মৃত পাঁচের একটি। রবিবার রামগাঁওয়ে। নিজস্ব চিত্র
বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েও এড়ানো গেল না ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু। গত কাল রাত ১টা নাগাদ শোণিতপুর জেলার বালিপাড়ায় আপ নাহারলাগুন এক্সপ্রেসের সামনে এসে পড়ে হাতির পাল। খাবারের খোঁজে চা বাগান ও তার লাগোয়া এলাকায় ঘুরছিল তারা। ইঞ্জিনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে হাতিরা। একটি হাতি ইঞ্জিনের সঙ্গে আটকে অনেকটা চলে যায়। ট্রেন থামলে দেখা যায়, ৫টি হাতি মারা গিয়েছে। একটির পেটে বাচ্চাও ছিল।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটকে থাকার পরে সকাল সাড়ে ৬টায় ট্রেনটি ফের রওনা দেয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ এলাকায় বন্ধ হয়। বনমন্ত্রী মুর্দাবাদ স্লোগান দিয়ে রামগাঁওয়ের বাসিন্দারা পথ অবরোধ করেন। মৃত হাতিদের সমাধিস্থ করতেও বাধা দেওয়া হয়।
বনমন্ত্রী প্রমীলারানি ব্রহ্ম বলেন, “ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। এই সময়ে খাবারের সন্ধানে হাতির পাল বেরিয়ে পড়ে। বারবার বলার পরেও ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ না করায় এই ঘটনা। হাতি বাঁচাতে মানুষের সাহায্যও লাগবে। হাতি করিডর ও তাদের খাবারের জায়গা মানুষ দখল করে নেওয়ার ফলেই এমন ঘটনা বাড়ছে।”
রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৯৯০ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ট্রেনের ধাক্কায় ৩৫টি হাতি মারা গিয়েছিল। কিন্তু বনধ্বংস ও বসতি বিস্তারের জেরে ২০০৬-২০১৬ সালের মধ্যে অসমে ট্রেনের ধাক্কায় ২২৫টি হাতি মারা গিয়েছে। চলতি বছর মারা গিয়েছে অন্তত ১২টি হাতি। চালকদের বারবার সতর্ক করা হয়েছে। নথিভুক্ত হাতি করিডরে ট্রেনের গতি ২৫ কিলোমিটারের বেশি থাকে না। হাতি চলাচলের খবর পেয়ে গ্রামরক্ষী বাহিনীর সাহায্য, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করার মতো বিভিন্ন পদক্ষেপও করা হয়েছে। কিন্তু হাতিদের চেনা পথের বাইরে, আচমকা জঙ্গল থেকে হাতির পাল বেরিয়ে এলে বা শীতের রাতে কুয়াশার মধ্যে হঠাৎ ট্রেনের সামনে হাতির দল এলে আচমকা ব্রেক কষা যায় না। তাতে অনেক যাত্রীর প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে। বালিপাড়ায় একেবারে চা বাগানের গায়েই ঘটনাটি ঘটেছে। সেখানে তারকাঁটার বেড়াও ছিল। এই ঘটনা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে নুমালিগড়ে লেটেকুজান চা বাগানে বিচরণ করা হাতির পালকে কাছ থেকে দেখতে গিয়ে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন মুকুট গগৈ নামে এক ব্যক্তি। নগাঁও জেলার কঠিয়াতলিতেও একটি বুনো হাতির দেহ উদ্ধার হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy