বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব।
লালুপ্রসাদের সংসারে গরাদের কালো ছায়া। এক দিকে, পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির দেওঘর ট্রেজারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন আরজেডি প্রধান। অন্য দিকে, সে দিনই আর্থিক তছরুপের মামলায় লালুপ্রসাদ যাদবের মেয়ে মিসা ভারতী এবং তাঁর স্বামী শৈলেশ কুমারের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)।
শনিবার দেওঘর ট্রেজারি মামলায় লালুকে দোষী ঘোষণা করেন রাঁচীর বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক শিবপাল সিংহ। ফলে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত আরও একটি তছরুপের মামলায় ফের জেলে যেতে হচ্ছে লালুপ্রসাদ যাদবকে।
এ দিন রায় ঘোষণার পরই রাঁচীর বিরষা মুন্ডা জেলে নিয়ে যাওয়া হয় আরজেডি প্রধানকে। আগামী ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানেই রাখা হবে তাঁকে। কারণ, ওই দিনই এই মামলায় দোষীদের সাজা ঘোষণা করা হবে। আরজেডি প্রধান ইতিমধ্যেই পশুখাদ্য সংক্রান্ত বাঁকা-ভাগলপুর ট্রেজারি তছরুপের মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত। এখন জামিনে রয়েছেন।
কী রায় দিল আদালত, দেখুন আপডেট
• দোষী সাব্যস্ত লালুপ্রসাদ যাদব • রাঁচীর জেলে নিয়ে যাওয়া হল লালুকে • ১৯৯০ থেকে এখন পর্যন্ত লালুর যা যা সম্পত্তি, সে সবই বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে • রায় ঘোষণার পর টুইট করেন লালু, বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত সত্যই জিতবে’। • লালু-সহ দোষী সাব্যস্ত মোট ১৭ জন • ৩ জানুয়ারি সাজা ঘোষণা • জগন্নাথ মিশ্র-সহ ৬ জনকে রেহাই দিল আদালত • বিকেল ৩.৩৫মিনিট: রায় দান প্রক্রিয়া শুরু করেন বিচারক শিবপাল সিংহ • পৌনে তিনটে নাগাদ সিবিআই আদালতে পৌঁছন লালু প্রসাদ যাদব। সঙ্গে ছিলেন কনিষ্ঠ পুত্র তেজস্বী যাদব।
দেওঘর ট্রেজারির মামলার মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ছিল ৩৪। তার মধ্যে ১১ জন মারা গিয়েছেন। এ দিন আদালত বাকি ২৩ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করে। এর মধ্যে লালু-সহ ১৭ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। অন্য দিকে, অবিভক্ত বিহারের আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মিশ্র-সহ ৬ জনকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত।
দোষী সাব্যস্ত ঘোষণার পাশাপাশি, আদালত ১৯৯০ থেকে এখনও পর্যন্ত লালুর যা যা সম্পত্তি, সে সবই বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। যদিও এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে আরেজেডির তরফে। সূত্রের খবর, ৩ জানুয়ারি সাজা ঘোষণার পরই উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
আরও পড়ুন: আজই লালুর কন্যার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল ইডি
দেখুন ভিডিও টাইমলাইন
পশুখাদ্য কেনার ভুয়ো বিল দেখিয়ে চাইবাসা, দেওঘরের মতো বিভিন্ন সরকারি ট্রেজারি থেকে টাকা লোপাটের দায়ে একাধিক মামলা রয়েছে লালু-সহ তাঁর আমলের বেশ কিছু মন্ত্রী-আমলার বিরুদ্ধে। তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল একাধিক জেলা থেকে। নয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে যা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশের রাজনীতিকে। কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে সিবিআই মোট ৬৪টি এফআইআর দায়ের করেছিল। এর মধ্যে ৫৩টি-ই ঝাড়খণ্ডে। বাকিগুলি পটনায়।
২০১৩ সালে বাঁকা-ভাগলপুর ট্রেজারির মামলায় লালু দণ্ডিত হওয়ার পরে তাঁর বিরুদ্ধে ঝুলে থাকা অন্য মামলাগুলি রদ করে দেয় রাঁচী হাইকোর্ট। তখন হাইকোর্টের বক্তব্য ছিল, একটি মামলায় দণ্ডিতের বিরুদ্ধে একই নথিপত্র ও একই রকম সাক্ষীসাবুদের ভিত্তিতে একই ধরনের অন্য মামলাগুলি চালানোর কোনও প্রয়োজন নেই।
রাঁচীর বিশেষ সিবিআই আদালতের পথে কনিষ্ঠ পুত্র তেজস্বীকে নিয়ে লালু। শনিবার। পিটিআই।
আরও পড়ুন: বাবার পর জেলে কে? খোঁচা বিজেপির, লালুর ভরসা ‘সত্যে’
২০১৪ সালের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় সিবিআই। চলতি বছরের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়কে খারিজ করে প্রতিটি মামলার আলাদা আলাদা শুনানি চালানোর নির্দেশ দেয়। তার পরই গত কয়েক মাস ধরে লাগাতার শুনানি চলছে। এ দিন তারই রায় ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: আদর্শ মামলায় বড় জয় চহ্বাণের, স্বস্তিতে কংগ্রেস
রায় ঘোষণার পরই স্বাভাবিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে বিজেপি-জেডিইউয়ের দিকে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে আরজেডি। দলের নেতা তথা লালুর দীর্ঘদিনের সহযোগী রঘুবংশ প্রসাদ যাদব অভিযোগ করেছেন, এটা বিজেপির চক্রান্ত। পাশাপাশি, জেডিইউ-এর সাধারণ সম্পাদক কেসি ত্যাগির দাবি, ‘‘এই রায়ের পিছনে বিজেপি বা জেডিইউয়ের কোনও ভূমিকা নেই। আইন আইনের পথে চলেছে।’’
আর যাঁকে নিয়ে এত খবর, সেই লালুপ্রসাদের আশা, ‘সত্যের জয় হবেই।’ পাশাপাশি দলীয় কর্মী সমর্থকদের শান্ত থাকার অনুরোধও জানিয়েছেন ‘বিহার কা মসিহা’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy