Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

জেলের মধ্যে নিগ্রহ কি ইন্দ্রাণীকেও

শুধু ওই বন্দি নয়, তাঁকেও জেল কর্তৃপক্ষের হাতে নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইন্দ্রাণী। নিজের মেয়ে শিনা বরাকে খুনের অভিযোগে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে এখন বাইকুল্লা জেলেই রয়েছেন তিনি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০৪:৩৯
Share: Save:

গত সপ্তাহে বাইকুল্লা জেলে সাজাপ্রাপ্ত মহিলা-বন্দির মৃত্যুর ঘটনার পিছনে যৌন নিগ্রহও একটি বড় কারণ হতে পারে বলে আজ দাবি করলেন প্রাক্তন মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী ইন্দ্রাণী। শুধু ওই বন্দি নয়, তাঁকেও জেল কর্তৃপক্ষের হাতে নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইন্দ্রাণী। নিজের মেয়ে শিনা বরাকে খুনের অভিযোগে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে এখন বাইকুল্লা জেলেই রয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে বন্দি-মৃত্যুর ঘটনায় সাক্ষ্য দিতেও তাঁর আপত্তি নেই বলে মুম্বইয়ের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে জানিয়েছেন ইন্দ্রাণী।

বাইকুল্লা জেলে গত শুক্রবার মঞ্জু গোবিন্দ শেট্টে নামে এক বন্দিকে হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মঞ্জুকে মারধরের অভিযোগ ওঠে জেলেরই এক মহিলা আধিকারিকের বিরুদ্ধে। শনিবার থেকে মঞ্জুর মৃত্যু নিয়ে জেলে বিক্ষোভ চরম ওঠে। তাতে ইন্দ্রাণী নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ জেল কর্তৃপক্ষের। আজ পুলিশ জানিয়েছে, মনীষা পোখারকার নামে এক মহিলা জেল আধিকারিক যৌন নিগ্রহ করেছিলেন মঞ্জুকে। মহিলা বন্দিদের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন মনীষা।

ইন্দ্রাণীর দাবি, মঞ্জুর গোপনাঙ্গে লাঠি ঢুকিয়ে নিগ্রহ করা হয়েছে। মঞ্জুর বন্দি-বন্ধুদের দায়ের করা এফআইআরেও যৌন নিগ্রহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে মেডিক্যাল রিপোর্ট এখনও আসেনি। দু’শো বন্দির সঙ্গে জেলের মধ্যে হাঙ্গামা চালানোর অভিযোগে আর একটি এফআইআরে নাম উঠেছে ইন্দ্রাণীরও। মনীষার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। বন্দি মঞ্জুর মৃত্যুর পরে ছ’জন জেল আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন মনীষাও।

আজ ইন্দ্রাণীর আইনজীবী আবার মুম্বইয়ের আদালতে জানান, বিক্ষোভ চলাকালীন শনিবার তাঁর মক্কেলকেও জেল আধিকারিকরা মারধর করেছেন। এই অভিযোগ জানতে পেরে সিবিআই আদালত (যেখানে শিনা বরা খুনের মামলার শুনানি চলছে) আগামিকাল ইন্দ্রাণীকে কোর্টে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষকে। ইন্দ্রাণীর সঙ্গে দেখা করে এসে তাঁর আইনজীবী গুঞ্জন মঙ্গলার দাবি, ‘‘উনি আমাকে হাতে পায়ে মাথায় আঘাতের চিহ্নও দেখিয়েছেন।’’ তা ছাড়া জেল সুপার এবং অন্য আধিকারিকরা তাঁর মক্কেলকে গালিগালাজও করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন গুঞ্জন। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইন্দ্রাণীর আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘হঠাৎ করে এক বন্দির মৃত্যুর ঘটনায় বাকিরা কিছুটা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন। আমার মক্কেল ওই ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে তদন্তে প্রমাণ মিললে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’ জেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ‘‘গন্ডগোল শুরু হওয়ার পরে মহিলা বন্দিদের নিজেদের শিশুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছিলেন ইন্দ্রাণী।’’ বাইকুল্লা জেলের ছাদে জমায়েতের মধ্যে যে ইন্দ্রাণী ছিলেন, সিসিটিভি ফুটেজে সে ছবি তাদের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন জেল কর্তৃপক্ষ।

বাইকুল্লায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মঞ্জুর মৃত্যু নিয়েও বেশ কিছু কারণ প্রকাশ্যে এসেছে। বন্দিদের অভিযোগ, খাবার বিতরণের সময় কয়েকটা ডিম চুরি করেছিল মঞ্জু। তার জন্য জেল আধিকারিকরা তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ বন্দিদের। ওই সময়েই গোপনাঙ্গে লাঠি ঢোকানো হয় বলে অভিযোগ জানিয়েছেন এক বন্দি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE