Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

রাস্তা থেকে প্রাসাদে কী ভাবে পৌঁছলেন এই নির্দল প্রার্থী

তিন ছেলেমেয়েকে বড় করে তোলার জন্য মা বাড়িতে বাড়িতে কাজ করতেন, বাসন মাজতেন। আর তিনি নিজে চা বেচতেন। রাতে ঘুমোতেন বন্ধ দোকানের সামনে, ফুটপাথে।

নির্দল প্রার্থী পি অনিল কুমার।- ফাইল চিত্র।

নির্দল প্রার্থী পি অনিল কুমার।- ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:০০
Share: Save:

‘নাথিং থেকে এভরিথিং’ হয়ে ওঠার আরও একটি গল্পের ‘নায়ক’ তিনি।

তিন ছেলেমেয়েকে বড় করে তোলার জন্য মা বাড়িতে বাড়িতে কাজ করতেন, বাসন মাজতেন। আর তিনি নিজে চা বেচতেন। রাতে ঘুমোতেন বন্ধ দোকানের সামনে, ফুটপাথে।

এক দিন যাঁর মাথার উপর ছাদ ছিল না, কানাকড়ি জোটাতে যাঁকে দিন-রাত ঘাম ঝরাতে হত, ৪৩ বছর বয়সে পৌঁছে সেই পি অনিল কুমার কর্নাটকে আসন্ন বিধানসভা ভোটে এ বার নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন বেঙ্গালুরুর বোম্মানাহাল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে। ওই কেন্দ্রে বিজেপি-র গত বারের জয়ী প্রার্থী সতীশ রেড্ডির বিরুদ্ধে লড়ছেন তিনি। মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে তাঁর যে সম্পত্তির কথা তিনি ঘোষণা করেছেন, তার পরিমাণ ৩৩৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিনিই এ বারের ভোটে দাঁড়ানো নির্দল প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী। যাঁর গাড়ির সংখ্যা ১৬। যাদের মধ্যে রয়েছে বিদেশি গাড়িও।

পুরনো বাড়ি কেরলে। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই অর্থকষ্টে ভুগতে থাকে অনিল কুমারের পরিবার। অনিল বললেন, ‘‘তিন ছেলেমেয়ের পেটে ভাত জোটাতে মা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কাজ করতেন। ঘর মুছতেন, বাসন মাজতেন। ওঁকে চারটে করে ইডলি দেওয়া হত। আগে আমাদের খাইয়ে কিছু বাঁচলে, তবেই খেতেন মা।’’ বলতে বলতে চোখের কোণটা চিকচিক করে ওঠে অনিলের।

আরও পড়ুন- কেন্দ্র বদল করা হল কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর​

আরও পড়ুন- নোটসঙ্কট মিটতে আরও দু’সপ্তাহ! আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলে​

টাকাপয়সার অভাবে ক্লাস থ্রি’র বেশি পড়াশোনাও করতে পারেননি তিনি। তার পর ’৮৫ সালে ১১ বছর বয়সে কেরল ছেড়ে রোজগারের আশায় অনিল কুমার চলে এসেছিলেন বেঙ্গালুরুতে। মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না বলে গোড়ার দিকে বেঙ্গালুরুতে বন্ধ দোকানের সামনে ফুটপাথে শুয়ে রাত কাটাতেন অনিল। এক দিন এক জন ভদ্রলোক তাঁর এই অবস্থা দেখে সামান্য টাকাপয়সা দেন অনিলকে। পরে একটি দোকানে কাজও জুটিয়ে দেন তিনি। সেই কাজটা ছিল এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আম নিয়ে যাওয়া। তার পর চা বেচা শুরু করেন অনিল।

ভাগ্যের চাকা তাঁর একটু একটু করে ঘুরতে শুরু করে বিয়ের পর। বাড়ি বানাতে এক টুকরো জমি কেনেন বেঙ্গালুরুতে। কিন্তু এক ভদ্রলোক দ্বিগুণ দামে সেই জমি কিনতে চাইলে, তা বেচেও দেন অনিল। এই ভাবেই এসে পড়েন রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায়। সেটা নয়ের দশক। অনিলের দাবি, ‘‘বছর ছয়েকের মধ্যেই কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি করে ফেলি।’’

বছর আটেক আগে বেঙ্গালুরুর বোম্মানাহাল্লিতে নিজের সংস্থা খোলেন অনিল। যার নাম দেন- ‘এম জে ইনফ্রাস্ট্রাকচার’। অনিলের দাবি, বহুতল বাড়ির পাশাপাশি অনেক মন্দির-গির্জাও বানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE