গো-রক্ষকদের তাণ্ডব কী করে বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে কেন্দ্র ও ছ’টি বিজেপি শাসিত রাজ্যের কাছে জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট। গত কাল সরকারি আশ্বাসের পর আজ আরএসএসও জানিয়েছে, সঙ্ঘকে বদনাম না করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। একজোট বিরোধীরা অবশ্য এ দিনও এই বিষয় নিয়ে সংসদে সরকারকে চেপে ধরেছিল।
গোরক্ষক বাহিনীর তাণ্ডব বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সমাজকর্মী তেহসিন পুনাওয়ালা। আদালত কেন্দ্র ও ছ’টি রাজ্যের কাছে লিখিত জবাব চায়। কিন্তু কেন্দ্র বা উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, রাজস্থান, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের মতো কোনও বিজেপি-শাসিত রাজ্যই লিখিত জবাব জমা দেয়নি। গুজরাতের আইনজীবী আদালতে জানান, রাজ্যে একটি মাত্র ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ডও সে রাজ্যে গোরক্ষার নামে হামলাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করেছে। কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল রঞ্জিত কুমার বলেন, সরকার বৃহস্পতিবারই সংসদে এই বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেছে। আইন অনুযায়ী কোনও গোরক্ষক বাহিনীরই দেশে জায়গা নেই। কী ভাবে গোরক্ষকদের তাণ্ডব বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে বিচারপতি দীপক মিশ্রর বেঞ্চ কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির কাছে ৪ সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়েছে। পরবর্তী শুনানি ৬ সেপ্টেম্বর।
আরও পড়ুন: দেদার বিক্রি ‘মা-মাটি-মানুষ খোঁপা’
নরেন্দ্র মোদী নিজেই গোরক্ষকদের তাণ্ডব বন্ধ করার দায় রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলে দিয়েছেন। এ বার তাঁর সরকার শীর্ষ আদালতেও একই যুক্তি দিল। আজ মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, গোরক্ষক বাহিনী বা এই ধরনের কোনও পাহারাদারি কেন্দ্র সমর্থন করে না। গোরক্ষক বাহিনীর এই সব তাণ্ডব বন্ধ করা রাজ্যের বিষয়। কেন্দ্রের এ ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা নেই। জম্মুতে তিন দিনের বৈঠক শেষে আরএসএসের নেতা মনমোহন বৈদ্যও বলেছেন, গোরক্ষার নামে হিংসা সমর্থন করে না সঙ্ঘ। যারা হিংসা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কিন্তু সঙ্ঘ ও বিজেপির এই দাবিকে আজ ফের বিরোধীরা খারিজ করে দেয় সংসদে।
রাম-নিয়ে মন্তব্য করায় একটি হিন্দু সংগঠন গত কালই সমাজবাদী পার্টি সাংসদ নরেশ অগ্রবালের বাড়িতে হামলা করেছিল। ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়। এ নিয়ে উত্তরপ্রদেশে মেরঠে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। আজ রাজ্যসভায় বিরোধীরা বলেন, গত কাল আসল প্রশ্ন এড়িয়ে অরুণ জেটলি শুধু আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও বিজেপি সেই হিংসারই আশ্রয় নিচ্ছে। এক সাংসদের কথায়, ঘটনা যে শুধুমাত্র বিজেপি-শাসিত রাজ্যে হচ্ছে, তা স্পষ্ট। আর সে কারণেই সুপ্রিম কোর্টও বেছে বেছে বিজেপি- শাসিত রাজ্যগুলির কাছেই জবাব চেয়েছে। সঙ্ঘ-বিজেপির মদতেই এ সব হচ্ছে। তাই এর দায় রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলে দিতে প্রধানমন্ত্রীর কৌশল ধোপে টিকছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy