Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হতাশা, ভাষা সমস্যা, আত্মঘাতী চিকিৎসক

এক মাস আগে রেডিওলজি বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর কৃষ্ণপ্রসাদ। বরাবরের ভাল ছাত্র কৃষ্ণ। ডাক্তারি পরীক্ষাতেও প্রথম হয়েছিলেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৫
Share: Save:

মানিয়ে নিতে পারছিলেন না হাসপাতালের পরিবেশের সঙ্গে। হতাশায় হস্টেলে ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলে আত্মহত্যা করলেন কৃষ্ণপ্রসাদ রামস্বামী নামে ২৪ বছরের এক জুনিয়র ডাক্তার। চণ্ডীগড়ের পোস্টগ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চে (পিজিআইএমআর)-এ সোমবার এ ঘটনা ঘটেছে। ১৭ মাস আগে এখানকার আর এক জুনিয়র ডাক্তার মানসিক হতাশায় আত্মহত্যা করেন।

এক মাস আগে রেডিওলজি বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর কৃষ্ণপ্রসাদ। বরাবরের ভাল ছাত্র কৃষ্ণ। ডাক্তারি পরীক্ষাতেও প্রথম হয়েছিলেন। আরও দু’টি প্রথম সারির হাসপাতালে সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও নিজেই বেছে নিয়েছিলেন চণ্ডীগড়ের এই হাসপাতালকে। সহপাঠীরা জানাচ্ছেন, প্রাথমিক ভাবে জেনারেল মেডিসিন বিভাগে ঢোকেন তিনি। ইমারজেন্সির চাপ সামলাতে না পেরে সম্প্রতি তৃতীয় কাউন্সেলিংয়ে রেডিওলজি বিভাগে বদলি হন তিনি। সেখানে আলট্রাসাউন্ড রুমের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে।

সোমবার সকালে দরজা ভেঙে কৃষ্ণর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন রক্ষীরা। হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান, অনেক ক্ষণ আগেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক। কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। কৃষ্ণর এক সহপাঠী জানিয়েছেন, বেশ কয়েক দিন ধরেই হতাশায় ভুগছিলেন কৃষ্ণ। বাড়ি ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। রবিবার রাতে বাড়িতে ফোন করে সে কথা জানানও। তবে তাঁর বাবা-মা তাঁকে সেখানেই থেকে যেতে বলেন। ভেবেছিলেন আস্তে আস্থে মানিয়ে নিতে পারবেন। ভাবেননি তার বদলে এমন কাজ করেব বসবে ছেলে। মঙ্গলবার কৃষ্ণর দেহ তামিলনাড়ুতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা বাবা। তিনি জানান, ভাষা নিয়েও সমস্যা হচ্ছিল কৃষ্ণর।

বারবার এই ধরনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ডাক্তারদের জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বরও রয়েছে। তবে জানা গিয়েছে, সেই নম্বরে যোগাযোগ করতে ভয় পাচ্ছেন বেশির ভাগ জুনিয়র ডাক্তাররাই। সেখানকারই এক আবাসিক চিকিৎসক জানালেন, যদি কোনও জুনিয়র ডাক্তার ওই হেল্পলাইনে ফোন করে নিজের সমস্যার কথা জানান, তা সরাসরি তোলা হয় ডিরেক্টরের কানে। আর সেই ডাক্তারের সঙ্গে কথা না বলেই তাঁকে অন্য কোনও ‘তুলনামূলক সহজ’ বিভাগে বদলি করা হয়।

ইতিমধ্যেই অন্য একটি হেল্পলাইন খুলেছেন আবাসিক ডাক্তারদের অ্যাসোসিয়েশন। গত বছর এমন অন্তত ৭টি ফোন পেয়েছেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘‘হাসপাতালের বহু ডাক্তারই মানসিক হতাশায় ভুগছেন। কেউ কেউ চরম পথ বেছে নিচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Junior doctor Depression suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE