Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পারিবারিক বিপর্যয়ে জেরবার

‘ছট’ মাইয়াই ভরসা রাবড়ীর

আসলে লালু-রাবড়ীর ‘ছট’ পারিবারিক ঘেরাটোপকে ছাপিয়ে কবেই যেন বিহার রাজনীতিরই অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে আরজেডি রাজনীতিতে রাবড়ী দেবীর ‘ছট’ রীতিমতো রাজনৈতিক কর্মসূচি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটনা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১১
Share: Save:

ঠিক করেছিলেন, ছেলের বৌরা এলে তবেই ফের ছটের ব্রত রাখবেন। কিন্তু বছর ঘুরতেই ফের পরিবারের ‘কল্যাণে’ ছট পালনের সিদ্ধান্ত নিলেন লালু-ঘরণী রাবড়ী দেবী। গত কয়েক মাসে আয়কর, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, সিবিআইয়ের ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে নাজেহাল যাদব পরিবার। সে কারণেই রাবড়ীর এই সিদ্ধান্ত বদল বলে মনে করছেন রাজ্য-রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।

আসলে লালু-রাবড়ীর ‘ছট’ পারিবারিক ঘেরাটোপকে ছাপিয়ে কবেই যেন বিহার রাজনীতিরই অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে আরজেডি রাজনীতিতে রাবড়ী দেবীর ‘ছট’ রীতিমতো রাজনৈতিক কর্মসূচি। দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা ছট উপলক্ষ্যে ভিড় করেন রাবড়ী-নিবাসে। সেদিন সেখানে অবারিত দ্বার। অতিথিরা সকলেই প্রসাদ পান। দল বেঁধে রাত জেগে চলে ছটের প্রস্তুতি। লালুপ্রসাদ-রাবড়ীদেবীর সঙ্গেই ছটে মেতে ওঠে গোটা আরজেডি দল। ভিন্ন দলের ভিন্ন মতের নেতারাও আসতেন লালু-রাবড়ীর বাড়িতে। ছটের পাশাপাশি জমে উঠত রাজনীতি। লালুপ্রসাদের সঙ্গে চলত রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা। ২০১৫ সালে ১০ নম্বর সার্কুলার রোডে লালু-রাবড়ীর ছটের বিশেষ অতিথি ছিলেন নীতীশ কুমারও। সে সময়ে তাঁদের দুই ছেলে নীতীশ মন্ত্রিসভার সদস্য।

আরও পড়ুন: ভোট কবে বলবেন মোদীই, কটাক্ষ চিদম্বরমের

রাজনৈতিক মহলের মতে, গত বছর আসলে পারিবারিক টানাপড়েনের জেরে, বড় মেয়ে মিসা ভারতীকে ঠেকাতেই ছট বন্ধ করেছিলেন রাবড়ী। মিসাকে বাপের বাড়িতে নয়, নিজের শ্বশুরবাড়ির ছটেই আটকে রাখতে চেয়েছিলেন লালু-রাবড়ী। সাংবাদিকদের রাবড়ী নিজেই জানিয়েছিলেন, বেতো শরীর নিয়ে আর এই খাটনি খাটতে পারছেন না। ছেলের বউরা এলে তখন আবার ছটের ব্রত উদযাপন করবেন যাদব পরিবার।

কিন্তু গত এক বছরে বিহারের এই যাদব পরিবারের উপর একটার পর একটা আঘাত নেমে এসেছে। এক দিকে, পর পর আর্থিক কেলেঙ্কারির আঘাত। অন্য দিকে, লালুপ্রসাদের স্বপ্নের ‘মহাজোট’-এর উপর চরম আঘাত হেনেছেন নীতীশ। দীর্ঘ দিন পর বিহারে ক্ষমতার অলিন্দে ফিরেছিলেন যাদব পরিবার। সেই জায়গা থেকে নীতীশ তাঁদের ছুড়ে ফেলে দিয়ে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়েছেন। বিধানসভায় একক বৃহত্তম দল হয়েও বিরোধী আসনে বসতে হয়েছে লালু-রাবড়ীর দুই পুত্র, তেজস্বী-তেজপ্রতাপকে।

সে কারণেই এ বার ফের ছট ব্রত রেখেছেন লালু-জায়া। লক্ষ্য পরিবারের কল্যাণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘ছট মাইয়ার আর্শীবাদ নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক যুদ্ধে নামতে চাইছেন বিহারের যাদব নেতা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE