বিধানসভা নির্বাচন এখনও বছর দু’য়েক দূরে। কিন্তু তার অনেকটা আগেই দু’ভাগ হয়ে যাওয়া দলকে একত্রিত করে নিতে চাইছেন পলানী ও পনীর। —ফাইল চিত্র।
আরও কাছাকাছি এল এআইএডিএমকে-র দুই গোষ্ঠী। তামিলনাড়ুর বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামী এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পনীরসেলভমের নেতৃত্বাধীন দুই শিবির যে খুব তাড়াতাড়িই একত্রিত হচ্ছে, তা আরও স্পষ্ট হয়ে গেল। মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি ছেড়ে দিয়েছেন পনীরসেলভম, খবর চেন্নাই সূত্রের। পলানীস্বামীই মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন, কিন্তু দলের শীর্ষপদ দিতে হবে পনীরসেলভমকে। একইসঙ্গে পনীর উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন এবং তাঁর বেশ কয়েকজন অনুগামী মন্ত্রিসভায় স্থান পাবেন। এই রকম শর্ত রাখা হয়েছে পনীর শিবিরের তরফ থেকে। শর্ত মেনে নিতে পলানী শিবির প্রকাশ্যে অন্তত কোনও আপত্তি এখনও করেনি।
এআইএডিএমকে-র দুই শিবির ফের হাত মিলিয়ে নিতে চলেছে, এ জল্পনা অনেক দিন ধরেই ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। বিবদমান দুই শিবিরকে একত্রিত করে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলকে আবার শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা যে চলছে, সে কথা আর কোনও পক্ষই গোপন করছে না। তবে চূড়ান্ত ঘোষণাপত্র এখনও জারি হয়নি। শেষ মুহূর্তের আলাপ-আলোচনা চলছে বলে এআইএডিএমকে সূত্রের খবর।
ই পলানীস্বামীর (ইপিএস) কাছে ও পনীরসেলভমের (ওপিএস) প্রস্তাব— ইপিএস-ই মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকুন। আর ওপিএস আপাতত দলের স্টিয়ারিং কমিটির প্রধান হিসেবে দল চালাবেন। তার পর দলীয় সম্মেলনে ওপিএস-কে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হোক। এক কথায়, ওপিএস থাকবেন দলের শীর্ষপদে, ইপিএস থাকবেন সরকারের শীর্ষপদে। এই ফর্মুলায় দলের দুই শিবিরের একত্রীকরণ হোক। চাইছেন পনীর। পলানী শিবিরেরও এই ফর্মুলায় কোনও আপত্তি নেই বলেই খবর।
তামিলনাড়ুর সরকার পলানীস্বামীদের দখলে। কিন্তু শনিবারও কোয়মবত্তূরে পনীরসেলভমের সভায় এই রকম বিপুল ভিড় দেখা গিয়েছে। পনীরদের সঙ্গে ঝগড়া মিটিয়ে না নিলে যে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে হালে পানি পাওয়া যাবে না, সে কথা পলানী শিবির ভালই বুঝছে। ছবি: পিটিআই।
তবে কয়েকটি বিষয় নিয়ে দুই শিবিরে মতভেদ এখনও রয়েছে। শশিকলা নটরাজনকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে পনীরসেলভম এখনও অনড়। ইপিএস সে বিষয়ে কোনও প্রতিশ্রুতি এখনও ওপিএস-কে দেননি বলেই জানা যাচ্ছে। শশিকলাকে বহিষ্কার করতে ইপিএস-এর নিজের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি চান, দলের শীর্ষ কমিটির সব পদাধিকারীর স্বাক্ষর থাকুক শশিকলাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তে। কিন্তু সব পদাধিকারীই শশিকলার বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেবেন, এমনটা এখনই বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: সীমা লঙ্ঘন না করতে শরদকে বার্তা নীতীশের
জেলে যাওয়ার আগে নিজের ভাইপো টি টি ভি দিনকরণকে দলের উপ-সাধারণ সম্পাদক পদে বসিয়ে গিয়েছিলেন শশিকলা। ওপিএস-এর শর্ত মেনে পলানীরা দিনকরণকে ওই পদ থেকে সরাতে রাজি হয়ে যান, দলীয় বৈঠকে সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়। কিন্তু দলের প্রভাবশালী নেতা তথা লোকসভার ডেপুটি স্পিকার এম থাম্বিদুরাই সে সিদ্ধান্তের শরিক হননি। দলের আইনজীবী সংগঠনের প্রধান এ নবনীতকৃষ্ণন এবং মহিলা শাখার প্রধান ভিজিলা সত্যানন্দও স্বাক্ষর করেননি। তাই শশিকলার বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে তাঁরা স্বাক্ষর করবেন, এমনটাও দূরাশা বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আরও পড়ুন: পাঁচতারা হোটেল, অবৈধ সুযোগ-সুবিধা কেন? মন্ত্রীদের ধমক মোদীর
ওপিএস শনিবার অবশ্য বলেছেন, ‘‘আণরা কয়েক দিনের মধ্যেই সুসংবাদটা ঘোষণা করব।’’ সেই সুরেই মুখ্যমন্ত্রী ইপিএস-ও জানিয়েছেন, কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে সে সব মিটিয়ে খুব তাড়াতাড়িই দুই গোষ্ঠী আবার মিলে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy