Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

খরচ কমাতে নয়া নির্দেশিকা জারি করল অর্থ মন্ত্রক

লক্ষ্য, পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয় দশ শতাংশ কমিয়ে ফেলা। আর তাই এই খাতে সরকারি খরচ কাটছাঁট করতে রীতিমতো কোমর বেঁধে নেমে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বিষয়ে আজই একটি নির্দেশিকা জারি করেছে অর্থ মন্ত্রক। পাঁচতারা হোটেলে সেমিনার থেকে শুরু করে সরকারি অফিসারদের বিদেশ ভ্রমণ, খরচ কমাতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩০
Share: Save:

লক্ষ্য, পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয় দশ শতাংশ কমিয়ে ফেলা। আর তাই এই খাতে সরকারি খরচ কাটছাঁট করতে রীতিমতো কোমর বেঁধে নেমে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বিষয়ে আজই একটি নির্দেশিকা জারি করেছে অর্থ মন্ত্রক। পাঁচতারা হোটেলে সেমিনার থেকে শুরু করে সরকারি অফিসারদের বিদেশ ভ্রমণ, খরচ কমাতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অনুমতি ছাড়া এ বার থেকে কোনও মন্ত্রী বা আমলা সরকারি খরচে বিদেশ সফরে যেতে পারবেন না। তা ছাড়া, সরকারি সেমিনারে পাঁচতারা হোটেল ব্যবহার করা নিয়েও আপত্তি রয়েছে কেন্দ্রের। খুব প্রয়োজন ছাড়া সেমিনারের আয়োজন করার উপরও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

সরকারি অফিসারদের বিমানের ‘বিজনেস ক্লাসে’ যাতায়াতও এখন থেকে পুরোপুরি বন্ধ। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “সরকারি অফিসাররা তাঁদের পদ অনুযায়ী বিমানের বিভিন্ন শ্রেণিতে যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু এখন থেকে কেউই আর সরকারি খরচে কোনও বিমানের বিজনেস ক্লাসের টিকিট পাবেন না।” সেই সঙ্গেই বলা হয়েছে, দেশে বা বিদেশে সফরের ক্ষেত্রে কোনও মন্ত্রী বা আমলার সঙ্গী কাউকে বিনামূল্যে এর পর থেকে টিকিটও দেওয়া হবে না। যত বেশি সম্ভব ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবহারের উপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

খরচ কমাতে মোদী সরকার এখন নতুন সরকারি পদ তৈরির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এক বছর ধরে যে পদ খালি রয়েছে, খুব প্রয়োজন ছাড়া সেই পদে বসানো হবে না কাউকে।

এত সব নির্দেশিকার আড়ালে সরকারের মূল লক্ষ্য একটাই। ২০১৬-১৭ সালে আর্থিক ঘাটতিকে মোট জাতীয় উৎপাদনের তিন শতাংশে নিয়ে আসা। ২০১১-১২ সালে সেটা সর্বোচ্চ ৫.৭ শতাংশ ছুঁয়েছিল। চলতি আর্থিক বছরে তা কমিয়ে সাড়ে চার শতাংশে আনা হয়। আগামী দু’বছরের মধ্যে আরও দেড় শতাংশ আর্থিক ঘাটতি কমানো সরকারের পক্ষে যে সহজ হবে না, তার ইঙ্গিত এ বছর বাজেট পেশের সময়ে অর্থমন্ত্রীই দিয়ে রেখেছেন। অরুণ জেটলি তখন বলেছিলেন, “আমার সামনে এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ।”

তবে খরচ কমানোয় কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ নতুন নয়। এর আগে ইউপিএ সরকারও খরচ কমানোর একাধিক উপায় বাতলেছিল। তাতে ছিল বিজনেস ক্লাসের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞাও। আর তা নিয়ে জলঘোলাও হয়েছিল বিস্তর। সালটা ২০০৯। সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরে তৎকালীন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শশী তারুর টুইট করেন, এর পর থেকে তাঁকেও ‘ক্যাটল ক্লাস’-এ যাতায়াত করতে হবে। দলের অন্দরেই শশীর নিন্দায় সরব হন বহু নেতা-নেত্রী। তারুর যতই শব্দটিকে উপমা হিসেবে ব্যবহার করুন না কেন, বহু ভারতীয় যেখানে সাধারণ শ্রেণিতে যাতায়াত করেন, সেখানে এক জন মন্ত্রী কী করে এই ধরনের কথা বলেন, সেই প্রশ্ন উঠেছিল। শুধু তৃতীয় শ্রেণিকে ‘ক্যাটল ক্লাস’ বলেই ক্ষান্ত থাকেননি তারুর। বাকি রাজনীতিকদের পরোক্ষে ‘গরু ছাগল’ও বলেছিলেন তিনি। এমন এক দিনে তারুর সেই মন্তব্য করেন, যে দিন ‘ইকনমি ক্লাসে’ তিনি দিল্লি থেকে মুম্বই যান। ফলে তারুরের ওই মন্তব্য নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তখন চূড়ান্ত অস্বস্তিতে পড়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE