রাত পোহালেই প্রথম দফার ভোট।
দ্বিতীয় দফার প্রচারে গিয়ে আজও কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তুলেছেন রাম-কথা। কপিল সিব্বলকে বিঁধে বলেছেন, তিনি শুধু বলুন, রামমন্দিরের পক্ষে না বাবরি মসজিদের। মোদীর দলের প্রার্থী শৈলেশ সোট্টা ঘুরে ঘুরে বলছেন, ‘টুপি-দাড়িওয়ালা’দের জনসংখ্যা কমানোর কথা। আর বিজেপির প্রচার সেরে স্বামীনারায়ণের পুরোহিতের উপর হামলা প্রসঙ্গে রাহুল গাঁধীকে বিঁধছে বিজেপি। প্রশ্ন তুলেছে, ‘পৈতেধারী হিন্দু’ মন্দিরে মন্দিরে ঘুরছেন, কিন্তু পুরোহিতের হামলা নিয়ে চুপ! আজও অবশ্য গুজরাতের একটি মন্দিরে গিয়েছিলেন রাহুল। আসরে নেমেছেন যোগী আদিত্যনাথও। সভায় সভায় তুলছেন ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি।
উন্নয়ন চুলোয় যাক। অযোধ্যা থেকে বনবাসে না, আপাতত গুজরাতের ‘ভোট-বাসে’ রাম। কিন্তু ভোটের মাটিতে কতটা দাগ কাটছেন সীতাপতি? “অযোধ্যা মে রাম, যুবায়ো কা কাম, কিষানো কা দাম— এই তো ছিল গোড়ার দিকের স্লোগান। এখন তো দেখছি, পরের দু’টো নিয়ে কোনও কথাই নেই। শুধু প্রথমটাই রয়েছে,” বলছেন বছর কুড়ির সঞ্জয় পটেল। পাতিদার, কিন্তু ভোট দেবেন বিজেপিকেই। হার্দিক পটেল শত চেষ্টা করলেও আজ পাতিদারদের আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান খোডলধাম ট্রাস্ট জানিয়েছে, তাদের সমর্থন বিজেপিতেই। কিন্তু মেরুকরণে আপত্তি সঞ্জয়ের। আপত্তি রামকে ভোটে নামানোয়। বলছেন, “মোদীজি দিল্লির তখ্তে। গুজরাতের প্রাণের লোক। ভোট ওঁর নামেই। কিন্তু আমরা তো এত বছর তাজিয়া-রথযাত্রা পাশাপাশি বার করছি। সেই পরিবেশ নষ্ট করার কী দরকার!”
দরকারটা যে কী, তা নিয়ে নানা মত। সমাজবিজ্ঞানী অচ্যুত যাজ্ঞিক যেমন বলছেন, “এর আগে পারভেজ মুশারফকে নিশানা করে হিন্দুত্ববাদকে জাগিয়েছেন মোদী। কিন্তু এখন রামমন্দিরকে সামনে আনায় স্পষ্ট, মোদী-অমিত শিবিরে ত্রাস কতটা।”
ত্রাসের কারণ বিবিধ। দু’-দশক ধরে শাসনের পরে জাতপাতভিত্তিক ক্ষোভ, বেকার সমস্যা, কৃষক দুরবস্থা, জিএসটি-র কোপ— সবই ঝোলার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে। তাই মেরুকরণকে কাজে লাগিয়ে শত ক্ষত ঢাকতে চায় বিজেপি। বিজেপির ভারত পাণ্ড্য যেমন কোনও রাখঢাক না করেই বলছেন, “যে দল ভগবান রামের অস্তিত্বকে স্বীকার করে না, মন্দির নির্মাণ নিয়ে ঝেড়ে কাশে না, তাদের মুখোশ খুলব না কেন? আর কপিল সিব্বলই তো এটা শুরু করেছেন। আমরা শুধু জবাব দিচ্ছি।”
মেরুকরণ বরাবরই বিজেপির পছন্দ। তবে মোদীর এ অস্ত্র ভোঁতা করতে রাহুলের দু’টি হাতিয়ার রয়েছে। এক, এই প্রথম গুজরাতে বিভিন্ন জাতিসত্তাকে সংগঠিত করা সম্ভব হয়েছে। দলিত, পাতিদার, অনগ্রসর শ্রেণী, সবাইকে নিজেদের বঞ্চনা নিয়ে রাস্তায় নামতে উৎসাহ দিচ্ছেন রাহুল। দ্বিতীয়ত, গত ভোটেও সোশ্যাল মিডিয়া এত সক্রিয় ছিল না। এই সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যেই বিজেপির ‘মুখোশ খুলছে’ কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy