Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National

অরুণাচলে বিপুল সংখ্যায় ব্রহ্মস, তিব্বত-ইউনান নিয়ে ঘোর উদ্বেগে চিন

বেজিং-এর হুঁশিয়ারিকে পাত্তাই দিল না নয়াদিল্লি। অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে কতগুলি ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হবে, তা ভারতই স্থির করবে, অন্য কোনও দেশ নয়। জানাল ভারতীয় সেনা।

আত্মরক্ষার জন্য যতটা প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেক বেশি ব্রহ্মস মোতায়েন করছে ভারত— বলছে চিনের সেনা।

আত্মরক্ষার জন্য যতটা প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেক বেশি ব্রহ্মস মোতায়েন করছে ভারত— বলছে চিনের সেনা।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ২০:০২
Share: Save:

বেজিং-এর হুঁশিয়ারিকে পাত্তাই দিল না নয়াদিল্লি। অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে কতগুলি ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হবে, তা ভারতই স্থির করবে, অন্য কোনও দেশ নয়। জানাল ভারতীয় সেনা। চিনের সরকারি সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, অরুণাচলের সীমান্তে ভারত যে ভাবে বিপুল সংখ্যক সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ভারত মোতায়েন করছে, তা চিনের দু’টি প্রদেশের জন্য বিপজ্জনক। সীমান্তে রণসজ্জা বাড়ানোর ফল ভাল হবে না, ভারতের প্রতি চিনের হুঁশিয়ারি এমনই। কিন্তু ভারতীয় সেনার তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, নিজেদের এলাকায় সামরিক পরিকাঠামো কতটা বাড়ানো হবে, সে বিষয়ে সিন্ধান্ত ভারতই নেবে।

ভারত সম্পর্কে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন মূলত প্রকাশিত হয় চিনের সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে। কিন্তু অরুণাচল প্রদেশে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা নিয়ে বেজিং-এর যে উদ্বেগ, তা কিন্তু গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত হয়নি। চিনের সশস্ত্র বাহিনী পিপল’স লিবারেশন আর্মির নিজস্ব মুখপত্রে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘সীমান্তে ভারত যে পরিমাণে সুপারসনিক মিসাইল মোতায়েন করছে, তা ভারতের আত্মরক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে। সীমান্তে ভারতের মোতায়েন করা এই বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র চিনের তিব্বত এবং ইউনান প্রদেশের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।’’

ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে চিনা সেনার মুখপত্রে এই উদ্বেগ কিন্তু অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা তেমনই মনে করছেন। চিন কখনোই প্রতিপক্ষের সক্ষমতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার নীতিতে বিশ্বাসী নয়। সামরিক সঙ্ঘাতের প্রশ্ন যখনই ওঠে, তখনই চিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দেয়। চিনা সেনার মুখপত্রও ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কিন্তু তার চেয়েও বেশি পরিমাণে ধরা পড়েছে উদ্বেগ। ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র চিনের দু’টি প্রদেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, এমন মন্তব্য চিনের তরফে বেশ বেনজির।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতিতে ফারাক গড়ে দিয়েছে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রই। ভারত-রুশ যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বর্তমানে পৃথিবীর সেরা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। ভূমি থেকে তো বটেই, যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিন থেকেও এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা যায়। সুখোই-৩০এমকেআই যুদ্ধবিমান থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। ব্রহ্মস নিয়ে ইতিমধ্যেই সফল ভাবে আকাশে ওড়ার পরীক্ষাতেও উতরে গিয়েছে ভারত। শব্দের বেগের চেয়ে প্রায় তিন গুণ গতি ব্রহ্মসের। এই ক্ষেপণাস্ত্রের আধুনিকতম রূপটিকে এখন দ্রুত তুলে দেওয়া হচ্ছে সেনাবাহিনীর হাতে। হিমালয় বরাবর বিভিন্ন সীমান্তে তা মোতায়েন করা হচ্ছে। ব্রহ্মসের এই আধুনিকতম রূপটি অ্যাডভান্সড গাইডেন্স সিস্টেমে সমৃদ্ধ। ফলে পর্বতের আড়ালে লুকিয়ে থাকা লক্ষ্যবস্তুতেও চূড়ান্ত নির্ভুল আঘাত হানতে পারে ব্রহ্মস। দুর্গম হিমালয়ে যেখানে যেখানে চিন-ভারত সীমান্ত নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, সেই সব এলাকাতেই ব্রহ্মস মোতায়েন করছে সেনা। এর জন্য ৪৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অরুণাচল নিয়েই চিনের সঙ্গে ভারতের বিরোধ সবচেয়ে বেশি। তাই অরুণাচলেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় মোতায়েন করা হচ্ছে এই ক্ষেপণাস্ত্র।

আরও পড়ুন: জঙ্গি দমনে পাশেই আছি, বার্তা সু চি-র

চিন ব্রহ্মস মোতায়েন নিয়ে ভারতকে হুঁশিয়ারি দিলেও, ভারতীয় সেনা তাকে গুরুত্বই দিচ্ছে না। সেনার তরফে এ দিন একটি সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেলকে বলা হয়, ‘‘কোথায় আমাদের কতটা বিপদ রয়েছে এবং আত্মরক্ষার জন্য আমরা কী করব, তা আমরাই ঠিক করব। নিজেদের এলাকায় আমরা সামরিক পরিকাঠামো কী ভাবে গড়ে তুলব, সে বিষয়ে অন্য কারও কথা আমরা শুনব না।’’ ভারত এখন সম্পূর্ণ একটি নতুন রেজিমেন্ট তৈরি করছে, যা ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রে সমৃদ্ধ। ওই রেজিমেন্টে অন্তত ১০০টি ব্রহ্মস থাকছে বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE