Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

গণধর্ষণে ফের নির্ভয়ার ছায়া

জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা কুরুক্ষেত্র জেলার একটি গ্রামের দর্জির মেয়ে। সে দশম শ্রেণির ছাত্রী। ৯ জানুয়ারি, টিউশন ক্লাসের পর থেকেই সে নিখোঁজ ছিল। মৃতা কিশোরীর বাবা এমন নিরাপত্তাহীনতার জন্য প্রশাসনের অকর্মণ্যতাকে দায়ী করেছেন।

সংবাদ সংস্থা
চণ্ডীগড় শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৯
Share: Save:

হরিয়ানায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দু’টি আলাদা গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ফিরিয়ে আনল নির্ভয়া কাণ্ডের ভয়ঙ্কর স্মৃতি। দু’টি ক্ষেত্রেই নির্যাতিতা দলিত সম্প্রদায়ের নাবালিকা।

এদের মধ্যে বড় মেয়েটির বয়স ১৫। শনিবার সন্ধেবেলা হরিয়ানার ঝিন্দ জেলার খালের পাশে তার অর্ধনগ্ন মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, নির্ভয়ার মতোই নারকীয় অত্যাচারের পর মরেছে সে। গণধর্ষণের পর কোনও ভোঁতা জিনিস ঢুকিয়ে ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে তার যৌনাঙ্গ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেহের ভেতরের অন্য অঙ্গও।

রোহতক পিজিআইএমএস-এর ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান এস কে দত্তারওয়াল বলেছেন, ‘‘মৃতার দেহ ১৯টি ক্ষতে ভর্তি। বিশেষ করে মুখে, মাথায়, বুকে হাতে। তিন-চার জন মিলে নির্যাতন চালিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ফুসফুসটাও ফেটে গিয়েছে। মনে হয়, কেউ বুকের ওপর চেপে বসেছিল। অত্যাচারের পর তাকে জলে ফেলে দেয়। সাংঘাতিক বর্বরতার চিহ্ন বইছে এই মৃতদেহ।’’

জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা কুরুক্ষেত্র জেলার একটি গ্রামের দর্জির মেয়ে। সে দশম শ্রেণির ছাত্রী। ৯ জানুয়ারি, টিউশন ক্লাসের পর থেকেই সে নিখোঁজ ছিল। ঝানসা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে গিয়ে তাঁর বাবা জানিয়েছিলেন, স্থানীয় এক তরুণ মেয়েকে অপহরণ করেছে বলে তাঁর সন্দেহ। ওই তরুণের সঙ্গেই মেয়েটিকে শেষ দেখা গিয়েছিল। কুরুক্ষেত্রের পুলিশ সুপার অভিষেক গর্গ জানিয়েছেন, বছর কুড়ির ওই তরুণ ফেরার। তার সঙ্গে ঘটনার যোগ আছে কিনা স্পষ্ট নয়। তদন্তে নেমেছে ডেপুটি সুপারের অধীনে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল ও আরও চারটি স্কোয়াড।

জানা গিয়েছে, ঘটনায় উত্তপ্ত কুরুক্ষেত্র। মৃতা কিশোরীর বাবা এমন নিরাপত্তাহীনতার জন্য প্রশাসনের অকর্মণ্যতাকে দায়ী করেছেন। হতদরিদ্র পরিবারটি মেয়েটির দেহ নিতে চাইছিল না। তাদের দাবি, ঘটনার তদন্ত করুক সিবিআই। নির্ভয়া তহবিল থেকে পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ও পরিবারের এক সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া হোক। সঙ্গে চাই দু’টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স। শেষে হরিয়ানার মন্ত্রী কে কে বেদী ক্ষতিপূরণ ও দ্রুত তদন্তের আশ্বাস দিলে নির্যাতিতার সৎকার করতে রাজি হয় তারা।

শনিবার সন্ধেয় যখন এই ক্ষতবিক্ষত দেহটি মেলে, তখনই ওই রাজ্যেরই পানিপথ জেলার এক গ্রামে একটি ছোট মেয়ে আবর্জনা ফেলতে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিল। তার বয়স ১১। অভিযোগ, তখন দুই প্রতিবেশী তাকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। রবিবার সকালে গ্রামের খেতে তার দেহ মেলে। পানিপথের পুলিশ সুপার রাহুল শর্মা জানিয়েছেন, অত্যাচারের পরে গলা টিপে মেয়েটিকে খুন করা হয়। প্রমাণ লোপাট করতে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তার জামা। সন্দেহভাজনদের রবিবারই গ্রেফতার করা হয়েছে।

আবার রবিবার রাতেই পঞ্জাবের বঠিণ্ডায় ৪৫ বছরের এক ব্যক্তি ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। সোমবার স্থানীয় পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অভিযুক্তের নাম মন্দার সিংহ। সে পালিয়েছে। গত মাসেই হরিয়ানার হিসারে একটি ছ’বছরের মেয়ের রক্তে ভাসা দেহ মিলেছিল। ঘুমন্ত অবস্থাতেই মার কাছ থেকে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করে দুষ্কৃতীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gangraped rape Murder Haryana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE