নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
বাক্যে যেন বিষ! মোদী সরকরারের চার বছরে রাজনীতিকদের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রায় ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এনডিটিভি-র করা একটি সমীক্ষায় ধরা পড়ল চমকে ওঠার মতো এমনই তথ্য।
দেখা যাচ্ছে, উস্কানি, বিভেদমূলক বক্তব্যে আগেকার ইউপিএ জমানাকে টেক্কা দিয়ে গেয়েছে মোদীজমানা। প্রশ্ন উঠছে, এটাই কি ‘অচ্ছে দিন’? দেশের মানুষ যাঁদের কথায় বিশ্বাস করেন, প্রভাবিত হন, তাঁরাই যদি বিদ্বেষের বিষ ছড়ান, তবে তার চাইতে দুর্ভাগ্যের আর কী হতে পারে! ওই টেলিভিশন চ্যানেলের দাবি, তারা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রায় ১৩ হাজার প্রতিবেদন খতিয়ে দেখেছেন। দেখা হয়েছে, রাজনৈতিক নেতাদের হাজারেরও বেশি টুইট। তুলনা টানলে দেখা যাবে, ২০০৯-১৪ সালে দ্বিতীয় এউপিএ জমানায় বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের সংখ্যা ছিল ২১। গত চার বছরে তা এক লাফে ১২৪। অর্থাৎ বৃদ্ধিটা প্রায় ৪৯০ শতাংশ।
কুকথার ফুলঝুরিতে কোন দল এগিয়ে তা-ও স্পষ্ট। দেখা যাচ্ছে, গত চার বছরে বিদ্বেষ ছড়ানো বক্তব্যের মোট ৯০ শতাংশই এসেছে বিজেপি-র নেতা মন্ত্রীদের কাছ থেকে। যে ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে ৭৭ শতাংশ অর্থাৎ ৩৪ জন বিজেপি-র। বাকি ১০ জন কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি কিংবা আরজেডি-র সঙ্গে যুক্ত। অন্যদিকে, ২০০৯-১৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউিপিএ জমানায়, যে ২১টি ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। আর বিজেপি-র নাম জড়িয়েছে সাতটি ঘটনায়।
আরও পড়ুন: নোট নেই কেন, জবাব মেলে না
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রই কি বিপন্ন হতে পারে আধারে
বিদ্বেষমূলক বক্তব্য নিয়ে সমীক্ষায় উঠে এসেছে যোগী আদিত্যনাথের নাম! কখনও তিনি বলেছিলেন, ‘‘শাহরুখ খান ও হাফিজ সইদের মধ্যে কোনও তফাত্ নেই।’’ কখনও আবার বিভিন্ন হিংসার ঘটনায় সংখ্যালঘুদের নাম জুড়ে দিয়েছেন অবলীলায়। কিন্তু এর পরেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা। উল্টে তাঁকে বসানো হয়েছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে।
কিন্তু দেশে তো কড়া আইন রয়েছে, তবে কেন বিদ্বেষ ছড়ানোর পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তবে কি নেতা মন্ত্রী হলেই সাত খুন মাফ? অনেকেই বলছেন, তাঁদের অনেক কথাই কিন্তু অপরাধ বলে গণ্য হওয়ার যোগ্য। কিন্তু তথ্য বলছে, মোদী জমানায় যে ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে মাত্র ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু ওখানেই সব শেষ। তাঁর দোষ স্বীকার করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি দল। অভিযুক্তেরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন বহাল তবিয়তে। প্রভাবশালী বলেই কি? প্রশ্নটা উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy