Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দিসপুর অভিযানের হুমকি এসপিওদের

‘সিপাহি বিদ্রোহের’ ভয়ে উজানি-নামনি অসমে গত রাত থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখল প্রশাসন। রাস্তায় রাস্তায় মোতায়েন করা হল সশস্ত্র নিরাপত্তাবাহিনী! বর্ধিত বেতনের দাবিতে শ’দেড়েক স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসারের (এসপিও) গুয়াহাটি অভিযানের হুঁশিয়ারিতে এমনই সতর্কতা নিল অসম সরকার। আজ দুপুরে তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৫
Share: Save:

‘সিপাহি বিদ্রোহের’ ভয়ে উজানি-নামনি অসমে গত রাত থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখল প্রশাসন। রাস্তায় রাস্তায় মোতায়েন করা হল সশস্ত্র নিরাপত্তাবাহিনী!

বর্ধিত বেতনের দাবিতে শ’দেড়েক স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসারের (এসপিও) গুয়াহাটি অভিযানের হুঁশিয়ারিতে এমনই সতর্কতা নিল অসম সরকার। আজ দুপুরে তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তার পরে বিক্ষুব্ধ এসপিও-দের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়। কয়েকটি ট্রেনও চলতে শুরু করে।

বেতন নিয়ে এসপিও-দের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। ধর্না, বিক্ষোভ, মিছিলে কাজ হয়নি। তার জেরে আজ স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে ডিমা হাসাও থেকে গুয়াহাটি অভিযানের ডাক দেন ১৬০ জন এসপিও। রাজ্যের অন্য জায়গা থেকে তাঁদের অনেক সহকর্মী একই হুমকি দেন। এই পরিস্থিতিতে বিদ্রোহ দমনে উজানি-নামনি অসমের মধ্যে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধে পর্যন্ত বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন আটকে হাজার-হাজার যাত্রী বিপাকে পড়েন। বিদ্রোহী এসপিও-রা কোন পথে এগোচ্ছেন, তা জানতে নজরদারি বাড়ানো হয়।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যে এসপিও-র সংখ্যা প্রায় সাড়ে আটশো। ২০০৮ সালে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল। এসপিও-দের অভিযোগ, নিয়োগের সময় রাজ্য সরকার ৮ হাজার ২০০ টাকা বেতনের প্রতিশ্রুতি দিলেও, তাঁরা হাতে পাচ্ছিলেন মাত্র ৬ হাজার টাকা। বেতন দেওয়া হতো ৫-৬ মাসের ব্যবধানে। সব চেয়ে বেশি সমস্যায় ছিলেন ডিমা হাসাওয়ের এসপিওরা। তাঁদের অনেকে সংসার চালাতে পাথর ভাঙা, দিনমজুরের কাজও করেন। ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সরকারের কাছে দরবার করেও লাভ না হওয়ায়, এ দিন ডিমা হাসাওয়ের এসপিওরা রাইফেল নিয়ে দিসপুরের সচিবালয়ে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন।

খবর পেয়ে, গত রাত থেকেই দিসপুর সচিবালয় নিরাপত্তার মোড়কে ঘিরে ফেলা হয়। ডিমা হাসাও থেকে গুয়াহাটি আসার লাইনে সব স্টেশনে সিআরপি মোতায়েন করা হয়। কিন্তু, গত রাতে মাইবং স্টেশনে ‘বিদ্রোহী’ এসপিওরা একটি মালগাড়িতে উঠে লামডিং পৌঁছে যান। এই পরিস্থিতিতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সমস্ত ট্রেন চলাচল বাতিল করতে বলে

অসম প্রশাসন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সুগত লাহিড়ি বলেন, “সরকারের অনুরোধে দু’টি রাজধানী এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র মেল, ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস-সহ কয়েকটি ট্রেন ডিফু, বোকাজান, হারাংগাজাওয়ে আটকে দেওয়া হয়। সকালের ট্রেনগুলিও বাতিল করা হয়েছে।” রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আটকে থাকা ট্রেনের যাত্রীরা খাদ্য-পানীয়ের অভাবে বিক্ষোভ দেখান। অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন।

দুপুরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে গগৈ জানান, এসপিও-দের বেতন নিয়ে স্বরাষ্ট্র কমিশনারের আশ্বাসই বহাল থাকবে। তা ছাড়া, কোনও অভিযোগ থাকলে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE