Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

জিই-কে বিনিয়োগ নিয়ে বার্তা গয়ালের

সেই নীতি মেনেই সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সম্প্রতি জানান, পরিবেশ দূষণ কমাতে ২০২২ সালের পরে ডিজেল ইঞ্জিনের ব্যবহার করা হবে না। এতে ডিজেল খরচ কমবে। তাই আগামী বছর থেকে আরও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে বৈদ্যুতিকরণের উপরে। ওই খাতে বাড়ানো হবে আর্থিক বরাদ্দও।

রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৫৫
Share: Save:

ঘন ঘন নীতি পরিবর্তনের ফলে প্রধানমন্ত্রীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিল এ দেশে ডিজেল ইঞ্জিন নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলির অন্যতম জেনারেল ইলেকট্রনিক্স (জিই)। আর্থিক মন্দার মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগের লগ্নি নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হওয়ায় আজ তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতে বাধ্য হলেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। জানালেন, ওই সংস্থাকে যে বরাত দেওয়া হয়েছে, তাতে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না।

বিহারের মাড়হাওড়ায় ডিজেল ইঞ্জিন কারখানার দায়িত্ব ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে মার্কিন সংস্থা জিই-র হাতে তুলে দেয় রেল। গত দু’বছরে কারখানা বানিয়েও ফেলেছে জিই। আমেরিকায় তাদের সদর দফতর থেকে প্রথম প্রটোটাইপ ডিজেল ইঞ্জিনটি ইতিমধ্যেই রওনা দিয়েছে বিহারের উদ্দেশে। প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে আগামী দশ বছরে মোট এক হাজারটি ইঞ্জিন বানানো হবে ওই কারখানায়। রেল জানিয়েছে, প্রতি বছর একশোটি করে ইঞ্জিন ট্র্যাকে নামবে। বর্তমানে দেশের মোট ইঞ্জিনের প্রায় ত্রিশ শতাংশ ডিজেল ইঞ্জিন। ফলে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ডিজেল কিনতে প্রতি বছর প্রায় ১৬-২০ হাজার কোটি টাকা কোষাগার থেকে গলে যায় রেলের। এই খরচ কমাতে বহু দিন ধরেই তৎপর রয়েছে রেল।

সেই নীতি মেনেই সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সম্প্রতি জানান, পরিবেশ দূষণ কমাতে ২০২২ সালের পরে ডিজেল ইঞ্জিনের ব্যবহার করা হবে না। এতে ডিজেল খরচ কমবে। তাই আগামী বছর থেকে আরও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে বৈদ্যুতিকরণের উপরে। ওই খাতে বাড়ানো হবে আর্থিক বরাদ্দও।

রেলমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরেই মুখ খোলে আমেরিকান সংস্থাটি। বিহারের মাড়হাওড়ায় ডিজেল লোকোমটিভ বানানোর বরাত পাওয়া ওই মার্কিন সংস্থা রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে জানায়, তারা ডিজেল লোকোমোটিভ বানানোর বরাত পেয়েছে। আর এখন সরকার অন্য সুরে কথা বলছে। এ ভাবে ঘন ঘন নীতি পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের কাছে মস্ত বড় সমস্যার বিষয়। বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে। রেলের এই নীতি পরিবর্তনের ফলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের ব্যাপক ক্ষতি হবে। বিনিয়োগ করতে ভয় পাবেন অন্যরা।

ইঞ্জিন নির্মাণ ও মেরামতির কাজের জন্য ইতিমধ্যেই ওই কারখানায় সরাসরি চাকরি পেয়েছেন এক হাজার লোক। এ ছাড়া যন্ত্রাংশ সরবরাহ করার জন্য একাধিক সংস্থার মাধ্যমে চাকরি হয়েছে আরও চার হাজার লোকের। বিবৃতিতে জিই জানায়, রেল মন্ত্রক নীতি পরিবর্তন করলে এই পাঁচ হাজার লোকের রুজি-রোজগার প্রশ্নচিহ্নের মুখে এসে পড়েছে। একে ভারতীয় অর্থনীতিতে মন্দার দশা চলছে। তার মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থার ওই প্রবল সমালোচনার মুখে আজ গয়াল বলেন, ‘‘আমার বক্তব্যকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ওই কারখানার কাজ পরিকল্পনামাফিকই এগোচ্ছে। এ নিয়ে আশঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE