দু’দেশেই সাধারণ নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, উত্তেজনা তত বাড়ছে ভারত-পাকিস্তানের। এই পরিস্থিতিতে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করলেন এ দেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টার। বৈঠকে ছিলেন গোয়েন্দাপ্রধান রাজীব জৈনও। কেন্দ্র একে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎকার’ বললেও সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত-উত্তেজনার প্রসঙ্গ এসেছে। পাশাপাশি লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সইদ যে ভাবে পাকিস্তানের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, তা নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
দু’দেশের দূতাবাস কর্মীদের হেনস্থার অভিযোগের আবহে গত কালই ভারত ছেড়েছেন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাক হাইকমিশনার সোহেল মামুদ। আজ তাই রাজনাথের সঙ্গে জাস্টারের বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করেন জাস্টার। সন্ত্রাস প্রশ্নে মার্কিন প্রশাসন ইসলামাবাদের উপরে চাপ বাড়াবে বলে আশ্বাসও দেওয়া হয়। কথা হয় ভারতীয় গোয়েন্দাদের সঙ্গে এফবিআইয়ের সহযোগিতা নিয়েও।
জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে বিভিন্ন ‘লঞ্চ প্যাড’ থেকে কী ভাবে পাক সেনার মদতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটছে, বৈঠকে তা বিশদে তুলে ধরে দিল্লি। হাফিজ ভোটে দাঁড়াতে পারবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে নামার ঘোষণা আগেই করেছে সে। নিজের দলের নাম দিয়েছে মিল্লি মুসলিম লিগ (এমএমএল)। আমেরিকা ও রাষ্ট্রপুঞ্জের চাপে হাফিজকে ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ তকমা দেওয়ার পরে অবশ্য তার দলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ইসলামাবাদ। দলের রেজিস্ট্রেশন আটকে দেয় পাক নির্বাচন কমিশন। এমনকী সন্ত্রাস-দমন অধ্যাদেশে (২০১৮) গত ১০ ফেব্রুয়ারি হাফিজের সংস্থার সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তি ফ্রিজ করার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। আদালতে যায় হাফিজ। আজ লাহৌর আদালতে তার শুনানিতে হাফিজের আইনজীবী এ কে ডাগর বলেন, ‘‘স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের নিজস্ব আইন-কানুন রয়েছে। কিন্তু আমেরিকা-ভারতের চাপে পড়ে হাফিজের উপরে বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে।’’ পরে হাফিজের প্রতিষ্ঠিত দুই সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া এবং ফলাহ-ই-ইনসানিয়ত ফাউন্ডেশনকে কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, পাক সরকারের কাছে ১৫ দিনের মধ্যে তার ব্যাখ্যা চায় আদালত।
নয়াদিল্লির দাবি, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও হাফিজ আগামী ২৩ মার্চ দলের ইস্তাহার প্রকাশ করতে চলেছে। তার দল ভোটে জিতে সরকারে যোগ দিলে, শুধু ভারতেই নয়, গোটা উপমহাদেশে জঙ্গি কার্যকলাপ কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। প্রশ্নের মুখে পড়বে মার্কিন প্রশাসনের আফ-পাক নীতিও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের দাবি, হাফিজের তৎপরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ট্রাম্প প্রশাসনও। বিষয়টির উপর তারাও নজর রাখছে বলে নয়াদিল্লিকে আজ আশ্বস্ত করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy