Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

দোষীদের রেয়াত করা হবে না, গোরক্ষপুরে গিয়ে হুঁশিয়ারি আদিত্যনাথের

বিআরডি হাসপাতালে শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে গোটা উত্তরপ্রদেশ তো বটেই, সারা দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় বয়ে চলেছে। গত পাঁচ দিনে বিআরডি হাসপাতালে ৬৩টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কী ভাবে এত শিশুর মৃত্যু হল এ নিয়ে চাপানউতোর চলছিল।

শিশুমৃত্যু নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে যোগী আদিত্যনাথ। ছবি আদিত্যনাথের টুইটার পেজ থেকে নেওয়া।

শিশুমৃত্যু নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে যোগী আদিত্যনাথ। ছবি আদিত্যনাথের টুইটার পেজ থেকে নেওয়া।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৭ ১৫:০৭
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বাবা রাঘব দাস মেডিক্যাল কলেজ (বিআরডি) হাসপাতালে শিশুমৃত্যু নিয়ে ক্ষোভ ও চাপানউতোরের মধ্যে রবিবার হাসপাতাল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নাড্ডা। হাসপাতালের চিকিত্সকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। এর পর সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে আদিত্যনাথ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে। বেশ কিছু নথি খতিয়ে দেখেছি। কেন এমন ঘটল তা নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।” পাশাপাশি কমিটির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সকলকে ধৈর্য ধরার আর্জি জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, দিল্লি থেকে এক দল বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক এসেছেন হাসপাতালের চিকিত্সকদের সাহায্য করতে। এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যু কী ভাবে ঠেকানো যায়, সে বিষয়েও সমস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারিও দেন, এ ঘটনায় যাঁরা দোষী তাঁদের কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না।

আরও পড়ুন: হিমাচলে ধসের মুখে খাদে পড়ল জোড়া বাস, বহু মৃত্যুর আশঙ্কা

বিআরডি হাসপাতালে শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে গোটা উত্তরপ্রদেশ তো বটেই, সারা দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় বয়ে চলেছে। গত পাঁচ দিনে বিআরডি হাসপাতালে ৬৩টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কী ভাবে এত শিশুর মৃত্যু হল এ নিয়ে চাপানউতোর চলছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল সব শিশুরই নাকি রোগজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই দাবিকে মেনে নিতে পারেননি শিশুদের আত্মীয়রা। বিরোধী দলগুলোও হাসপাতালের সেই দাবিকে নস্যাত্ করে। ক্ষোভ-বিক্ষোভ, আলোচনা-সমালোচনার মধ্য থেকেই উঠে আসে এক ভয়ঙ্কর তথ্য। রোগজনিত নয়, হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার না থাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন: জম্মু-কাশ্মীরের সোপিয়ানে খতম তিন জঙ্গি, হত ২ জওয়ান

যদিও শনিবারে সাংবাদিক বৈঠকে আদিত্যনাথ পর্যাপ্ত অক্সিজেন না থাকার বিষয়টি খারিজ করেন। প্রবল চাপের মুখে পড়ে মিশ্রকে সাসপেন্ড করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। বলেন, ‘‘যা-ই ঘটে থাকুক না কেন, চিকিৎসার গাফিলতি তো রয়েইছে। দোষীদের কড়া শাস্তি হবে।’’

বৃহস্পতিবার রাত থেকে হাসপাতালের অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সে আক্ষেপ ছিল কর্মীদেরই। অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহকারী বেসরকারি সংস্থাটির দাবি, ৬৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার সিলিন্ডার কিনে মাত্র ৩৫ হাজার টাকা মিটিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বকেয়া না মেটালে যে অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হবে না, সেই হুঁশিয়ারি তারা আগেই দিয়েছিল। ১ অগস্টও তারা চিঠি দিয়ে শেষ বারের মতো বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়েছিল হাসপাতালকে।

আরও পড়ুন: অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব যোগীর শিবিরে

অক্সিজেন সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল অফিসারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, মজুত অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রায় শেষ। রোগীদের বাঁচাতে হলে কিছু একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। এক সপ্তাহ আগেও চিঠি দিয়ে অক্সিজেনের অভাবের কথা জানানো হয় ওই কর্তাকে। কিন্তু জবাব না মেলায় ফের অনুরোধ করা হয় ওই দিন। লাভ অবশ্য হয়নি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ট্রমা সেন্টার, এনসেফ্যালাইটিস ওয়ার্ড ও সদ্যোজাতদের আইসিইউ— সর্বত্র অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

যদিও সরকারের তরফে দাবি করা হয়, ৫ অগস্টেই অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তারা ১১ অগস্ট পর্যন্ত কোনও টাকাই সিলিন্ডার সরবরাহকারী সংস্থাকে দেয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE