্দ্রনাথ রচিত জাতীয় সঙ্গীতও। তাদের অভিযোগ, সঙ্ঘ পরিবার জাতীয় সঙ্গীত পাল্টে ফেলার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন:ন্যাপকিন না পরে প্রতিবাদ প্রেসিডেন্সিতে

রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে দীননাথের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, দশম শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্যক্রমে ‘প্লেসেস ন্যাশনালিজম এগেনস্ট আদার আইডিয়াল’ বলে প্রবন্ধ রয়েছে। সেখানে রবীন্দ্রচেতনার আদর্শ থাকায় জাতীয়তাবাদ ও মানবতাবাদের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে এম এফ হুসেনের আত্মজীবনীর অংশও। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইতে ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার কথা বলা হয়েছে। দীননাথের মতে, তা না পড়িয়ে পড়ুয়াদের বরং রাণা প্রতাপ, বিবেকানন্দ বা সুভাষচন্দ্র বসুর মতো মহাপুরুষের কথা পড়ানো উচিত। আবার ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বইতে লেখা রয়েছে ২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লেগে গিয়েছিল। পরিবর্তে আগুন লাগানো হয়েছিল কথাটি যোগ করা হোক।

শুরুতে দীননাথের চিঠির খবর জাল বলে দাবি করেছিল কেন্দ্র। পরে প্রকাশ জাভড়েকর জানিয়েছেন যে, তিনি বিষয়টি ভাল করে জেনে এসে সংসদে বিস্তারিত ভাবে জানাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE