Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নেপাল ফের কাছাকাছি, আশায় দিল্লি

প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন বাড়ছে। সেই কূটনৈতিক ব্যর্থতার মধ্যেও ভারতের কাছে আপাতত সান্ত্বনা পুরস্কার— নেপাল!

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:১০
Share: Save:

প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন বাড়ছে। সেই কূটনৈতিক ব্যর্থতার মধ্যেও ভারতের কাছে আপাতত সান্ত্বনা পুরস্কার— নেপাল!

সে দেশের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারির সদ্যসমাপ্ত ভারত সফরের পরে ঘরোয়া ভাবে এমনটাই দাবি করছে সাউথ ব্লক। সূত্রের খবর, মদেশীয়দের নেপালের মূল স্রোতে আনার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি আদায় করা গিয়েছে। বিনিময়ে ভারত সে দেশের সামরিক ক্ষেত্রে আরও বড় মাপের সহায়তার হাত বাড়াতে চলেছে।

সূত্রের খবর, বিদেশ প্রতিমন্ত্রী তথা প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল ভি কে সিংহ কথাপ্রসঙ্গে বিদ্যাদেবীকে জানিয়েছেন, নেপালের সেনার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির জন্য সব রকম পদক্ষেপ করতে ভারত রাজি। কূটনৈতিক মহলের বক্তব্য, এই বার্তায় কাজ হলে ভারতের লাভ দু’ভাবে। এক, চিনের থাবা থেকে নেপালকে নিজের দিকে ফের টেনে আনা যাবে। দুই, নেপালের কাছ থেকে ভারতীয় বংশোদ্ভুতদের জন্য সুবিধা আদায় করা যাবে।

২০০৫ সালে নেপালের রাজা জ্ঞানেন্দ্র রাজকীয় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নিজের হাতে ক্ষমতা তুলে নেওয়ার পরে নেপালকে সামরিক অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ভারত। ২০১৩-র অক্টোবর থেকে অস্ত্র সরবরাহ ফের শুরু হয় ঠিকই, কিন্তু তা নেপালের চাহিদার তুলনায় বেশ কম। সম্প্রতি নেপালের সংবিধান ঘিরে মদেশীয়দের বিক্ষোভের জেরে ভারত থেকে পেট্রোলিয়াম-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস রফতানিও বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আরও কমে সামরিক সরবরাহ।

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হওয়া এই ফাঁকা পরিসরের সুযোগ নিয়েছে চিন। সম্প্রতি সন্ত্রাসবাদ দমনের নাম করে এই প্রথম চিন-নেপাল পুরোদস্তুর সামরিক মহড়াও হয়েছে। আর দেরি করলে নেপাল যে পুরোপুরি চিনের হাতে তামাক খেতে শুরু করবে, সেই টনক অবশেষে নড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের নেতৃত্বে নেপালের সেনার সঙ্গে বৃহত্তর যোগাযোগ শুরু হচ্ছে। সামরিক পরিকাঠামো তৈরি, অস্ত্র সরবরাহ এবং প্রশিক্ষণের প্রশ্নে সব রকম ভাবে নেপালের সেনার পাশে থাকতে চাইছে দিল্লি। প্রতিদানে ভারত এই প্রতিশ্রুতি আদায় করেছে যে, সংবিধান সংশোধন করে ভারতীয় বংশোদ্ভুত মদেশীয়, থারু সম্প্রদায়ের আশা আকাঙ্খাকে মর্যাদা দিতে হবে নেপাল সরকারকে।

আরও পড়ুন: অটলের পথে ফিরুন, মোদীকে বার্তা মুফতির

নেপাল যে ভারতের কথা মেনে নিয়েছে, তা গত কালই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সে দেশের সরকার গত কাল মদেশীয়দের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। যার মাধ্যমে সংসদে জরুরি ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনী বিল আনা হবে। যার জেরে আগামী মাসে স্থানীয় পঞ্চায়েত ভোটে অংশ নিতে পারবেন মদেশীয়রা।

গোটা বিষয়টিতে আশাবাদী ভারতীয় কর্তারা। বক্তব্য, এক দিনে যে মদেশীয়দের সব দাবি (তরাইয়ে দু’টি স্বয়ংশাসিত জেলা গঠন, তরাইয়ে ৮৩টি সংসদীয় আসন, প্রশাসনিক, নিরাপত্তা, কূটনৈতিক এবং বিচারবিভাগীয় ক্ষেত্রে জনসংখ্যার ভিত্তিতে মদেশীয় এবং থারু সম্প্রদায়ের জন্য কাজের সংরক্ষণ ইত্যাদি) মিটবে, এমন নয়। কিন্তু নেপালের সরকার যে ভারতের অনুরোধে সাড়া দিয়ে প্রাথমিক পদক্ষেপটুকু করেছে, সেটাও ইতিবাচক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nepal India Harmony Diplomatic failure
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE