চিন ভাবে বার বার সীমান্ত লঙ্ঘন করছে, তা যে ভারত ভাল চোখে দেখছে না, চিনের নাম না করেও তা বেশ স্পষ্ট করেই বুঝিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
অন্য দেশের ভূখণ্ডে দখলদারি কায়েম করার চেষ্টা ভারত করে না। মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। মঙ্গলবার বিভিন্ন দেশের আইনসভার ভারতীয় বংশোদ্ভুত সদস্যদের সম্মেলনে এই মন্তব্য করেছেন মোদী। যে সব দেশের উন্নয়নে ভারত সহায়তা করে, তাদের কাছ থেকে বিনিময়ে কিছু পাওয়ার কথা ভারত ভাবে না— প্রধানমন্ত্রী এ দিন এমনও বললেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মহাত্মা গাঁধীর প্রত্যাবর্তনের ১০২তম বার্ষিকী উপলক্ষে দিল্লিতে আয়োজিত হয়েছে ‘পার্সনস অব ইন্ডিয়ান অরিজিন পার্লামেন্টেরিয়ানস’ (পিআইওপি) সম্মেলন। ফ্রান্স, সুইৎজারল্যান্ড, ফিজি, মরিশাস-সহ ২৪টি দেশ থেকে মোট ১৩৪ জন যোগ দিয়েছেন এই সম্মেলনে। তাঁরা প্রত্যেকেই সংশ্লিষ্ট দেশগুলির আইনসভার নির্বাচিত সদস্য।
এই প্রথম বার এমন সম্মেলনের আয়োজন করল ভারত। সেই সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বললেন, ভারত চিরকালই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করে এসেছে এবং আজকের পৃথিবীতে কট্টরবাদ ও জঙ্গিপনার যে বাড়বাড়ন্ত, মহাত্মা গাঁধীর দর্শন অহিংসাই তার মোকাবিলা করতে পারে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কা নৌসেনার হামলা, আক্রান্ত সাড়ে তিন হাজার ভারতীয় মৎস্যজীবী
আরও পড়ুন: জিওয়ানিতে সামরিক ঘাঁটি তৈরির জল্পনা নস্যাৎ করল চিন
‘‘কোনও দেশের প্রতি ভারতের নীতি কী হবে, লাভ-লোকসানের হিসেবের উপরে দাঁড়িয়ে আমরা তা নির্ধারণ করি না। আমরা মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে সেই নীতি নির্ধারণ করি।’’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, কোনও দেশের উন্নয়নে সহায়তা করার আগে ভারত এ কথা ভাবে না যে সেই দেশের কাছ থেকে ভারত কী পাবে। সংশ্লিষ্ট দেশটির প্রয়োজনীয়তা এবং অগ্রাধিকার বিচার করেই ভারত সেই দেশের প্রতি নিজের নীতি নির্দিষ্ট করে। তিনি আরও বলেন, ‘‘অন্য কারও সম্পদ শোষণ করার ইচ্ছা আমাদের নেই, অন্য দেশের ভূখণ্ডের দিকেও আমরা নজর দিই না।’’
বিভিন্ন দেশের আইনসভার ভারতীয় বংশোদ্ভুত সদস্যদের সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
নাম না করলেও, নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্যের লক্ষ্য যে চিনই, সে কথা কূটনৈতিক মহলের কাছে বেশ স্পষ্ট। ২০১৭-র মাঝামাঝি সময়ে ভারত-ভুটান-চিন সীমান্তের ডোকলামে চিন আগ্রাসন দেখানোর চেষ্টা করেছিল। বছরের শেষ দিকে অরুণাচলের ভিতরে ঢুকে তারা রাস্তা তৈরি শুরু করেছিল। এ ছাড়াও লাদাখে এবং উত্তরাখণ্ডেও সীমান্ত লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়েছে চিনা বাহিনী। সে কথা মাথায় রেখেই যে অন্যের ভূখণ্ডে নজর দেওয়া সংক্রান্ত মন্তব্য করেছেন মোদী, সে বিষয়ে কূটনীতিকদের সিংহভাগই একমত।
বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপ-সহ যে সব দক্ষিণ এশীয় দেশকে ভারত দীর্ঘ দিন ধরে আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে, চিনও সম্প্রতি সেই সব দেশের উপরে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছে। মোটা অঙ্কের আর্থিক অনুদানকে হাতিয়ার করেছে চিন। বেজিঙের এই ‘বদান্যতা’র নেপথ্যে যে আসলে অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে, সে দিকেই মোদী এ দিন ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy