Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে কমিশনের কাছে বিজেপি-কংগ্রেস

প্রবীণ লালকৃষ্ণ আডবাণীকে রাহুলই হাত ধরে সনিয়ার পাশে নিয়ে যান। সনিয়ার সঙ্গেও আডবাণী-রাজনাথরা কথা বললেন। বললেন না শুধু মোদী!

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৪৮
Share: Save:

দ্বিতীয় তথা শেষ দফার ভোট আজ, বৃহস্পতিবার। তার আগের রাতে লড়াইটা ঘুরে গেল নির্বাচন কমিশনে!

ওই দিন টিভি সাক্ষাৎকারে রাহুল গাঁধী দাবি করেন, গুজরাতে হই-হই করে জিতবে কংগ্রেস। গত কাল সন্ধেয় প্রচারের সময় শেষ হওয়ার পরে রাহুলের এই মন্তব্য নির্বাচনী বিধিভঙ্গ বলে দাবি করে বিজেপি দ্বারস্থ হয় নির্বাচন কমিশনের। তাদের নালিশের ভিত্তিতে কমিশন নির্বাচনী বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেয়। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা আছে মনে করে চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা চায় রাহুলেরও। যার জবাব দিতে হবে ভোট গণনার দিনে, সোমবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে।

এর পাল্টা কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা রাতেই কমিশনে গিয়ে দাবি জানান, দু’দফার ভোটেই প্রচারের সময় শেষ হওয়ার পরে নানা মঞ্চে গুজরাত নিয়ে বলে আচরণবিধি ভেঙেছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, অরুণ জেটলি, পীযূষ গয়ালরা। তাঁদের বিরুদ্ধেও এফআইআর করার নির্দেশ দিক কমিশন। এই সূত্রে তাঁরা ফিকির সভায় মোদীর এ দিনের বক্তৃতার কথা উল্লেখ করেন। নালিশ জানিয়ে বেরিয়ে কংগ্রেসের নেতারা কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

রাহুলের সাক্ষাৎকার দেখানো বন্ধ করতে বিজেপি আজ যে ভাবে কোমর বেঁধে নেমেছিল, তা দেখে কংগ্রেসের দাবি, ভয় পেয়েছে বিজেপি। রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা অভিযোগ করেন, সাক্ষাৎকার বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর দফতর আর মুখ্যমন্ত্রী নিজে হুমকি দিচ্ছেন। তার আগে টিভি সাক্ষাৎকারে ঠিক এই বার্তাটি দেন কংগ্রেসের হবু সভাপতিও। বলেন, ‘‘সাংবাদিকদের ফোনে হুমকি দিচ্ছে বিজেপি।’’ তবে তার সঙ্গে বলেন রাজনৈতিক সৌজন্যের পরিবেশ ফেরানোর কথা।

আরও পড়ুন:

রোজ ফোন আর ডেরা বদল, হার্দিক যেন মাওবাদী নেতা

‘আমাদের জন্য নয়, ভোটের কারণেই ওরা তালাক-বিরোধী’

এ দিন তার সুযোগও এসেছিল। দীর্ঘ প্রচার যুদ্ধের পরে আজ সকালেই কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদ হামলার বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে। রীতি মেনে হাত জোড় করে নমস্কার জানান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সামনে পড়ে যাওয়ায় মোদী সেই জোড়-হাত ছুঁয়ে নমো-নমো করমর্দন করেন বটে, কিন্তু এর পরে সারি দিয়ে দাঁড়ানো সনিয়া গাঁধী, রাহুল ও কংগ্রেসের অন্য নেতাদের রীতিমতো উপেক্ষা করেই কঠোর মুখ নিয়ে চলে যান। জেটলি, রাজনাথ সিংহ, সুষমা স্বরাজ, রবিশঙ্কর প্রসাদরা অবশ্য দলের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানান রাহুলকে। প্রবীণ লালকৃষ্ণ আডবাণীকে রাহুলই হাত ধরে সনিয়ার পাশে নিয়ে যান। সনিয়ার সঙ্গেও আডবাণী-রাজনাথরা কথা বললেন। বললেন না শুধু মোদী!

এর পরেই বিভিন্ন গুজরাতি চ্যানেলে রাহুল দাবি করেন, একতরফা হবে ফল। সকলে চমকে যাবেন। প্রধানমন্ত্রী এ জন্য ঘাবড়ে গিয়েছেন। যে বিশ্বাসযোগ্যতা তিনি পেয়েছিলেন, নিজেই খুইয়েছেন। রাহুলের মতে, ঘৃণা করে তাঁকেই সাহায্য করছেন মোদী। যতই ঘৃণা করুন, এর জবাবে ভালবাসার রাজনীতিই তাঁর মন্ত্র। কংগ্রেস মনে করছে, রাহুল রেখেঢেকে বলছেন। গুজরাতে জিতছে কংগ্রেসই।

রাহুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নয়া অভিযোগ আনতে বিজেপি আজ আসরে নামায় পীযূষ গয়ালকে। শেষ লগ্নে বিজেপি যত আক্রমণাত্মক হয়েছে, রাহুল তত বিঁধেছেন মোদীকে। মৃদু কণ্ঠে ও হাসিমুখে। জানিয়েছেন, অন্য কারও মনের কথা নয়, এই ভোটে গুজরাতবাসী তাঁদেরই মনের কথা জানাবেন। ভোট দিতে মোদী মুম্বই থেকে কাল যাবেন গুজরাতে। কালও তিনি যেন ভোট-বিধি ভাঙার মতো কিছু না বলেন, কমিশনকে তা নিশ্চিত করতে বলেছে কংগ্রেস। রাহুল কাল থাকছেন কেরল ও তামিলনাড়ুতে। সাইক্লোন বিধ্বস্ত এলাকায়।

গুজরাত নির্বাচন নিয়ে সব খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE