Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভারতীয় সংবিধান মেনে কথা নয়, জানাল হুরিয়ত

উত্তাপ কমাতে কাশ্মীরে পৌঁছেই সব পক্ষকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন রাজনাথ সিংহ। কিন্তু ‘মানবিকতা, গণতন্ত্র ও কাশ্মীরিয়ত’-র উপর ভরসা রয়েছে এমন সব শিবিরকেই আলোচনায় ডাকলেও, দিনের শেষে ব্রাত্য থেকে গেলেন হরিয়তরা।

সংঘর্ষ চলছেই। শ্রীনগরে বুধবার। ছবি: পিটিআই।

সংঘর্ষ চলছেই। শ্রীনগরে বুধবার। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০৩
Share: Save:

উত্তাপ কমাতে কাশ্মীরে পৌঁছেই সব পক্ষকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন রাজনাথ সিংহ। কিন্তু ‘মানবিকতা, গণতন্ত্র ও কাশ্মীরিয়ত’-র উপর ভরসা রয়েছে এমন সব শিবিরকেই আলোচনায় ডাকলেও, দিনের শেষে ব্রাত্য থেকে গেলেন হরিয়তরা। উল্টে আজ হুরিয়তের পক্ষ থেকে কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে পাকিস্তানকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফলে জট খোলার এতটুকু ইঙ্গিত মেলেনি।

হিজবুল মুজাহিদিন কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে প্রায় ৪৭ দিন ধরে অশান্ত কাশ্মীর। পরিস্থিতির উন্নতিতে গত সপ্তাহে কাশ্মীরের বিরোধী দলগুলি দিল্লি এসে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন। সে সময়েই ঠিক হয়েছিল সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে কাশ্মীরে যাবেন রাজনাথ সিংহ। কিন্তু সেই আলোচনা সাংবিধানিক গণ্ডির মধ্যে রাখতে হবে বলে বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। তার ফলে হুরিয়তদের আলোচনায় টেবিলে বসাতে সরকারের তরফে যে বাড়তি পদক্ষেপ করার প্রয়োজন ছিল, তা অনুপস্থিত ছিল আজ। কংগ্রেসের মতে, মোদী সরকার মুখে বলছে আলোচনার কথা। অন্য দিকে হুরিয়ত নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখা হচ্ছে। আলোচনাটা হবে কী করে।

আজ ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা রাজনাথের সঙ্গে দেখা করে জানান, কাশ্মীরের পরিস্থিতির উন্নতি করতে হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কোনও রাস্তা খোলা নেই। কারণ বিক্ষোভকারী তরুণদের বড় অংশের পিছনে হুরিয়ত নেতাদের প্রভাব রয়েছে। প্রকাশ্যে না হলেও প্রয়োজনে পর্দার পিছনে হুরিয়তের সঙ্গে বৈঠক করার পক্ষে সওয়াল করেন ওমর। একই সুরে অন্য বিরোধী দলগুলিও দাবি করেছে, হুরিয়তের সঙ্গে আলোচনায় না বসলে সমাধান সূত্র পাওয়া সম্ভব নয়।

এরই মধ্যে জটিলতা বাড়াতে আলোচনার টেবিলে পাকিস্তানের থাকা উচিত বলে আজ নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুক। আজ তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘ভূস্বর্গের সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। আর এতে পাকিস্তানের ভূমিকা থাকা উচিত।’’ হুরিয়ত নেতার মধ্যে তথাকথিত নরমপন্থী বলে পরিচিত মিরওয়াইজের দাবি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্র। তবে যে ভাবে মিরওয়াইজ পাকিস্তানকে আলোচনায় অন্তর্ভুক্তির দাবি তুলেছেন তাতে অস্বস্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এরই মধ্যে হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি মোদীর প্রস্তাব সরাসরি খারিজ করে দিয়ে জানিয়েছেন, ভারতীয় সংবিধানের গণ্ডির মধ্যে আলোচনা করতে রাজি নন তাঁরা। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভারতীয় সংবিধানে আমরা বিশ্বাস করি না। ফলে সেই গণ্ডির মধ্যে আলোচনার প্রশ্নই নেই।’’

এ দিকে, রাজনাথের উপস্থিতির মধ্যেই অশান্ত হয়ে উঠেছিল কাশ্মীর। সকালেই বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলা। সংঘর্ষে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পুলওয়ামার পোহু গ্রামে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হলে ছররা গুলিতে মারা যান আমির বশির নামে এক গ্রামবাসী। আহত হন বহু মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hurriyat India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE