Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রাহুল রুখতে চায়ের খোঁচাই অস্ত্র মোদীদের

আর রবিবার গুজরাতের ৫০ হাজার বুথ এলাকায় চায়ে চুমুক দিয়ে রেডিওতে মোদীর ‘মন কি বাত’ শুনবেন বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা।

মোদী ও রাহুল।

মোদী ও রাহুল।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৮
Share: Save:

চায়ের ভাঁড়ে ভোটের তুফান।

মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে লড়াই নরেন্দ্র মোদী-রাহুল গাঁধীর।

যুব কংগ্রেস যেই না তাঁকে ‘চা-ওয়ালা’ বলে কটাক্ষ করেছে, মুহূর্তে লুফে নিয়েছেন মোদী। সব মন্ত্রী-নেতাকে নামিয়ে দিয়েছেন আসরে। গুজরাতের পথে তো বটেই, আজ দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরেও চা বিক্রি করতে পৌঁছে যান বিজেপি কর্মীরা। সোমবার গুজরাতে প্রচার শুরু করছেন মোদী। সোম ও বুধবার রোজ চারটি করে আপাতত নিজের রাজ্যে মোট আটটি সভা করবেন তিনি। আর রবিবার গুজরাতের ৫০ হাজার বুথ এলাকায় চায়ে চুমুক দিয়ে রেডিওতে মোদীর ‘মন কি বাত’ শুনবেন বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা।

মোদীর এই অস্ত্র ভোঁতা করতে কালই গুজরাতে যাচ্ছেন রাহুল। দলের ৪০ জন তারকা প্রচারককে নামিয়েছেন তিনি। ঘরে ঘরে যাচ্ছেন তাঁরা। মোদীর গড়ে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা ঘুরছেন চায়ের দোকানে। সেখানেই উস্কে দিচ্ছেন নোটবন্দি, জিএসটির অসন্তোষ। এ ভাবেই ‘আসল’ চা-ওয়ালাদের ক্ষোভ ক্যামেরাবন্দি হচ্ছে বলে জানিয়েছে কংগ্রেস। সেই ছবি প্রচার করা হচ্ছে জনসভায়, সোশ্যাল মিডিয়ায়।

গত লোকসভা ভোটের আগে নিজেকে ‘চা-ওয়ালা’ হিসেবে মেলে ধরেই বাজিমাত করেছিলেন মোদী। বিশেষ করে কংগ্রেসের মণিশঙ্কর আইয়ারের ‘চা-ওয়ালা’ কটাক্ষের পরে দেশজুড়ে করেছিলেন ‘চায় পে চর্চা’। প্রশ্ন হল, এ বার ফের সেই পুরনো অস্ত্রেই কেন নিজের রাজ্যে শান দিতে হচ্ছে মোদীকে?

বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, দশ বছর আগে গুজরাতে ভোটের সময়ে সনিয়া গাঁধীর ‘মওত কা সওদাগর’ মন্তব্য লুফে নিয়ে মেরুকরণের পুরোদস্তুর ফায়দা তুলেছিলেন মোদী। আর এ বার সভাপতি পদে রাহুলের অভিষেকের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়েছে সদ্য। এমন সময়ে কংগ্রেসের তরফে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ‘চা-ওয়ালা’ বিদ্রূপ উড়ে এসেছে। কংগ্রেস ক্ষমা চেয়ে নিলেও ‘চা-ওয়ালা’ প্রচারে বিজেপিরই ফায়দা। তাতে দেখানো যায়, কংগ্রেসে একটি পরিবারের বাইরে আর কারও সভাপতি হওয়ার সুযোগ নেই। সেই অভিজাত মানসিকতা থেকেই অবজ্ঞা করা হচ্ছে ‘গরিব’ ঘর থেকে চা বেচে উঠে এসে প্রধানমন্ত্রী হওয়া নরেন্দ্র মোদীকে।

বিজেপির এই কৌশল বুঝেই রাহুলের নির্দেশে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। কিন্তু দলের বক্তব্য, যে ভাবে যুব কংগ্রেসের এক বেফাঁস মন্তব্যকে বিজেপি শিবির উচ্চগ্রামে নিয়ে গেল, তাতে স্পষ্ট— ভয় ঢুকেছে তাদের মজ্জায়। তা না হলে এই ‘অকিঞ্চিৎকর’ ইস্যুকে এত বড় মাত্রা দেওয়ার কোনও কারণ ছিল না। বিজেপির হাজারো নেতা দেশের কোনও না কোনও প্রান্তে এমন বেফাঁস কথা বলেই থাকেন। বিজেপির হাতে ইস্যু নেই বলেই কংগ্রেসের কোনও কোনা থেকে একটা আলটপকা মন্তব্যের জন্য ওত পেতে বসেছিল তারা!

কংগ্রেসের মতে, জিগ্নেশ মেবাণী, অল্পেশ ঠাকুর এবং সব শেষে হার্দিক পটেল কংগ্রেসের সঙ্গে আসায় সব সমীকরণ গুলিয়ে গিয়েছে বিজেপির। এখন তাই সংসদে ওবিসি কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার বিলটি ফের আনার কথা বলছে শাসক দল। কিন্তু এ সব করেও বিজেপির অঙ্ক মিলবে না বলেই দাবি কংগ্রেসের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE