প্রতিবাদ: রোহিত ভেমুলার ছবি হাতে পড়ুয়ারা। — ফাইল চিত্র।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে এ বার হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও ধাক্কা খেল এবিভিপি। বাম-দলিত-আদিবাসী ছাত্র সংগঠনগুলির জোটের সঙ্গে লড়াইয়ে বহু চেষ্টা করেও সঙ্ঘ-পরিবারের এবিভিপি বা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ ছাত্র সংসদের ভোটে একটি পদও জিততে পারেনি। এমনকী গত বছর জেতা একটি পদও ধরে রাখতে পারেনি তারা।
একের পর এক ছাত্র ভোটে এবিভিপি-র হারে প্রশ্ন উঠছে, তরুণ প্রজন্ম কি নরেন্দ্র মোদী সরকারের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে? হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বরাবরই দলিতদের অধিকার ও জাতপাত বিরোধী রাজনীতির আঁতুড়ঘর বলেও পরিচিত। সেখানে এবিভিপি-র হারের পরে বিরোধীরা বলছেন, ছাত্র-যুবরা বিজেপি-আরএসএসের দলিত বিরোধী, ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতিকেও প্রত্যাখ্যান করছে।
গত বছর জানুয়ারিতে এই হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে মোদী সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। অম্বেডকর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন-এর ছাত্রনেতা রোহিত ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তোলে এবিভিপি। সঙ্ঘের ছাত্রনেতাদের কথায় ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রোহিতদের সাসপেন্ড করেন। তারপরেই আত্মহত্যা করেন রোহিত।
আরও পড়ুন:পাকিস্তান শুধুই সন্ত্রাস ছড়ায়, রাষ্ট্রপুঞ্জে সুষমা
এ বারও ছাত্র সংসদের নির্বাচনে এবিভিপি-র বিরুদ্ধে রোহিতের মৃত্যুই ছিল প্রচারের প্রধান বিষয়। অম্বেডকর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল সিপিএমের এসএফআই। সঙ্গে যোগ দেয় ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ফোরাম, তেলঙ্গানা বিদ্যার্থী বেদিকা, মুসলিম স্টুডেন্টস ফেডারেশন, স্টুডেন্টস ইসলামিক অর্গানাইজেশন-এর মতো দলিত, আদিবাসী, মুসলিম ছাত্র সংগঠনগুলিও। জোটের নাম হয়েছিল ‘অ্যালায়েন্স ফর সোশ্যাল জাস্টিস’।
এই জোটই ছাত্র সংসদের সভাপতি, সহ-সভাপতি, সম্পাদক, যুগ্ম-সম্পাদক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পদ জিতে নিয়েছে। গত বছর ভোটে যৌন নির্যাতন বিরোধী কমিটির দু’টি পদের একটিতে জিতেছিল এবিভিপি। এবার সেটিও খুইয়েছে। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘দেশকে যে সব শক্তি পিছনে ঠেলতে চাইছে, আমাদের ছাত্র-যুবরা তাদেরই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।’’
এর আগে জেএনইউ-তেও বাম ছাত্র সংগঠনগুলি এবিভিপি-কে রুখতে জোট বেঁধেছিল। হায়দরাবাদের বাম-দলিত-আদিবাসীদের জোটের সঙ্গে অবশ্য অন্য তাৎপর্য রয়েছে বলেই যুক্তি দিচ্ছেন ছাত্র নেতারা। তাঁদের যুক্তি, জেএনইউ-তেও গত কয়েক বছরে দলিত ছাত্র সংগঠন বাপসা (বীরসা অম্বেডকর ফুলে স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন) শক্তি বৃদ্ধি করেছে। হায়দরাবাদের পর এ বার জেএনইউ-তেও দলিতদের সঙ্গে জোট চাইছেন বাম ছাত্র নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy