Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মানুষের ভুলেই ভূস্বর্গে তাণ্ডব, দাবি বিজ্ঞানীদের

বন্যার তাণ্ডব ভুলে ফের চেনা ছন্দে ফিরতে চাইছে কাশ্মীর। কিন্তু ভূস্বর্গের এই পরিস্থিতির জন্য মানুষ অনেকটাই দায়ী বলে দাবি করেছেন প্রকৃতিবিজ্ঞানীরা। শ্রীনগরের ডাল গেটের এক বাসিন্দা নানাজি আজ ফোনে বলেন, “আমি এখন ডাল গেটের বাজারে দাঁড়িয়ে আছি। আগে এখানে প্রায় ৬ ফুট জল ছিল। কিন্তু এখন বেশ ভাল ভাবেই হেঁটে বেড়াতে পারছি।”

বন্যা বিধ্বস্ত শ্রীনগর। ছবি: রয়টার্স।

বন্যা বিধ্বস্ত শ্রীনগর। ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২০
Share: Save:

বন্যার তাণ্ডব ভুলে ফের চেনা ছন্দে ফিরতে চাইছে কাশ্মীর। কিন্তু ভূস্বর্গের এই পরিস্থিতির জন্য মানুষ অনেকটাই দায়ী বলে দাবি করেছেন প্রকৃতিবিজ্ঞানীরা।

শ্রীনগরের ডাল গেটের এক বাসিন্দা নানাজি আজ ফোনে বলেন, “আমি এখন ডাল গেটের বাজারে দাঁড়িয়ে আছি। আগে এখানে প্রায় ৬ ফুট জল ছিল। কিন্তু এখন বেশ ভাল ভাবেই হেঁটে বেড়াতে পারছি।” ওই এলাকায় খাওয়া দাওয়া, রেশন ব্যবস্থাও এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে বুলেভার্ড রোডের পরিস্থিতি সামলাতে এখনও খানিকটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন নানাজি। নৌসেনার কম্যান্ডোরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন। সঙ্গে স্থানীয় যুবকরাও।

তবে শ্রীনগরের জওহর নগর এলাকা থেকে আজ দুই শিশু-সহ আরও ১৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে কাশ্মীরে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেল। উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছে, দেহগুলি বিকৃত অবস্থায় পাওয়ায় সেগুলি শনাক্ত করা যায়নি। তাঁদের অনুমান, দেহগুলি স্থানীয়দের নয়। জম্মুর আর এক বাসিন্দা নীরজ বলেছেন, “গলিগুলিতে এখনও কোথাও কোথাও প্রায় ৮-৯ ফুট জল। সেখান থেকে মৃতদেহ বের করাই কঠিন।” এই সব মৃতদেহ থেকে অসুখ ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন নীরজ। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, তা মহামারীর আকারও নিতে পারে।

কাশ্মীর বন্যায় ঘুচে গিয়েছে ধনী দরিদ্রের ব্যবধান। তাই দু’টি গাড়ির মালিক এখন স্কুলের মাঠে ত্রাণ শিবিরে সকলের সঙ্গে আলু পেঁয়াজের জন্য বসে আছেন। অন্য দিকে দু’টি শিশু-সহ এক পরিবার নিজেদের বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে বন্ধুর বাড়িতে। সেখানে বাথরুম ব্যবহারের ভয়ে তাঁরা তিন দিন না খেয়ে কাটিয়েছেন।

‘বম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটি’-র বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত জলাভূমি নষ্ট হওয়ার জন্যই এই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে কাশ্মীরে। গত ৩০ বছরে কাশ্মীর উপত্যকায় প্রায় ৫০ শতাংশ জলাভূমি অবৈধ ভাবে দখল করা হয়েছে। ডাল লেকের ধার বরাবর গজিয়ে উঠেছে অবৈধ নির্মাণ। তার ফলে অর্ধেকেরও বেশি ছোট হয়ে গিয়েছে ডাল লেক। একই অবস্থা উলার লেকেরও। এক সময়ে ২০,২০০ হেক্টরে ছড়িয়ে থাকা এই লেকটি বর্তমানে প্রায় ২,৪০০ হেক্টরে এসে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, কাশ্মীরের এই হ্রদ ও সংলগ্ন জলাভূমিগুলি অতিরিক্ত জল শুষে নেওয়ার ক্ষেত্রে স্পঞ্জের মতো কাজ করে। তাই সেগুলির আয়তন কমায় বন্যার বিপদ বেড়েছে।

মানুষের অপরিণামদর্শিতার মূল্য দিয়েছে ভূস্বর্গ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE