Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চিনকে সামলাতে দ্বিমুখী নীতি দিল্লির

শান্তিবার্তা দেওয়ার পাশাপাশি ড্রাগনের সঙ্গে আঞ্চলিক রাজনীতিতে লড়াই করতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক দৃঢ় করতে চাইছে সাউথ ব্লক।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০৮
Share: Save:

ডোকলাম-পরবর্তী সময়ে চিনকে সামলাতে দ্বিমুখী কৌশল নিয়ে এগোতে চাইছে ভারত। এক দিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আজ শান্তির পায়রা ওড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ভারত এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী তাঁদের সাম্প্রতিক বৈঠকে একমত হয়েছেন যে ডোকলাম সমস্যা সমাধানে দু’দেশই ‘রাজনৈতিক ভাবে পরিণত’ হওয়ার লক্ষণ দেখিয়েছে। শান্তিপূর্ণ সীমান্তই যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্বশর্ত এ কথা আজ রীতিমতো ঘোষণা করে জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

শান্তিবার্তা দেওয়ার পাশাপাশি ড্রাগনের সঙ্গে আঞ্চলিক রাজনীতিতে লড়াই করতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক দৃঢ় করতে চাইছে সাউথ ব্লক। কূটনীতিকদের মতে, হালফিলের বেহাল বিদেশনীতির মোড় ফেরাতে খড়কুটোর মতন পূর্ব এশিয়াকে আঁকড়ে ধরার এটা একটা রাজনৈতিক প্রয়াসও বটে।

প্রয়াস এতটাই যে আসিয়ান-ভুক্ত দেশগুলির (মায়ানমার, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইল্যান্ড-সহ মোট ১০টি রাষ্ট্র) সঙ্গে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে (আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি) শুরু হচ্ছে বহুস্তরীয় সম্মেলন। যাকে রীতিমতো উৎসব বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিবির! সমস্ত রীতি ভেঙে আগামী প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে এ বার প্রধান অতিথি করা হচ্ছে এই ১০টি রাষ্ট্রের নেতাকেই! শুধু রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ না রেখে ভারত-আসিয়ান আদানপ্রদানকে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে গোটা দেশে।

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের’ (ইন্দো প্যাসিফিক) নিরাপত্তাকে জোরদার করার জন্য এই গাঁটছড়া অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি সমুদ্রপথে শান্তি বজায় রাখতেও ভারতের ভূমিকাকে সর্বদাই স্বাগত জানিয়েছে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলি। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, ‘‘বড় শক্তিগুলির মধ্যে আঞ্চলিক ভারসাম্য বজায় রাখতে ভারত আসিয়ানকে সাহায্য করতে চায়।’’

আসিয়ান গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর সময়ে চিনের বিরুদ্ধে কোনও শব্দ উচ্চারণ করা হচ্ছে না। কিন্তু এটা ঘটনা যে দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত আধিপত্যকে খর্ব করার জন্য ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্সের মতো দেশগুলিকে ইতিমধ্যেই পাশে পেয়েছে ভারত। শুধু ভারতই নয়, গত দু’বছর ধরে এই প্রশ্নে আমেরিকাও পাশে রয়েছে আসিয়ানের। ভারতের মতো আমেরিকাও আলাদা করে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে সখ্য তৈরি করছে চিনকে চাপে রাখার জন্য। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে ঘুম ছুটেছে দিল্লির। অন্য দিকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মায়ানমারের পাশে দাঁড়িয়ে বেজিং সে দেশে প্রভাব বাড়িয়েছে। তাই আসিয়ানকে আরও বেশি করে পাশে পেতে সক্রিয় থাকবে ভারতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

China India Doklam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE